সংবাদসংস্থা মুম্বই: ১৫ জানুয়ারির মধ্যরাতে বাড়িতে দুষ্কৃতীর ছুরিতে গুরুতর জখম হন সইফ আলি খান। সেই রাতেই মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি হন অভিনেতা। দিন পাঁচেক পর ২১ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন সইফ আলি খান। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, বিরাট বিপদ থেকে কয়েক চুলের জন্য বেঁচে গিয়েছেন সইফ। হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পর নিজের আবাসনের নীচে দেহরক্ষীদের ঘেরাটোপে বীরদর্পে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল সইফকে। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী করিনাও। সেই দেখে নেটপাড়ার একটি বড় অংশ প্রশ্ন তোলেন, আদৌ কি আহত হয়েছিলেন সইফ না কি গোটাটাই প্রচারে থাকার জন্য ছিল কোনও সস্তা ‘স্টান্ট’? এসব ব্যঙ্গ, কটাক্ষ মিম নিয়ে  এই প্রথম মুখ খুললেন স্বয়ং সইফ! এবং যা বললেন সেই জবাব যে গভীরভাবে ভাববে ট্রোলারদের, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। 

 

ওই দুর্ঘটনার পর এই প্রথম সাক্ষাৎকার দিলেন সইফ। অতিপরিচিত ছন্দে, ঠান্ডা গলায় বললেন, “বিশ্বাস করুন, ওঁদের উপর আমার কোনও রাগ নেই, ঘৃণা নেই। জানতাম, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানান প্রতিক্রিয়া ধেয়ে আসবে। আর যখন ভেবেই নিয়েছিলাম এরকম কথাবার্তা হবে, তাই মাথাগরম হয়নি একটুও। ধরেই রেখেছিলাম, কিছু মানুষ একে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেবে, কেউ পরিহাস করবে কেউ বা স্রেফ রসিকতায় মাতবে। আর এসব হয় বলেই তো দুনিয়াটা রঙিন। সবাই যদি একে অপরের প্রতি দয়ালু হতেন, সহানুভূতিশীল হতেন, তাহলে পৃথিবীটা বড্ড একঘেঁয়ে হয়ে যেত।” সামান্য থেমে সইফ ফের বলে ওঠেন, “তবে এই সময়ে যা ভীষণভাবে টের পেয়েছে, তা হল ভালবাসা। এত মানুষের ভালবাসা। এত রকম মানুষের খোঁজ পেয়েছি জানার আমার দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, আমার মন ভাল রাখতে সাহায্য করেছে। ভরসা জুগিয়েছে। সেই অটো চালক যিনি আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন, চিকিৎসকের দল থেকে হাসপালাতের ওয়ার্ড বয়-এরা সবাই আমার জীবনে দেবদূত। মনে হয়েছিল এঁরা ঈশ্বর প্রেরিত। আসলে, আমি বিশ্বাস করি এই দুনিয়া যতটা ভালবাসা, দয়ায় ভরা ঠিক ততটাই ভরে রয়েছে নির্বুদ্ধিতায়। আর সব মিলিয়েই তো দুনিয়া সুন্দর।” 

 

সইফ-মর্জিতে ফের ভেসে আসে আরও কথা - “সাড়ে ৬ ঘন্টা ধরে চলেছিল সেই অস্ত্রোপচার! আমার ঘাড়ে ৩০টা সেলাই পড়েছে, পিঠে ২৫টা। আমি বিষয়টা এভাবে দেখছি, মরে যেতে পারতাম, কিন্তু যাইনি। পঙ্গু হয়ে যেতে পারতাম কিন্তু হইনি। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাব। আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। দোষ আমার নিজের। আরও একটু নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হতে পারতাম। এই শহরে থাকতে আজও নিরাপদ বোধ করি। মুম্বই পুলিশ অত্যন্ত কর্তব্যপরায়ণ। আর এই ঘটনা আমার জীবন বদলে দেবে না!”

 

আর শরিফুল? তাঁর বিষয়ে কী ভাবছেন সইফ? ‘রেস’-এর নায়কের জবাব, “তৈমুরের মতে, ওকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত কারণ ওর বিশ্বাস লোকটা নাকি ক্ষুধার্ত ছিল তাই ঢুকে পড়েছিল। আমিও ক্ষমা করে দিতাম। যদি না ও আমাকে এভাবে ছুরি মারতো!" মুচকি হেসে, হালকা চালে সইফ আরও বললেন, “আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা না করলে ওকে ক্ষমা করে দিলাম। ও কেন ঢুকে পড়েছিল আমার বাড়িতে, তা বুঝেছি। কিন্তু তারপর যা করেছে তা সীমাহীন বাড়াবাড়ি!”