বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খানকে আজ আমরা চিনি বিশ্বখ্যাত এক তারকা হিসেবে। কিন্তু তাঁর যাত্রাপথে এমন এক অন্ধকার অধ্যায় লুকিয়ে আছে, যা তিনি নিজেই প্রকাশ করেছিলেন এক অনুষ্ঠানে। সেটা ১৯৯৩ সাল। মাত্র দু’বছর হল গৌরীকে বিয়ে করেছেন তিনি। সেই সময় ‘কভি হা কভি না’র শুটিং চলছিল। হঠাৎ এক সাংবাদিকের লেখা প্রকাশিত হয়— এক বলি-নায়িকার সঙ্গে শাহরুখের পরকীয়ার গুঞ্জন। এরপরেই গৌরীর মনে তখন দ্বিধা শুরু হয় , "ভুল করলাম না তো একজন বলি-তারকাকে বিয়ে করে?"

বলাই বাহুল্য, তাঁকে ঘিরে এই গুজব শাহরুখকে ক্ষেপিয়ে তোলে। দিল্লির ছেলে, রাগ উঠলে মুখ থেকে গালাগাল ঝরে। কিন্তু সে দিন তিনি সীমা ছাড়িয়ে যান। ফোনে সাংবাদিককে একচোট শুনিয়েই শান্ত হননি, বরং একটি ধারালো ছুরি হাতে নিয়ে পৌঁছে যান ওই সাংবাদিকের বাড়িতে। জানিয়ে রাখা ভাল, সেই কুকরি (গুর্খা সেনাদের ধারালো ছুরি) নিজের বিয়েতে শ্বশুরের তরফে পাওয়া উপহার ছিল শাহরুখের।  

শাহরুখ বলেন, “আমার শ্বশুর সেনা অফিসার ছিলেন। বিয়ের সময় তিনি বলেছিলেন—আমার মেয়েকে রক্ষা করবে। আমি ভেবেছিলাম এটাই সবচেয়ে ভাল অস্ত্র। ওটাই নিয়ে গিয়েছিলাম সাংবাদিকের বাড়িতে। সেখানে এক যুবককে পায়ে কুপিয়েছিলাম সেই কুকরি দিয়ে।” ঘটনার পর আবার সেটে ফিরে যান তিনি। কিন্তু পরের দিন এসে হাজির হয় পুলিশ।

থানায় নিয়ে যাওয়ার পরও শাহরুখ তারকা-ঠাট বজায় রাখতে গিয়েছিলেন। বসতে চাইতেই পুলিশ অফিসারের ধমক—“বসো না! দাঁড়িয়ে থাক।” সন্ধ্যার পর গ্রেপ্তার হওয়ায় জামিনও পাননি। জেলে রাত কাটাতে হয় ‘বাদশা’কে। একমাত্র ফোন কলের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে খবর না দিয়ে আবার ফোন করেন সেই যুবককে— “শোন এখন তো জেলেও ঘুরে এলাম। এবার এখন থেকে বেরিয়ে তোকে কেটে ফেলব।”

ঘটনাটা আরও বড় রূপ নিত যদি না অভিনেতা নানা পাটেকর এগিয়ে আসতেন। নানা রাজু বান গয়া জেন্টলম্যান ছবিতে শাহরুখের সহ-অভিনেতা ছিলেন । শেষমেশ নানার হস্তক্ষেপেই পরদিন জেল থেকে ছাড়া পান শাহরুখ।

শেষমেশ শাহরুখ প্রতিশোধের ইচ্ছা ত্যাগ করেন। কারণ গৌরী তখন খুব বিচলিত। শাহরুখের কথায়, “স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়ার মতো কিছুই করতে চাইনি। তাই সব পিছনে ফেলে দিয়েছিলাম।”

আজকের দিনে শাহরুখ বিশ্বের অন্যতম বড় তারকা, অথচ তার অতীতের এই অগ্নিগর্ভ কাহিনি মনে করিয়ে দেয়—তিনি একসময় ছিলেন দিল্লির রাস্তাঘাটের একদম খাঁটি লড়াকু যুবক।