বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্রের প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর বরাবরই লাইমলাইট থেকে দূরে থেকেছেন। তবে অভিনেতা যখন অভিনেত্রী হেমা মালিনীর সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তখন নানা বিতর্ক ও গুজবের জবাবে মুখ খুলেছিলেন তিনি। বিশেষ করে, ছেলে সানি দেওলের বিরুদ্ধে হেমা মালিনীকে আক্রমণ করার যে গুজব ছড়িয়েছিল, তা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে তিনি ছেলের পক্ষ নেন।
ধর্মেন্দ্র যখন প্রকাশ কৌরকে বিবাহবিচ্ছেদ না করেই হেমা মালিনীকে বিয়ে করেন ১৯৮০ সালে। তখন তাঁদের বড়ছেলে সানি দেওল মাত্র ২৪ বছরের যুবক। সেই সময় এমন গুজব ছড়ায় যে, বাবার দ্বিতীয় বিয়েতে ক্ষুব্ধ সানি নাকি হেমা মালিনীকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিলেন, এমনকী ছুরি নিয়েও তেড়ে গিয়েছিলেন। এই খবর বলিউডে গুঞ্জনের ঝড় তোলে।
প্রকাশ কৌর এই গুজবকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "এটা সত্যি নয়। প্রতিটি শিশুই চায় তার বাবা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তার মাকে ভালবাসুক। কিন্তু এর মানে এই নয় যে অন্য কোনও মহিলা যদি তার বাবাকে ভালবাসেন, তবে সে তাঁকে আক্রমণ করবে।" তিনি আরও জানান, তিনি তাঁর সন্তানদের সুশিক্ষা দিয়েছেন এবং তাঁর ছেলেরা কখনওই এমন কাজ করবে না যা অন্য কাউকে আঘাত করে। তিনি তাঁর ছেলেদের ভাল ব্যবহার এবং উন্নত নৈতিকতার ওপর তাঁর বিশ্বাস তুলে ধরেন।
প্রকাশ কৌর শুধুমাত্র ছেলের পক্ষেই নন, তিনি স্বামী ধর্মেন্দ্রের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়েও প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেকে হেমা মালিনীর সঙ্গে তুলনা করে বলেছিলেন, "শুধু আমার স্বামীই কেন? যে কোনও পুরুষই আমার চেয়ে হেমাকে বেশি পছন্দ করবেন।" এই মন্তব্যে তিনি একদিকে যেমন হেমা মালিনীর সৌন্দর্য ও গুণের প্রতি পরোক্ষভাবে সম্মান জানান, তেমনি নিজের প্রতি একরকমের আত্ম-বিদ্রূপ বা সরলতা প্রকাশ করেন।
ওই সাক্ষাৎকারে তিনি এ-ও বলেছিলেন যে, ধর্মেন্দ্র সেরা স্বামী না-ও হতে পারেন, তবে তিনি সেরা বাবা। তিনি তাঁর সন্তানদের প্রতি দায়িত্বশীল এবং তাদের কখনওই অবহেলা করেননি। প্রকাশ কৌর আরও যোগ করেন, স্ত্রী হিসেবে হেমা মালিনীর সিদ্ধান্তকে তিনি অনুমোদন না করলেও, একজন নারী হিসেবে তিনি তাঁর অনুভূতি বুঝতে পারেন। তাঁর এই মন্তব্যগুলি সেই কঠিন সময়েও তাঁর শক্তি এবং আত্মমর্যাদা তুলে ধরে।
প্রকাশ কৌরের সেই সময়ের বক্তব্যগুলি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, মাতৃত্বের টান, এবং পারিবারিক বন্ধনের জটিল দিকগুলির একটি বিরল চিত্র তুলে ধরে। তাঁর দৃঢ়তা এবং তাঁর সন্তানের প্রতি অটল বিশ্বাস, গুজবের মুখেও সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস দেখিয়েছিল।
