গোটা নেপাল জুড়ে চলছে তরুণদের বিক্ষোভ, আর সেই আন্দোলন দমনে রক্ত ঝরল রাজপথে। সোমবার কাঠমান্ডুর পার্লামেন্ট ভবনের সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু অন্তত ২০ জনের, আহত কমপক্ষে আড়াইশো। এই মর্মান্তিক ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিলেন বলিউড অভিনেত্রী ও নেপালের কন্যা মনীষা কৈরালা। তিনি নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বেশ্বরপ্রসাদ কৈরালার নাতনি। 

 

সমাজমাধ্যমে রক্তে ভেজা এক জুতোর ছবি শেয়ার করে অভিনেত্রী লিখেছেন—

“আজ নেপালের জন্য এক কালো দিন। যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনতার কণ্ঠকে গুলি দিয়ে চেপে ধরা হয়, যখন ন্যায়বিচারের দাবির জবাবে বুলেট ছোড়া হয়, তখনই জন্ম নেয় এই অন্ধকার।”

 

কীভাবে শুরু হল এই বিক্ষোভ?

প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির ঘোষণায় হঠাৎই বন্ধ করে দেওয়া হয় ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ ক্রমশ ঘনিয়ে আসছিল সরকারের বিরুদ্ধে, আর সেই ক্ষোভ প্রথমে ছড়িয়ে পড়ে ডিজিটাল দুনিয়ায়। এরপরই রাস্তায় নামে মূলত জেনারেশন জি-র তরুণরা।

 

হাজার হাজার বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট ভবনের ভিতরে ঢুকে গেলে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়। পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট— সবকিছুর পরও বিক্ষোভ থামেনি। শেষপর্যন্ত গুলি চালালে রক্তাক্ত হয় নেপালের রাজধানী।

 

কেবল কাঠমান্ডুই নয়, একে একে বীরগঞ্জ, ভৈরহাওয়া, বুটওয়াল, পোখরা, ইতাহারি, দামক— সব শহরে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। সেনা নামানো হয়েছে, জারি হয়েছে কারফিউ। জনরোষ ও রাজনৈতিক চাপের মুখে ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন, দায় স্বীকার করে। পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি‌ শর্মা ওলি! 

 

বলিউডে 'দিল সে',” 'বম্বে', '১৯৪২: এ লাভ স্টোরি'–র মতো কালজয়ী ছবিতে অভিনয় করা মনীষা সম্প্রতি সঞ্জয় লীলা বনশালির নেটফ্লিক্স সিরিজ “হীরামাণ্ডি: দ্য ডায়মন্ড বাজার”–এ দুর্দান্ত কামব্যাক করেছেন। 'মল্লিকাজান' চরিত্রে তাঁর অভিনয় নতুন প্রজন্মকেও মুগ্ধ করেছে।

 

কিন্তু গ্ল্যামারের বাইরেও দেশের সংকট তাঁকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। রক্তমাখা জুতোর ছবির সঙ্গে তাঁর বার্তা এখন নেপালের তরুণ আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

 

 

একইসঙ্গে আলোড়ন, ক্ষোভ আর প্রশ্ন— গণতন্ত্রের কণ্ঠ কি সত্যিই গুলিতে স্তব্ধ করা যায়?