অভিনেত্রী ও পরিচালক তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়ের জীবন যেন হঠাৎ ঝড়ে ভেসে যায়। তবু তিনি ভেঙে পড়েননি—মনের জোরে চালিয়ে যাচ্ছেন লড়াই। গত বছর বাবাকে ক্যানসারের হারানোর দুঃখ সামলে ওঠার আগেই নিজের শরীরে ধরা পড়ে চতুর্থ স্তরের স্তন ক্যানসার। এত বড় ধাক্কার মাঝেও তিনি হার মানেননি।
তাঁর কথায়, “সব কিছু ভেঙে পড়লেও আমি ভেঙে যাইনি। আমার সবচেয়ে বড় শিক্ষা হল—মানুষ এখনও যত্নশীল, শুধু তাদের কাছে হাত বাড়াতে হয়।”
তন্নিষ্ঠার জীবনে সংগ্রাম যেন ধ্রুবক। রোগের কারণে বিসর্জন দিতে হয়েছে মাথার চুলটুকুও। তবু ব্যথা নয়, তাঁর চোখ জুড়ে থাকে আশার আলো। শরীরে মারণরোগের বাসা নিয়েও তিনি হাসেন। সেই হাসিমুখের ছবি পোস্ট করে নিজের কথা লিখলেন অভিনেত্রী।
এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তন্নিষ্ঠা লেখেন, ‘গত আট মাস ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়—এটি বলতে হলে সত্যিই কম বলা হবে। যেন বাবা ক্যানসারে হারানো যথেষ্ট ছিল না। আট মাস আগে আমাকে ধরা পড়ল চতুর্থ পর্যায়ের ওলিগো মেটাস্ট্যাটিক ক্যানসার। কিন্তু এই পোস্টটি কষ্টের জন্য নয়, বরং ভালবাসা ও শক্তি নিয়ে। ভাবছিলাম এমন অবস্থায় পরিস্থিতি এর থেকেও খারাপ হতে পারে না—৭০ বছরের মা এবং ৯ বছরের একমাত্র কন্যা, দু’জনেই পুরোপুরি আমার উপর নির্ভরশীল। তবুও এই অন্ধকার মুহূর্তগুলিতে আমি এমন এক অসাধারণ ভালোবসার সন্ধান পেলাম, যা পাশে থাকে এবং কখনও একা অনুভব করতে দেয় না।’
?utm_source=ig_embed&utm_campaign=loading" data-instgrm-version="14">
?utm_source=ig_embed&utm_campaign=loading" target="_blank" rel="noopener">
View this post on Instagram
?utm_source=ig_embed&utm_campaign=loading" target="_blank" rel="noopener">A post shared by Tannishtha Chatterjee (@tannishtha_c)
দুঃসময় যখন তাঁকে সংগ্রামে পরাজিত করে দিতে চাইছে, তখনই তন্নিষ্ঠার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন তাঁর বন্ধুরা। তিনি লেখেন, ‘আমি এই শক্তি ও ভালবাসা পেয়েছি আমার বন্ধু ও পরিবারের কাছ থেকে, যারা আমার সবচেয়ে কঠিন সময়েও পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সত্যিকারের হাসি ফিরিয়ে এনেছে। আজকের এই প্রযুক্তিপ্রধান দুনিয়ায়, মানুষই সেই অসাধারণ শক্তি, যার সহমর্মিতা, উপস্থিতি এবং ভালোবাসা আমাকে বাঁচিয়ে রাখছে।’ পোস্টের শেষে অভিনেত্রী বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁর মহিলা বন্ধুদের।
ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে তন্নিষ্ঠা বলেছিলেন, "আমি সব সময় গর্বিত ছিলাম যে আমার আগে কোনও স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি। এমনকি আমি নিজের সুস্থতা নিয়ে একটু অহংকারও মনে। বিশ্বাস করতাম, আমার কিছুই হবে না। বাবা ছিলেন সুপার ফিট এবং লিউকেমিয়ার আগে কখনও চিকিৎসকের কাছেও যাননি। আমার মূল কথা হল—আপনার ফিটনেস যতই ভাল হোক না কেন, কখনওই স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা করা উচিত নয়। আমি ৪০ বছরের বেশি বয়সি নারীদের পরামর্শ দেব, যেন তাঁরা ম্যামোগ্রাফি করান, কারণ আগেভাগে শনাক্ত করা অনেক উপকারি হতে পারে। আমি ভুল করেছি। ভেবেছিলাম আমি ব্যতিক্রম, কিন্তু এটা যে কারও হতে পারে, তা আমি শিখেছি।"