আইনিভাবে পথ আলাদা হওয়ার দুই দশক পেরিয়ে গিয়েছে বহুদিন আগেই। কিন্তু কিছু মাস আগে গায়ক কুমার শানুর নামে গার্হস্থ্য হিংসা, অত্যাচারের অভিযোগ এনেছিলেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী রীতা ভট্টাচার্য। এবার তাঁর বিরুদ্ধেই মানহানির মামলা করলেন শানু। ক্ষতিপূরণ হিসেবে চাইলেন কত টাকা? 

সম্প্রতি কুমার শানু বম্বে হাইকোর্টে প্রাক্তন স্ত্রী রীতা ভট্টাচার্যের নামে মানহানির মামলা করেছেন। ১৭ ডিসেম্বর এই কেসের শুনানি ছিল। সেখানেই গায়ক তাঁর ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য, মিথ্যে অপবাদ দেওয়ার কারণে প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ চাইলেন। শুধু তাই নয়, বলিউড তথা টলিউডের জনপ্রিয় গায়ক এদিন একই সঙ্গে, আবেদন করেন যেন সেই সমস্ত সাক্ষাৎকারে সরিয়ে দেওয়া হয় যেখানে রীতা তাঁর নামে এই অভিযোগ করেছিলেন। 

কুমার শানু তাঁর আইনজীবী তথা 'বিগ বস ১৭' -এর প্রতিযোগী সানা রাইস খানের মাধ্যমে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন। সানা তাঁর মক্কেলের হয়ে জানিয়েছিলেন, রীতা ভট্টাচার্য একাধিক বিনোদন জগতের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, যেখানে জানিয়েছিলেন তিনি যখন গর্ভবতী ছিলেন সেই সময় কুমার শানু তাঁকে খেতে দিতেন না, রান্নাঘরে আটকে রাখতেন। প্রয়োজনীয় দুধ থেকে ওষুধপত্র কিছুই দিতেন না। সেই কারণেই তিনি কোর্টের দ্বারস্থ হন গর্ভাবস্থায়। রীতা তাঁর বক্তব্যে এও দাবি করেছিলেন যে তাঁরা যখন বিবাহিত ছিলেন, সেই সময় গায়ক একাধিক অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন, পরিবারকে সময় দিতেন না। অবহেলা করতেন। 

রীতা ভট্টাচার্যের দেওয়া এই সাক্ষাৎকার ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভাইরাল হয়। শুধু তাই নয়, রীতিমত সাড়া ফেলে দেয় তা। এরপরই কুমার শানু তাঁর নামে মানহানির মামলা করেন। তাঁর আইনজীবী সানা জানিয়েছেন, ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি যখন বান্দ্রা ফ্যামিলি কোর্টে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয় সেই সময় তাঁরা সম্মতি জানিয়ে একটি কাগজে সই করেছিলেন, যেখানে দুই পক্ষই জানিয়েছিল যে তাঁরা ভবিষ্যতে একে অন্যের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ আনবেন না বা করবেন না। রীতা যে মন্তব্য করেছিলেন সাক্ষাৎকারগুলোতে তাতে তিনি দুই দশক আগে করা চুক্তি লঙ্ঘন করেছেন, বলেই জানিয়েছেন কুমার শানুর আইনজীবী। 
এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভাল, রীতা ভট্টাচার্যের দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভাইরাল হওয়ার পর ২৭ সেপ্টেম্বরই কুমার শানু তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠান। কেবল রীতা ভট্টাচার্য নয়, যে প্ল্যাটফর্মগুলো এই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল তাঁদেরও তিনি আইনি নোটিশ পাঠান। জানান, এই সাক্ষাৎকারগুলো না সরালে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। এরপরই এই মানহানির মামলা করেছেন। রীতা তাঁর বক্তব্যে যা যা বলেছেন, এতে কুমার শানুর খ্যাতি, সুনাম নষ্ট হয়েছে তো বটেই, একই সঙ্গে তাঁকে মানসিক চাপের মধ্যে দিন কাটাতে হয়েছে বলেও গায়ক জানিয়েছেন। 

প্রসঙ্গত, কুমার শানু এবং রীতা ভট্টাচার্য ২০০১ সালে খাতায় কলমে আলাদা হন। তাঁদের একটি ছেলেও আছে, জান কুমার শানু, যিনি বিগ 'বস ১৪' -তে অংশ নিয়েছিলেন প্রতিযোগী হিসেবে।