নিজস্ব সংবাদদাতা: টেলিভশন, ওটিটি এমনকী বড়পর্দায় পরিচিত মুখ অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। এই মুহূর্তে জি বাংলার 'নিম ফুলের মধু' ও 'পরিণীতা'য় দেখা যাচ্ছে তাঁকে। দর্শকের থেকেও পেয়েছেন দারুণ ভালবাসা। কিন্তু একটা সময় এই অভিনেতাই মাদকাসক্তির শিকার ছিলেন। একাধিকবার অকপটে জানিয়েছেন সেই কথা। তবে এদিন তাঁর নেশামুক্তির ১৭ বছর পূর্ণ হতে সমাজমাধ্যমে কলম ধরলেন অভিনেতা।
তিনি লেখেন, '২৩শে জানুয়ারি আমার জন্মদিন। এই জন্মদিনটাই আমার সবচেয়ে কাছের। কেন? কারণ এদিন আমার নেশামুক্তির ১৭ বছর। ২৯শে ডিসেম্বর তো বায়োলজিক্যাল বার্থডে। কিন্ত কালকের দিনটা আমার কাছে অনেক অনেক বেশি স্পেশাল। আমার কাছে এখনও জলের মতো স্পষ্ট ২০০৮ সালে আজকের এই দিনটা। আর দেখতে পাই বলেই হয়তো আজকে এটা লিখতে পারছি। ব্যাঙ্কসাল কোর্টে হাজিরা দিয়ে আমাকে রিহ্যাবে ফিরতেই হতো, ৯টার বনগাঁ লোকাল আর আমাকে যেতে হত হাবড়া। হাবড়া স্টেশনে নেমে একটু এগোলেই সেই রিহ্যাব যেখান থেকে আমার ভাল থাকার লড়াই শুরু হয়েছিল।'
অনিন্দ্য আরও লেখেন, 'একটা সময় বুঝতে পারছিলাম এভাবে যদি চলতে থাকে আমি ২৮ বছর অবধিও টানতে পারব না আর চোখের সামনে চারটে ইউজিং পার্টনারকে পরপর মরতে দেখে একটু ভয়ও পেয়েছিলাম। এতটাই বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিলাম যে আমার সেই রিহ্যাবে যাওয়া আর সেখানে আবার কয়েকমাস চার দেওয়ালের মধ্যে থাকা ছাড়া আমার আর কোনও উপায় ছিল না। এই উপলব্ধিটাই আমাকে একটু হলেও সাহস জুগিয়ে ছিল। এভাবেই আমার ভাল থাকার শুরু । শুরুটা সত্যি কঠিন ছিল। না কেউ বিশ্বাস করতো, না নিজে বিশ্বাস করতাম যে নেশা করা ছেড়ে দেব। আজকে যখন রাস্তায় লোকে সেলফি তুলতে চায়, অটোগ্রাফ চায়, ভালবাসা দেয় তখন আমি নিজেকে দেখি আর পুরোটাই কেমন স্বপ্নের মতো লাগে। এটা সত্যি হচ্ছে তো? কোথায় সেই ছেলেটা আর কোথায় আজকের আমি!'
ভাল থাকার সাহস কে জুগিয়েছিল অভিনেতাকে? আজকাল ডট ইন-কে অনিন্দ্য বলেন, "আমি আর পারছিলাম না নেশা করতে। খুব বিধ্বস্ত লাগত। সেই সময় মনের জোর তো অবশ্যই অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিল ভাল থাকার পথে। তবে যারা নেশা ছেড়ে ভাল থাকার রসদ খুঁজে পেয়েছেন তাঁরাই আমায় মনোবল জুগিয়েছেন।"
