স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান কুণাল কামরা আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে। এবার বিতর্কের সূত্র একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট। সোমবার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি ছবিতে তিনি এমন একটি টি-শার্ট পরে ছবি দেন, যেখানে একটি কুকুরের ছবি ও তার সঙ্গে আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ)-র উল্লেখ রয়েছে। আরএসএস-এর আদর্শে উদ্বুদ্ধ সংগঠন হিসেবে পরিচিত বিজেপি। তাই আরএসএস-কে ইঙ্গিত করেই এই পোস্ট, এমনটাই দাবি বিরোধীদের।

এই পোস্ট সামনে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় বিজেপি ও তার এনডিএ শরিক শিবসেনা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দেওয়া হয়। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী ও বিজেপির সিনিয়র নেতা চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ইন্টারনেটে যারা আপত্তিকর পোস্ট দেবে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় দায়হীন আচরণ বরদাস্ত করা হবে না।
এখানেই থামেনি রাজনৈতিক চাপ। বিজেপির শরিক শিবসেনা আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে সরাসরি কামরার বিরুদ্ধে 'অ্যাকশন' দাবি করে।
শিবসেনা নেতা ও মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার সদস্য সঞ্জয় শিরসাট বলেন,“আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে মন্তব্য করেছে। এবার সাহস করে সরাসরি আরএসএস-কে আক্রমণ করেছে।বিজেপি-কে এর যোগ্য জবাব দিতে হবে।”
শিরসাট আরও দাবি করেন, আরএসএস-কে নিশানা করে কামরা যে পোস্ট করেছেন, তা সম্পূর্ণ আপত্তিকর এবং শিবসেনা অতীতেও এর জবাব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও দেবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, কুণাল কামরার বিতর্কিত মন্তব্য নতুন নয়। চলতি বছরের শুরুতে মুম্বইয়ের হ্যাবিট্যাট স্টুডিও-তে এক শো চলাকালীন তিনি বলিউড ছবি দিল তো পাগল হ্যায়-এর জনপ্রিয় গান ‘ভোলি সি সুরত’-এর প্যারোডি গেয়ে মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে-কে কটাক্ষ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর জেরেই শিবসেনার যুব সংগঠন যুব সেনা ওই কমেডি ভেন্যুতে ভাঙচুর চালায় এবং কুণাল কামরার বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের হয়।
এই ঘটনার দিকেই সম্ভবত ইঙ্গিত করে সোমবারের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে কুণাল কামরা লেখেন, “এই ছবি কোনও কমেডি ক্লাবে তোলা নয়।” ব্যঙ্গ, রাজনীতি আর স্বাধীন মতপ্রকাশ-এই তিনের সংঘাতে কুনাল কামরা যেন আবারও এক আগুনের পরীক্ষার সামনে। এখন প্রশ্ন একটাই, এই বিতর্ক কি শুধুই রাজনৈতিক চাপেই থেমে যাবে, না কি ফের আইনি জটিলতায় জড়াবেন কুণাল কামরা?
