সলমন খানের কেরিয়ারের মোড় ঘোরানো ছবিগুলোর তালিকা করলে ‘ওয়ান্টেড’-এর নাম আসবেই সেখানে। তেলুগু সুপারহিট ‘পোকিরি’-র এই হিন্দি রিমেকটি পরিচালনা করেছিলেন প্রভুদেবা। ছবিতে সলমন ছিলেন ‘রাধে’-র চরিত্রে। বাইরে থেকে রাফ-টাফ গ্যাংস্টার ছিল ‘রাধে’ কিন্তু আসলে ছিল আন্ডারকভার কপ। স্টাইল, সংলাপ আর ধামাকা অ্যাকশনের মিশেলে তৈরি এই চরিত্র এবং ছবির স্বাদ ২০০৯ সালে মুক্তির পরই সরাসরি মন জিতে নেয় দর্শকের। বিশেষ করে সিঙ্গল স্ক্রিন প্রেক্ষাগুলিতে রীতিমতো সাড়া পড়ে যায়। মূল গল্পের মজ্জা না বদলিয়েই হিন্দিতে সলমনকে যেন আরও বড়সড়, ' মাস-হিরো'র তকমা দেওয়া হয়েছিল আর সেটাই হাততালির ঝড় তুলেছিল প্রেক্ষাগৃহে।

 

সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রযোজক বনি কাপুর জানালেন, কীভাবে সলমনকে এই ছবিতে আনতে পেরেছিলেন তিনি। বনির কথায়, “আমি ২০০৬ সালে পুরি জগন্নাথের তেলুগু ব্লকবাস্টার ‘পোকিরি’ দেখি। তখনই মনে হয়েছিল রাধে ওরফে রাজবীর শেখাওতের চরিত্রে সলমনকে দারুণ মানাবে। ওকে ছবিটা দেখাতে চেয়েছিলাম, দু’দু’বার বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও করি। কিন্তু চরম ব্যস্ততার কারণে সলমন যেতে পারেনি তখন।” তিনি জানান, বারবার অনুরোধ করছিলেন সলমনকে, কারণ তাঁর ভয় ছিল, যদি এর মধ্যেই তামিল রিমেক হিট হয়ে যায়, তাহলে অন্য কোনও বলিউড তারকা বা প্রযোজক হিন্দি রিমেকের অধিকার কিনে নিতে পারে, যেমনটা ‘গজিনি’র ক্ষেত্রে হয়েছিল।

 

 

 

 

অবশেষে একদিন রাতের দিকে সলমন ছবিটি দেখতে এলেন। কিন্তু ওখানেও নতুন সমস্যা। বনি বলেন, “ডলবি ডিজিটালের বদলে ভুল করে ডিটিএস প্রিন্ট চলে এল। আমি খুব নার্ভাস ছিলাম ও কী বলবে সেসব নিয়ে। ছবি দেখা শেষ করে সলমন একটাও কথা না বলে আমার সামনে দিয়ে হেঁটে চলে গেল। আমি চিন্তায় পড়ে পিছন পিছন গেলাম। গাড়িতে ওঠার আগে শুধু থাম্বস আপ দেখাল, ব্যস, তখনই বুঝে গেলাম সব ঠিক আছে। ছবি ওর পছন্দ হয়েছে।”

 

‘ওয়ান্টেড’ ছবিতে নায়িকার কাস্টিং নিয়েও একটি মজার তথ্য দিলেন বনি কাপুর। তাঁর কথায়, “সলমন চেয়েছিল ‘ওয়ান্টেড’-এ ওর বিপরীতে যেন কাটরিনা কইফ থাকে। কিন্তু ছবিতে ওই চরিত্রের দাবি ছিল, শুরুতে নায়িকার আবেগ যেন ধোঁয়াশা থাকে। তাই মনে হয়েছিল, আগে কখনও সলমনের সঙ্গে জুটি বাঁধেননি, এমন কাউকেই নেওয়া ভাল। নানা নাম ভাবার পর শেষ পর্যন্ত আয়েশা টাকিয়ার নামেই সিলমোহর পড়ে।”

 

জানিয়ে রাখা ভাল, ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ওয়ান্টেড’ পরবর্তীতে বিশাল হিট হয় এবং সেই সাফল্যই সলমন খানের কেরিয়ারকে নতুন গতি  এনে দিয়েছিল।