অভিনেত্রী কুণিকা সদানন্দ, যিনি বর্তমানে ‘বিগ বস ১৯’-এর প্রতিযোগী, হঠাৎ করেই বিতর্কের মুখে পড়েছেন। কারণ তাঁর একটি পুরনো সাক্ষাৎকারের ভিডিও আবারও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর নেটিজেনরা তাঁর বক্তব্য নিয়ে তীব্র সমালোচনা করছেন।

প্রায় আট মাস আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুণিকা দাবি করেছিলেন, বলিউডে ধর্ষণ বলে কিছু হয় না। তাঁর মতে, নারীরাও প্রযোজক বা পরিচালকদের সঙ্গে কাজের জন্য দেখা করার সময় কোনও না কোনওভাবে ‘ইঙ্গিত’ দেন। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন, “যদি আমি কারও কাছে কাজ চাইতে যাই এবং বলি ‘স্যর, কোনও ভাল কাজ থাকলে আমায় জানাবেন’— এটাও এক ধরনের ইশারা।”

তার এই মন্তব্যকে অনেকে অত্যন্ত অসংবেদনশীল এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিচ্ছেন। অনেকেই লিখেছেন যে, এই ধরনের বক্তব্যে প্রকৃত ভুক্তভোগীদের সংগ্রামকে ছোট করে দেখা হচ্ছে এবং যৌন হেনস্থার বাস্তবতাকে অস্বীকার করা হচ্ছে।

নিজের বক্তব্য আরও স্পষ্ট করতে গিয়ে কুণিকা এক প্রকার ইঙ্গিতপূর্ণ ভঙ্গিতে একই মন্তব্য আবারও পুনরাবৃত্তি করেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক যখন উদাহরণ দেন যে, অনেক অভিনেত্রী নাকি পরিচালকের কলার ঠিক করে দেন, তখন কুনিকা জবাবে বলেন— “যদি কেউ পরিচালকের পারফিউমের প্রশংসা করে, তখন পরিচালক তাঁকে কাছে এসে ঘ্রাণ নিতে বলতেই পারেন।”

এরপর তিনি আরও বলেন, “আপনি যদি এ ধরনের কথাবার্তা বলেন, তাহলে… আমি কখনও শুনিনি যে কোনও সোজাসাপ্টা প্রকৃতির মেয়েকে জোর করে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমি সবসময়ই সোজাসাপ্টা কথা বলেছি। আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি— কোনও মূল্যেই আমি হিরোইন হতে চাই না।”

এই ভিডিও ক্লিপটি সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।  এরপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কারণ গায়ক কুমার শানুর ছেলে জান কুমার শানুও প্রকাশ্যে কুনিকাকে আক্রমণ করেন। উল্লেখ্য, কুণিকা একসময় শানুর সঙ্গে ছ’বছরের সম্পর্কে ছিলেন। সেই সময় গায়ক ছিলেন বিবাহিত।

ইনস্টাগ্রাম নিজের প্রতিক্রিয়ায় জান লিখেছেন, ‘এটাই তিনি সারা জীবন করেছেন। বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গেও, আর যাকেই পারতেন, তার সঙ্গেই। মুখ বেশি খোলার দরকার নেই, নইলে অনেক সত্যি ফাঁস হয়ে যাবে।’

বিতর্ক যতই বাড়ছে, ততই বিগ বস ১৯-এর ঘরে কুণিকার অবস্থান নিয়ে দর্শকদের নজরদারি তীব্র হচ্ছে। অনেকে অপেক্ষা করছেন— তিনি কি এই সমালোচনার জবাব শোয়ের ভিতরে দেবেন, নাকি বাইরে এসে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করবেন।

প্রসঙ্গত, দিল্লি থেকে কুণিকার অভিনয়যাত্রা শুরু। প্রথম বড় সুযোগ পান আসরানির স্ত্রীর হাত ধরে। ছোটপর্দায় স্বাভিমান–এ ১৮ বছরের সন্তানের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে নজর কাড়েন। পরে বলিউডে পা রেখে খলনায়িকা ও সাহসী চরিত্রে নিজের আলাদা জায়গা তৈরি করেন। ‘বেটা’, ‘গুমরাহ’, ‘খিলাড়ি’—সবেতেই ছিল তাঁর উপস্থিতি। তবে দর্শকের মনে আজও তিনি অমলিন রাজশ্রীর সুপারহিট ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’–এ রীমা লাগুর বন্ধু ‘শান্তি’ হয়ে। দীর্ঘ ২৫ বছরের কেরিয়ারে ১১০টি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি।