অনেকে ঘুম থেকে উঠে অনুভব করেন পেটফাঁপা বা গ্যাস আটকে আছে কিংবা পেটে চাপ চাপ অনুভূতি তৈরি হয়েছে। দিন শুরুর আগেই এই অস্বস্তি শুধু বিরক্তিকরই নয়, কাজে মনোযোগও কমিয়ে দেয়। চিকিৎসকদের মতে, এই ‘মর্নিং ব্লটিং’ আসলে ডিনার, রাতের হজমপ্রক্রিয়া এবং অন্ত্রের গতির ওপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে কয়েকটি সঠিক নিয়ম মানলে সহজেই মিলতে পারে আরাম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমের সময় আমাদের পাচনতন্ত্র থেমে থাকে না। রাতের খাবার যদি ভারী বা দেরিতে খাওয়া হয়, তবে তা ঠিকমতো হজম হয় না। ফলে খাবার পাকস্থলীতে জমে ফারমেন্টেশন শুরু হয় এবং সকালে গ্যাস বা ফোলাভাব বৃদ্ধি পায়। এছাড়া জলের ঘাটতি, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবারে অসহিষ্ণুতা—এসবও সকালে পেট ফোলার অন্যতম কারণ। এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে কয়েকটি সহজ অভ্যাস খুব কার্যকর। যেমন-
১. ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস জলঃ রাতভর শরীর কিছুটা ডিহাইড্রেটেড থাকে। সকালে খালি পেটে জল পান করলে শুধু হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় হয় না, অন্ত্রে জমে থাকা গ্যাসও কমতে শুরু করে। এতে পেটের ফোলাভাব দ্রুত কমে।
২. হালকা স্ট্রেচিং বা হাঁটাঃ সকালে ৫–১০ মিনিটের হালকা স্ট্রেচিং, যোগব্যায়াম বা একটু হাঁটা-এগুলো অন্ত্রের মাংসপেশি সচল করে। ফলে আটকে থাকা গ্যাস বের হতে সুবিধা হয়। যারা নিয়মিত সকালবেলায় হাঁটেন, তাদের ব্লটিং বা গ্যাসের সমস্যা তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়।
৩. প্রোবায়োটিক খাবারের অভ্যাসঃ দই কিংবা ঘরে বানানো প্রোবায়োটিক পানীয় অন্ত্রে ভাল ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়। এগুলো হজম উন্নত করে এবং গ্যাস উৎপাদনকারী জীবাণু নিয়ন্ত্রণে রাখে। নিয়মিত প্রোবায়োটিক খেলে পেট ফোলাভাব অনেকটাই কমে।
৪. মৌরি চিবিয়ে খানঃ মৌরি প্রাকৃতিক কারমিনেটিভ অর্থাৎ এটি হজমে সাহায্য করে এবং গ্যাসের সমস্যা কমায়। রাতে খাওয়ার পর বা সকালে সামান্য মৌরি চিবিয়ে নিলে দ্রুত আরাম মেলে। গরম জলে মৌরি ভিজিয়ে সেই জল পান করলে উপকার পাবেন।
৫. রাতের খাবারে সচেতনতাঃ ঘুমানোর ঠিক আগে ভারী বা তেল-মশলাযুক্ত খাবার খেলে হজম হতে সময় লাগে। তাই রাতে খুব দেরিতে না খাওয়াই ভাল। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘুমানোর ২–৩ ঘণ্টা আগে হালকা, সহজ হজমযোগ্য খাবার খেলে পরদিন সকালে পেট ফোলা অনেকটাই কমে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন? যদি প্রতিদিনই অত্যধিক পেট ফোলা থাকে, সঙ্গে পেট ব্যথা, গ্যাস বের না হওয়া বা হজমে গণ্ডগোল দেখা যায় তবে তা হতে পারে আইবিএস, খাবারে অসহিষ্ণুতা বা অন্ত্রের অন্য সমস্যা। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
