মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই থামল জীবনসফর। ১৭ নভেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন হিউম্যান সাগর। ওড়িশার সঙ্গীত জগতে শোকের ছায়া।
হিউম্যান সাগর ভর্তি ছিলেন ভুবনেশ্বর এইমসে। সেখানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। তিন দিন আগে একাধিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। চিকিৎসকরা লাইফ সাপোর্টে রেখেছিলেন তাঁকে। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে থেকেই কোনও উন্নতি দেখা যায়নি তাঁর স্বাস্থ্য। বরং অবস্থা ক্রমশ অবনতি হয়েছে। সোমবার রাতে এই হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হিউম্যান।
হিউম্যান সাগরের চিকিৎসা করছিলেন যে চিকিৎসক, শ্রীকান্ত বেহেরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন গায়ক ১৪ নভেম্বর হাসপাতাল ভর্তি হন একাধিক জটিলতা নিয়ে। বাইল্যাটেরাল নিউমোনিয়া, অ্যাকিউট ক্রনিক লিভার ফেলিওর, মাল্টি অর্গ্যান ডিসফাংশন সিন্ড্রোম, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, ইত্যাদি। অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সাহায্যে তাঁর চিকিৎসা করা হচ্ছিল। এক্সপার্ট টিম পর্যন্ত গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর অবস্থা এতটাই গুরুতর ছিল যে কিছু করা যায়নি শেষ পর্যন্ত। ১৭ নভেম্বর রাত ৯.০৮ এ সুরলোকে পাড়ি দেন তিনি।
হিউম্যান সাগরের মৃত্যুর পরই শোকপ্রকাশ করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। তিনি এক্স অর্থাৎ যা আগে টুইটার নামে পরিচিত ছিল সেখানে একটি পোস্টে লেখেন, 'আমি অত্যন্ত দুঃখিত জনপ্রিয় গায়ক হিউম্যান সাগরের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে। আমাদের সিনেমা এবং গানের জগতে একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। আমি ওঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। ঈশ্বর ওঁর আত্মাকে শান্তি দিন।' কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং বিজেপির জাতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট বৈজয়ন্ত পান্ডাও শোকপ্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত হিউম্যান সাগর 'ভয়েস অফ ওড়িশার সিজন ২' -এর বিজয়ী ছিলেন। ১৯৯০ সালের ২৫ নভেম্বর ওড়িশায় জন্মগ্রহণ করেন। 'ইশক তু হি তু' ছবির হাত ধরে প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এরপর আর তাঁকে পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। কেবল ওড়িয়া গান নয়, তাঁর একটি হিন্দি অ্যালবাম রয়েছে। ২০১৭ সালে 'ভয়েস অফ ওড়িশা ২'র আরেক প্রতিযোগী শ্রিয়া মিশ্রকে বিয়ে করেন হিউম্যান। তাঁদের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। ২০১৯ সালে তিনি যোগ দেন বিজেডিতে। গায়কের মৃত্যুর পর আচমকাই ভাইরাল হয়েছে তাঁ এবং তাঁর স্ত্রী শ্রিয়ার ঝামেলার পুরনো ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অতীতে এক ইন্টারভিউতে শ্রিয়া জানিয়েছিলেন গায়ক তাঁর উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করেন। এমনকী হিউম্যান তাঁর ধর্ম মানতে বলতেন শ্রিয়াকে, তিনি আপত্তি জানালে চলত অত্যাচার। তাঁদের মেয়ে অ্যাঞ্জেলের জন্মের পর সেই অত্যাচারের মাত্রা নাকি বেড়ে গিয়েছিল। সেই সময় পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বলেও জানান শ্রিয়া। কেবল এতটুকুই নয়, শ্রিয়া অভিযোগ করেন হিউম্যান নাকি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন। যদিও বছর দুয়েক আগে তাঁরা তাঁদের এই ঝামেলা মিটিয়ে নেন কাউন্সেলিংয়ের পর।
