ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর সিমি গ্রেওয়ালের জনপ্রিয় টক শো ‘রঁদেভু উইথ সিমি’র একটি পুরনো ক্লিপ ফের ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিও ঘিরেই ফের নতুন করে আলোচনায় বলিউডের অন্যতম চর্চিত প্রেমের কাহিনি—ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর সম্পর্ক। সেখানে নিজের বিয়ে এবং জীবনের সিদ্ধান্ত নিয়ে অকপট স্বীকারোক্তি করতে দেখা যায় অভিনেত্রীকে।

শনিবার সিমির শেয়ার করা ভিডিওয় ফের হেমা-ধর্মেন্দ্রর ভালবাসার আখ্যান শোনা যায়। সেখানে হেমা বলেছিলেন, একটি ফিল্ম প্রিমিয়ারে প্রথমবার ধর্মেন্দ্রকে দেখেন তিনি। হেমার কথায়, “ওই রকম সুদর্শন মানুষ আমি আগে কোনওদিন দেখিনি।” পরে শোনেন, তিনিও নাকি হেমাকে প্রথম দেখাতেই মুগ্ধ হয়েছিলেন।

ধর্মেন্দ্র তখন বিবাহিত ছিলেন—এই সত্যি কি তাঁকে দ্বিধায় ফেলেছিল? জবাবে হেমার স্বীকারোক্তি, সেই সময় বিষয়টি খুব গভীর ভাবে ভাবেননি তিনি। “মনে হত, যদি কখনও বিয়ে করি, ওর মতো কাউকে করব। ওকে নয়, কিন্তু ওর মতো কাউকে,” মন্তব্য অভিনেত্রীর। ধর্মেন্দ্র বারবার প্রেমের কথা জানাতেন, আর হেমা নিজেকে শান্ত রাখতেন, বুঝতেন সম্পর্কটা জটিল পথে যেতে পারে।

তবে সময়ের সঙ্গে বদলায় পরিস্থিতি। হেমার কথায়, “সবটাই ভাগ্য। এতদিন ধরে একসঙ্গে ছিলাম… একদিন ওকে ফোন করে বললাম, এখন তোমাকে আমায় বিয়ে করতেই হবে। ও-ও বলল, হ্যাঁ, করব। আর সেভাবেই সবটা হয়ে গেল।”

হেমা মালিনী তাঁর বইতে জানিয়েছেন, একবার নিতান্ত বিরক্ত হয়ে ডিম্পল কাপাডিয়া হেমাকে বলেছিলেন যে ধর্মেন্দ্র নাকি তাঁকে কখনই বিয়ে করবেন না। ডিম্পল কাপাডিয়া যখন রাজেশ খান্নার সঙ্গে প্রেম করছেন, সেই সময় প্রয়াত অভিনেতা শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকতেন সারাদিন। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে বসে আড্ডা দিতেন, মদ খেতেন। কোনও সঙ্গী ছিল না তাঁর। ফলে চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন সেই সময় ডিম্পল কাপাডিয়া। অন্য দিকে, হেমা মালিনী নিজেও একটা টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। ধর্মেন্দ্র ততদিনে বিবাহিত। যদিও হেমা এবং ধর্মেন্দ্রর সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ভবিষ্যৎ কী হবে সেটা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ছিল। এমন সময়ই হতাশা, বিরক্তি থেকেই ডিম্পল হেমাকে বলেছিলেন, 'দেখো এই লোকটা তোমায় কখনও, কোনওদিন বিয়ে করবে না। তুমি বরং বসে ঠান্ডা মাথায় ভাব যে এটা নিয়ে কী করবে।' কিন্তু অবশেষে হেমার ভালবাসাকে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁকে বিয়ে করেন ধর্মেন্দ্র।

ছবির মতোই ধর্মেন্দ্র ব্যক্তিগত জীবনেও ছিল ঘটনার ঘনঘটা। ১৯৫৪ সালে স্ত্রী প্রকাশ কউরের সঙ্গে প্রথমে সংসার সাজিয়েছিলেন নায়ক। তাঁদের দুই পুত্র— সানি দেওল এবং ববি দেওল, বাবার মতোই বলিউডে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন। কিন্তু সেই সংসারেও চিড় ধরে এক সময়। পরবর্তীতে বলিউডের ‘ড্রিম গার্ল’, বয়সে ১২ বছরের হেমা মালিনীর প্রেমে পড়েন নায়ক। ধর্ম পরিবর্তন করে ১৯৮০ সালে তাঁর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের দুই কন্যা— এষা দেওল এবং অহানা দেওল। হাজারও বিতর্ক পেরিয়ে দুই স্ত্রীর প্রতি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন অভিনেতা। সমালোচনা-কটাক্ষকে তুড়িতে উড়িয়েছেন।