হজমশক্তি ও শরীরের সার্বিক সুস্থতায় মৌরির ভূমিকা বহু পুরনো। রান্নাঘরে থাকা এই সাধারণ মশলাটি শুধু মুখশুদ্ধি নয়, আয়ুর্বেদে একে প্রাকৃতিক হজমবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেকেই সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে মৌরি ভেজানো জল খান। কিন্তু জানেন কি টানা এক মাস মৌরির জল খেলে শরীরে নানা উপকারী পরিবর্তন দেখা দিতে পারে? আসুন জেনে নেওয়া যাক- 

বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌরিতে থাকা ফাইবার, ভিটামিন সি,ক্যালশিয়াম,ম্যাগনেশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যৌগ শরীরকে ভেতর থেকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল ‘অ্যানেথল’ যা হজমশক্তি বাড়ায় ও গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমায়। গবেষণা বলছে, মৌরি জল নিয়মিত পান করলে পেটের জ্বালা, অম্বল, অ্যাসিডিটি, হজমের গণ্ডগোল অনেকটাই কমে যায়। সেক্ষেত্রে এই পানীয় এক মাস পান করলে যেসব পরিবর্তন খেয়াল করবেন, তা হল- 

১. গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিডিটি কমে যায়ঃ মৌরির অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান পাকস্থলীর আস্তরণকে শান্ত করে। যার ফলে অ্যাসিডিটি, বুকে জ্বালা কিংবা পেট ফাঁপার মতো সমস্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. ঘুমের মান ভাল হয়ঃ মৌরির জল শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে রিল্যাক্স করে এবং মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। রাতে এটি পান করলে অনিদ্রা বা অস্থিরতা কমে গিয়ে গভীর ঘুমের সম্ভাবনা বাড়ে।

৩. পেট পরিষ্কার থাকেঃ ফাইবার সমৃদ্ধ মৌরি জলের কারণে মলত্যাগ সহজ হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমে। ফলে সকালে পেট পরিষ্কার থাকে এবং সারাদিন হালকা অনুভব হয়।

৪. পেট ফোলা ও গ্যাস কমেঃ যারা নিয়মিত গ্যাস বা পেট ফাঁপার সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য মৌরি জল বিশেষভাবে উপকারী। এটি গ্যাস বের হতে সাহায্য করে এবং পেটের অস্বস্তি কমায়।

৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ মৌরির জল খিদে নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিপাকক্রিয়া উন্নত করে। এতে অপ্রয়োজনীয় খাওয়ার প্রবণতা কমে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য হতে পারে।

৬. শরীর ডিটক্স হয়ঃ মৌরির অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীরের টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। নিয়মিত পান করলে ত্বকেও উজ্জ্বলতা আসতে পারে।

কীভাবে তৈরি করবেন মৌরি জল

এক চা চামচ মৌরি এক গ্লাস গরম জলে ফেলে ৮–১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। ছেঁকে নিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে পান করুন। তবে গর্ভবতী নারী, শিশু বা যাদের কোনও দীর্ঘস্থায়ী রোগ রয়েছে, তারা নিয়মিত পান করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।