রজিনীকান্ত জানেন, কীভাবে শুধু পর্দায় নয়, বাস্তবেও দর্শককে চমকে দিতে হয়।আর ঠিক সেটাই করলেন তিনি,  তাঁর আসন্ন ছবি ‘কুলি’-এর অডিও এবং ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে। মঞ্চে উঠে রাজিনীকান্ত শুধু ছবির ট্রেলার নয়, ভক্তদের উপহার দিলেন তাঁর জীবনের এমন কিছু অধ্যায়, যা শুনে আবেগে চোখ ভিজে গেল অনেকের। একদিকে হাস্যরস, অন্যদিকে চোখে জল—একসঙ্গে এই দুই চরম অভিব্যক্তির সাক্ষী থাকল রাজিনীকান্তের ‘কুলি’-র অডিও ও ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠান। বহু প্রতীক্ষিত এই ছবিতে রয়েছেন নাগার্জুন আক্কিনেনি ও শ্রুতি হাসান। তবে, অনুষ্ঠানটি নিছক এক প্রোমোশন নয়, বরং হয়ে উঠল এক পর্দার বাইরের মানবিক গল্পের ঝলক।

 

“ও আমার কলেজের বন্ধু ছিল... আর আমি ছিলাম এক কুলি”—জীবনের প্রথম কান্নার কষ্টের গল্প প্রথমবার ভাগ করে নিলেন রজিনী। ‘কুলি’ ছবির নাম ঘোষণার পরই অনেকেই কৌতূহল প্রকাশ করেছিলেন, ঠিক কেন এমন নাম? এ প্রশ্নের জবাব যেন দিলেন থালাইভা নিজেই।
“আমি সত্যিই কুলি ছিলাম। মাল টানতাম, গালাগালি খেতাম। একদিন একটা লোক এসে দু’টাকা দিল টেম্পোয় মাল তোলার জন্য। গলা শুনেই চিনলাম—ও তো আমার কলেজের বন্ধু! আমি কলেজে ওকে নিয়ে মজা করতাম। আর এখন… সেই প্রথম জীবনে আমি কষ্টে কেঁদে ফেলেছিলাম।”
এই সংবেদনশীল স্বীকারোক্তি মুহূর্তে বদলে দিল মঞ্চের আবহ।

 পরমুহূর্তেই নিজেকে সামলে সেই আবহ বদলে দিলেন রজনী। “তোর সব চুল কীভাবে আছে রে নাগার্জুনা?”—হাসিতে মাত রাজিনীর চুল কটাক্ষ! অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাগার্জুনা আক্কিনেনি এবং শ্রুতি হাসান। মঞ্চে রজিনীকান্ত মজায় বলেন,“নাগার্জুনাকে দেখলাম, এখনও আগের মতোই। সব চুল আছে ওর! আর আমি? একটাও নেই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কী রহস্য? বলল—‘ব্যায়াম’।”

এরপরই মজার ছলে বলেন, “আমার তো শরীরের পার্টস পালটে গেছে। আমি তো ১৯৫০ সালের মডেল। এত দৌড়েছি, নাচার আগে কোরিওগ্রাফার স্যান্ডিকে বলে দিলাম—দয়া করে আমাকে ধীরে ধীরে চালাও!” হাসির রোল ওঠে পুরো অডিটোরিয়ামে।

“তুমি কমলের ফ্যান? জিজ্ঞেস করেছিলাম নাকি?”—লোকেশ কানাগরাজকে রজিনীর তির্যক রসিকতা। ‘কুলি’ পরিচালনা করছেন লোকেশ কানাগরাজ, যিনি কৈথি, বিক্রম-এর মতো ব্লকবাস্টার দিয়ে চেনা নাম।

রজিনীকান্ত জানান, তিনি কৈথি দেখার পরই লোকেশকে ফোন করেন— “বললাম, গল্প থাকলে দাও, নইলে পরে সবাই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। আগে চাই আমি।” লোকেশ জবাবে বলেন— “হ্যাঁ আছে, তবে আমি কমল হাসনের ফ্যান।”

এই জবাবে ‘থালাইভা’ মজা করে বলেন, “আমি জিজ্ঞেস করলাম নাকি, তুমি কার ফ্যান? কমল হাসানের? মানে বুঝলাম, পাঞ্চ ডায়লগ নাই! বুদ্ধিদীপ্ত গল্প হবে।” থালাইভার কথা শুনে ততক্ষণে পুরো প্রেক্ষাগৃহ হেসে গড়াগড়ি।

 সব মিলিয়ে ‘কুলি’ শুধু একটা ছবি নয়, রাজিনীকান্তের আত্মজীবনীর ছায়া। 

‘কুলি’-তে থাকছেন রজিনীকান্ত ছাড়াও নাগার্জুন ও শ্রুতি হাসান। পরিচালক লোকেশ কানাগরাজ, যাঁর সঙ্গে এই প্রথম কাজ করছেন থালাইভা।
চিত্রনাট্য সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত প্রকাশ হয়নি, তবে এটাই স্পষ্ট—এই ছবিতে একাধিক স্তরের আবেগ, থ্রিল, রিডেম্পশন এবং হার্ড-হিটিং অ্যাকশন থাকবে।

রজিনীকান্ত নিজেই যেন এই ছবির মাধ্যমে জীবনের সেরা জয়গান গাইতে চলেছেন—“কুলি থেকেও রাজা হওয়া যায়, যদি ইচ্ছা থাকে!”