বলিউড ‘বাদশা’ শাহরুখ খানের কেরিয়ারের মুকুটে জুড়ল নতুন পালক। ‘জওয়ান’–এর জন্য এই প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন তিনি— তাঁর ৩৩ বছরের কেরিয়ারের প্রথম জাতীয় সম্মান! সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ভক্তরা যেন উল্লাসে ফেটে পড়েছেন। কিন্তু আনন্দের পাশাপাশি উঠেছে বিতর্কের ঝড়ও। সমালোচকদের একাংশের দাবি, শাহরুখের থেকে অনেক বেশি প্রাপ্য ছিলেন মনোজ বজপেয়ী—‘সির্ফ এক বন্দা কাফি হ্যায়’–ওয়েব ছবিতে তাঁর দুরন্ত অভিনয় সৌজন্যে।

এই তুলনা ঘিরে তৈরি হওয়া তর্কে অবশেষে মুখ খুললেন মনোজ। সম্প্রতি, দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বললেন তিনি—“এটা সম্পূর্ণই অর্থহীন আলোচনা। পুরনো কথা নিয়ে বসে থাকা মানে হেরে যাওয়া। ‘বন্দা’ আমার কেরিয়ারের বিশেষ ছবি, যেমন ‘জোরাম’ও। কিন্তু এ নিয়ে আমি কখনও বিতর্কে যাইনি, যাবও না। অতীতকে অতীতেই ফেলে দেওয়াই শ্রেয়।”

শুধু তাই নয়, চারবারের জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী মনোজ আরও বড় প্রশ্ন তুললেন বর্তমান পুরস্কার ব্যবস্থার ওপর। তাঁর মতে, শুধু জাতীয় পুরস্কার নয়, দেশের প্রায় সব পুরস্কারই ধীরে ধীরে হারাচ্ছে শিল্পকলা–ভিত্তিক মর্যাদা, বাড়ছে বাণিজ্যিক দিকের প্রভাব। তিনি বলেন—“এটা শুধু জাতীয় পুরস্কার-ই নয়, সব পুরস্কারের ক্ষেত্রেই সত্যি। যেভাবে এগুলো পরিচালিত হচ্ছে, সেটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকেই ভাবতে হবে। আমার সম্মান আমার হাতে, আমি কোন ছবি বেছে নিচ্ছি সেটাই আমার মর্যাদা। পুরস্কার নিয়ে সারাক্ষণ গর্ব করে দাঁড়িয়ে থাকা অর্থহীন। ওগুলো বাড়ির শোভা মাত্র।”

অন্যদিকে শাহরুখ খানের কাছে এই বছরের জাতীয় পুরস্কার নিছকই সম্মান নয়, বরং নতুন অধ্যায়ের সূচনা। ‘জওয়ান’ তাঁকে এনে দিল তাঁর প্রথম ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড, আর এই ছবিই প্রমাণ করল—ম্যাস আপিলের পাশাপাশি আবেগঘন চরিত্রেও এখন সমান দক্ষ ‘কিং খান’। অবশ্য মনোজ বজপেয়ীও ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডের পুরোনো চেনা মুখ। ‘সত্য’, ‘পিঞ্জর’, ‘আলিগড়’ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ‘ভোঁসলে’—প্রতিবারই তাঁর অভিনয় কেড়েছে জাতীয় স্বীকৃতি।

তবে এবারের বিতর্ক স্পষ্ট করল এক জিনিস—বলিউডে পুরস্কারের লড়াই শুধু ট্রফি নয়, সেটি হয়ে উঠেছে মর্যাদার লড়াইও।


অন্যদিকে, তাঁর অভিনীত ছবি ‘জুগনুমা’–র প্রচারে এসে এক একান্ত আলাপচারিতায় মনোজ খোলাখুলি বললেন, “হঠাৎ করে অনুরাগের জন্য আমার নতুন ভালবাসা জন্মেছে!” বলে হেসে ফেলেন তিনি। তবে ঠাট্টা-রসিকতা করতে ছাড়েননি অভিনেতা—“সমস্যা হল, আমি আজও ওর সঙ্গে গম্ভীরভাবে বসে কথা বলতে পারি না। ও সবসময় খোঁচা দেয়, আর আমি ফেরত দিই। আমি নিজেই একটা ছবি বানিয়ে ওকে একেবারে বাজে একটা চরিত্রে কাস্ট করব! হ্যাঁ, ওকে কাস্ট করব, জীবনটা নরক করে দেব। ওকে বোঝাব, অভিনয় কোনও ছেলেখেলা নয়, যেটা করে আজকাল দক্ষিণে ও  টাকাও কামাচ্ছে।”

সবার ধারণা 'সত্যা'-র সেটেই প্রথম দেখা হয়েছিল মনোজ আর অনুরাগের। কিন্তু অভিনেতা জানালেন, আসল ঘটনা আলাদা।মনোজ মনে করেন, সেদিন তিনি গিয়েছিলেন শ্রীরাম রাঘবনের অফিসে, পূর্ব অন্ধেরিতে। তখন রাম গোপাল বর্মা নতুন লেখক খুঁজছিলেন। মনোজের দায়িত্ব ছিল ভাল কাউকে খুঁজে দেওয়া। “দু’জনকে নিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু রামু খুশি হননি। সেখানেই হঠাৎ অনুরাগের সঙ্গে আলাপ। সিগারেট থেকে সিগারেটে চলল আড্ডা। বুঝলাম ছেলেটার মাথা অসাধারণ, সিনেমা নিয়ে ভীষণ পড়াশোনা করা। আমি নিজেই ওকে নিয়ে গেলাম রামুর কাছে। তখন অনুরাগের বয়স মাত্র ২২।”

সেই সুযোগই বদলে দিল অনুরাগ কাশ্যপের জীবন।