কম্পিউটার সারাদিন চললে যেমন রিস্টার্ট করতে হয়, তেমনই আমাদের শরীরকেও রিস্টার্ট করতে হয় প্রতিদিন, ঘুমের মধ্যে দিয়ে। দিনের শেষে ঘুম যেন প্রশান্তির, বিশ্রামের হয়। কিন্তু স্ট্রেস, উদ্বেগ, আর কর্মব্যস্ত জীবনের চাপে অনেকেই আজ নিদ্রাহীন রাত্রির শিকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর অন্যতম প্রধান কারণ ‘কর্টিসল’। এই ‘স্ট্রেস হরমোন’টি আমাদের শরীরে অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে পড়লেই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। কিন্তু খাদ্যতালিকায় কিছু জরুরি পরিবর্তন করলেই কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
2
6
১) ওটস: এখন বহু স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ সকালের জলখাবার হিসাবে ওটস খান। কিন্তু ওটস শুধু সকালের ব্রেকফাস্টের জন্যই নয়, রাতেও এটি একটি আদর্শ খাবার। ওটসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা সেরোটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে। সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়লে কর্টিসলের প্রভাব কমে, এবং শরীর ধীরে ধীরে বিশ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়। এক বাটি ঈষদুষ্ণ ওটসে বাদাম, মৌরি গুঁড়ো বা সামান্য দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে ঘুমের আগে মন ও শরীর দুই-ই শান্ত হয়।
3
6
২) টক দই: টক দই বা গ্রিক ইয়োগার্টের মধ্যে প্রচুর প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অন্ত্রের স্বাস্থ্য ও মানসিক চাপের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। প্রোবায়োটিক উপাদান কর্টিসল হ্রাসে সাহায্য করে, ফলে ঘুম শান্তির হয়। রাতের খাবার খাওয়ার পর একটি বাটি টক দই খেতে পারেন। চাইলে তার সঙ্গে সামান্য মধু বা চিয়া সিডসও মেশানো যায়।
4
6
৩) বাদাম ও বীজ: আমন্ড, আখরোট, সূর্যমুখী বীজ বা ফ্ল্যাক্স সিডের মতো বাদাম ও বীজে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এই মৌলটি কর্টিসলের মাত্রা কমাতে কার্যকর। ম্যাগনেশিয়াম স্নায়ুর উত্তেজনা কমিয়ে দেয়, এবং স্নায়ুকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
5
6
৪) কলাইয়ের ডাল বা মুগ ডাল: কলাইয়ের ডাল বা মুগ ডালের মধ্যে ট্রিপ্টোফ্যান নামক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। এটি ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন তৈরি করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ডাল প্রোটিনে ভরপুর হওয়ায় রাত্রিকালীন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ইনসুলিন ব্যালান্স হয়, ফলে কর্টিসলের মাত্রাও স্বাভাবিক থাকে। রাতে খাবার খাওয়ার সময় এক বাটি হালকা ঘন ডাল খাওয়া কর্টিসল নিয়ন্ত্রণের একটি সহজ উপায়।
6
6
৫) ক্যামোমাইল চা: কী ভাবছেন? চা খেলে উল্টে ঘুম চলে যাবে? ডিনারের পরে এই বিশেষ ক্যামোমাইল চা শরীরকে হালকা করে দেয়। এই চায়ে থাকে অ্যাপিজেনিন নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা কর্টিসলের উৎপাদন কমায় ও স্নায়ুকে শিথিল করে। ডিনারের আধ ঘণ্টা পর এক কাপ গরম ক্যামোমাইল চা পান করতে পারেন। বিশেষ করে যাঁরা চায়ে দুধ বা চিনি খান না, তাঁদের জন্য এটি আদর্শ রিল্যাক্সেশন ড্রিঙ্ক।