নতুন ছবির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। আগেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, এবার হাত দিতে চলেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অমর উপন্যাসে। সূত্রের খবর, রবীন্দ্রনাথের ‘দুই বোন’ অবলম্বনে পরবর্তী ছবিটি তৈরি করতে চলেছেন তিনি।

সাহিত্য আর ইতিহাসের মেলবন্ধনে তৈরি হতে চলা এই ছবিতে উঠে আসবেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। টলিপাড়ায় গুঞ্জন শুরু হতেই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে— বিশ্বকবির চরিত্রে দেখা যাবে কাকে? কার উপর পরিচালকের ভরসা? অবশেষে মিলল উত্তর। জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রনাথের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। শুভ্রজিতের ‘দেবী চৌধুরানী’-তে ভবানী পাঠকের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। এবার আরও এক ঐতিহাসিক চরিত্রে। আরও এক বড় দায়িত্ব। আবারও নতুন রূপে ধরা দিতে চলেছেন অভিনেতা।

তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘গুমনামী’ ছবিতে ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করে দর্শককে মুগ্ধ করেছিলেন প্রসেনজিৎ। পর্দায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর রূপে তাঁর উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া। এবারও কি সেই প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন অভিনেতা?— টলিপাড়ায় জোর জল্পনা।

আজকাল ডট ইন-কে শুভ্রজিৎ বলেন, “জোরকদমে আমার পরের ছবির কাজ চলছে। অনেক খবরই বেরোচ্ছে। কিন্তু এই ধরনের তথ্য বাইরে বেরোচ্ছে কীভাবে জানি না। এই মুহূর্তে এই খবরের সত্যতা স্বীকার করছি না। আমার ছবির কাস্টিং নিয়ে এখনও কাজ চলছে।”

ফের বড় ক্যানভাসে ছবি তৈরি করছেন শুভ্রজিৎ। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে বলিউডে পা রাখতে চলেছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত তাঁর এই নতুন ছবিতে দেখা যেতে পারে কাজল, রানি মুখোপাধ্যায় কিংবা বিদ্যা বালানের মতো প্রথম সারির অভিনেত্রীদের। এই জল্পনায় নিয়ে যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও শিলমোহর পড়েনি। তবে ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে উত্তেজনা।

ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করবেন পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ, আর চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়। সম্পাদনার দায়িত্ব সামলাবেন সুজয় দত্ত রায়। রূপটানের দায়িত্বে রয়েছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সোমনাথ কুণ্ডু, আর পোশাক পরিকল্পনা করছেন পৌলমী গুপ্ত। শিল্প নির্দেশনায় রয়েছেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী আনন্দ আঢ্য। পরিচালকের সহকারী দলে রয়েছেন গায়ক দুর্নিবার সাহাও।

আরও একবার সাহিত্য আর ইতিহাসের অনবদ্য মেলবন্ধন ঘটাতে চলেছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। নতুন ছবির কাজে এখন তুমুল ব্যস্ত তিনি। প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপেই নজর রাখছেন নিজে— কারণ, এই প্রজেক্টে কোনও খামতি রাখতে রাজি নন শুভ্রজিৎ। তাঁর লক্ষ্য, এমন এক ছবি তৈরি করা যা শুধু দর্শকের মন জয় করবে না, বরং বাংলা সিনেমাকে পৌঁছে দেবে আরও উঁচু আসনে।

২০২১ সালে ‘অভিযাত্রিক’ তৈরি করে জাতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন শুভ্রজিৎ। বিশ্বমঞ্চে নতুন করে বাংলা ছবির জয়ধ্বজা ওড়ানোই এখন তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। আজকাল ডট ইন-কে তিনি বলেছিলেন, “জাতীয় পুরস্কারটা আমি বাংলা ছবি করেই পেয়েছি। আমি চাই, বাংলা ভাষাার ছবিকে নিয়ে জাতীয় স্তরে আলোচনা হোক। তাই বাংলা ছবিকে যাতে আরও বড় জায়গায় নিয়ে যেতে পারি, সেটা আমারই দায়িত্ব।”