মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে ঝড় তুলছে আদিত্য ধরের পরিচালনায় তৈরি ‘ধুরন্ধর’। ছবিটি যখন সাফল্যের শিখরে পৌঁছচ্ছে, তখনই পরিচালককে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন রাম গোপাল বর্মা। পরে আদিত্য প্রকাশ্যে স্বীকারও করেন, তাঁর বড় অনুপ্রেরণা আসলে এই বর্ষীয়ান ছবি নির্মাতাই। আর পরিচালক ধরের এমন মন্তব্যে অভিভূত হয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন খোদ ‘রামু’। আর সেখানেই ধন্যবাদ ফিরিয়ে দিতে ভুল করলেন না ‘ধুরন্ধর’-এর পরিচালকও।
রাম গোপাল বর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, “সবাই বলে আমি নাকি অনেক মহান পরিচালকদের অনুপ্রেরণা দিয়েছি। কিন্তু বলো তো, আমি-ই যে স্বয়ং অনুপ্রেরণা, সেই আমি নিজে কবে মহান হব?” এই পোস্টের জবাবে আদিত্য ধর লেখেন, “রামু স্যার, যখন ঝুঁকি নেওয়া সবচেয়ে কঠিন ছিল, তখন আপনি সেই ঝুঁকি নিয়েছেন!” এরপর তিনি আরও যোগ করেন, “যে সময়ে কোনও টেমপ্লেট ছিল না, সেফটি নেট ছিল না, সফলতার নিশ্চয়তা ছিল না, সেই সময় আপনি পথ দেখিয়েছিলেন। ‘ধুরন্ধর’ আজ দৌড়তে পারছে, কারণ তার আগে আপনি হাঁটতে শিখিয়েছিলেন। কিছু পথ শুধুই হাততালিতে শেষ হয় না, উত্তরাধিকার তৈরি করেই শেষ হয়।”
উল্লেখ্য, এক্স-এ একটি পোস্ট রামু শেয়ার করেন। সেই পোস্টে লেখা ছিল -
“যিনি ‘বাহুবলী’ বানিয়েছেন, তিনি রাম গোপাল বর্মার ভক্ত।
যিনি ‘পোকিরি’ বানিয়েছেন, তিনিও রাম গোপাল বর্মার ভক্ত।
যিনি ‘অ্যানিমাল’ তৈরি করেছেন, তাঁরও অনুপ্রেরণা আরজিভি।
আর যিনি ‘ধুরন্ধর’ বানিয়েছেন, সেও রাম গোপাল বর্মার ভক্ত।”
এই পোস্টের সঙ্গে খানিক মজা করে একাধিক ইমোজি দিয়ে ‘রামু’ ফের লেখেন, “একজন মহিলা মডেলের কথা মনে পড়ছে, যিনি একসময় একটি সাবানের বিজ্ঞাপনে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। তখন ব্র্যান্ডের মালিক পরিচালকদের জিজ্ঞেস করেছিলেন ‘ঠিক আছে, আমরা মডেলকে জনপ্রিয় বানালাম, কিন্তু সাবানের কী হল?’ ঠিক সেরকমই এখন ব্যাপারটা শোনাচ্ছে। আমি যে এত মহান পরিচালকদের অনুপ্রেরণা দিয়েছি, সেটা অবশ্যই ভাল লাগার মতো কথা। কিন্তু বলুন তো, আমি যে অনুপ্রেরণাদাতা, সেই আমি নিজে কবে মহান হব?”

প্রসঙ্গত, এর আগেও রাম গোপাল বর্মা সম্পর্কে বলতে গিয়ে ধুরন্ধর পরিচালক স্বীকার করেছিলেন, মুম্বইয়ে তিনি এক স্যুটকেস আর এক স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন, শুধু এই আশায় যে একদিন রাম গোপাল বর্মার সঙ্গে কাজ করবেন। তিনি বলেন, “ওটা কখনও সম্ভব হয়নি। কিন্তু অজান্তেই আমি তাঁর সিনেমার ভেতরেই কাজ করেছি। তাঁর ছবি আমাকে শুধু সিনেমা বানাতে শেখায়নি, শিখিয়েছে বিপজ্জনকভাবে চিন্তা করতে।” আদিত্য আরও বলেন, “তিনি ছিলেন সেই পরিচালক, যিনি ভারতীয় সিনেমাকে নির্ভীক, ভিন্নমাত্রিক ও জীবন্ত করে তুলেছিলেন। ‘ধুরন্ধর’-এ যদি সেই ভাবনার সামান্য অংশও থেকে থাকে, তবে সেটার কৃতিত্ব তাঁর সিনেমাকেই।”
বাস্তব ঘটনার অনুপ্রেরণায় তৈরি ‘ধুরন্ধর’-এর গল্প গড়ে উঠেছে ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং–এর গোপন অপারেশনের প্রেক্ষাপটে। বিশেষ করে পাকিস্তানের করাচির লায়ারি অঞ্চলে চালানো অপরাধচক্র দমনের ‘অপারেশন লায়ারি’ থেকে ছবির বড় অংশের অনুপ্রেরণা এসেছে।
রণবীর সিং ও অক্ষয় খান্নার পাশাপাশি ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন সঞ্জয় দত্ত, আর. মাধবন, অর্জুন রামপাল ও সারা অর্জুন। দুই পর্বের এই সিরিজের প্রথম অংশ ইতিমধ্যেই দর্শক ও সমালোচকের প্রশংসা কুড়িয়েছে। সিরিজের দ্বিতীয় অংশ, ‘ধুরন্ধর পার্ট ২’, মুক্তি পাবে ১৯ মার্চ ২০২৬-এ।
