নেহা কক্করের নাম করে জালিয়াতি! ডিজিটাল মাধ্যমের উপর মানুষের যত বেশি নির্ভরতা বাড়ছে, ততই বাড়ছে সাইবার ক্রাইমের ধরন। এবার ভুয়ো আন্তর্জাতিক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম এফএক্সও নেট-এর প্রচারে প্রতারকরা ব্যবহার করল বলিউডের খ্যাতনামা গায়িকা নেহা কক্করের নাম। জানা গিয়েছে মুম্বইয়ের এক আইনজীবী এই ফাঁদে পা দিয়ে ৫ লাখ টাকার বেশি খুইয়েছেন।
এই জালিয়াতির ঘটনার পর ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের ওরলি থানার তরফে তদন্ত শুরু করে দেওয়া হয়েছে। উক্ত থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন আইনজীবী শবনম মহম্মদ হুসেন সায়েদ। বছর ৪৫ এর এই আইনজীবী এই প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে ৫ লাখ টাকার বেশি হারিয়েছেন। তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন বিডিডি চলের বাসিন্দা তিনি। চলতি বছরের জুন মাসে তিনি কিছু লোভনীয় প্রতিবেদন এবং ভিডিয়ো দেখেন এই এফএক্সও নেট নামক ভুয়ো আন্তর্জাতিক ট্রেডিং সংস্থার। সেখানেই নেহা কক্করকে এই প্ল্যাটফর্মের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দেখেন। গায়িকা নাকি সেই বিজ্ঞাপনে উক্ত প্ল্যাটফর্মকে নির্ভরযোগ্য ট্রেডিং প্লাটফর্ম বলে দাবি করেছিলেন। সেই প্রলোভনে পা দিয়ে, এবং নেহা কক্কর যেহেতু এটির বিজ্ঞাপন দিয়েছেন সেটা দেখে তিনি এফএক্সও নেটের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তাঁর কথা হয় বিজয় এবং জিম্মি ডিসুজা নামক দুই ব্যক্তির সঙ্গে। তাঁরা নাকি অভিযোগকারিণী শবনম মহম্মদ হুসেন সায়েদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফোন নম্বরের মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন। টেলিগ্রাম, জুম মিটিং এবং ইমেলের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, যা দেখে শবনমের ধারণা হয় যে এই প্ল্যাটফর্ম হয়তো সত্যিই নির্ভরযোগ্য।
প্রতারকরা শবনমকে বোঝান যে তিনি যদি এখানে তাঁর নামে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খোলেন তাহলে তিনি দারুণ রিটার্ন তো পাবেনই, সঙ্গে এক্সপার্টদের তরফে বিনিয়োগ করার টিপস্ও পাবেন টেলিগ্রামে। এই কথায় বিশ্বাস করে তিনি ৫ লাখ ২ হাজার এবং ২৫ টাকা খেপে খেপে তাঁদের পাঠান। জুন মাসের ১৮ তারিখ থেকে অক্টোবরের ৯ তারিখের মধ্যে এই বিপুল অঙ্কের টাকা পাঠান তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে। তবে একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে নয়, একাধিক ব্যক্তির নামে, একাধিক জায়গায় সেই টাকা পাঠান। তবে না কোনও লাভের মুখ দেখেছেন তিনি, না তাঁকে তাঁর টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তখনই তিনি বোঝেন যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এবং অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশের তরফে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং আইটি অ্যাক্টের অধীনে মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে তাঁরা শবনমের সঙ্গে হওয়া সেই ব্যক্তিদের কথপোকথন তদন্ত করে দেখছেন। জুম মিটিং, টেলিগ্রাম এবং বিভিন্ন অনলাইন লেনদেনের সূত্র ধরে প্রতারকদের ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এটাই প্রথম নয় যেখানে কোনও প্রভাবশালী বা গ্ল্যামার দুনিয়ার কারও নাম ব্যবহার করে লোক ঠকানো হল। আগেও একাধিকবার এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের মতে, প্রতারকরা তারকাদের ছবি ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্যতা অর্জন করার চেষ্টা করে এবং মানুষকে ঠকায়। তাই তাঁদের তরফে বারবার সচেতন করা হয়েছে যাতে যেখানে এভাবে তারকাদের ছবি বা নাম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে সেগুলোতে যেন চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস না করা হয়। এই ধরনের প্রতারণার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
