ট্রোল। এ যেন আজকের সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে চেনা শব্দ। যে কোনও জনপ্রিয় মুখ, তারকা, খেলোয়াড় বা জনমানুষ...কেউই রেহাই পান না। কখনও খুনসুটি, কখনও সমালোচনা। কিন্তু অনেক সময়ই সেই সমালোচনা সীমা ছাড়িয়ে গিয়ে পৌঁছয় অপমান আর কুরুচির স্তরে। শুধুই কি হেনস্থা করার লক্ষ্যে তারকাদের মন্তব্য করে ট্রোলাররা নাকি এটাকে অভিসন্ধি থাকে আরও অন্য কিছু? এই ‘ট্রোল-সর্বস্ব’ সংস্কৃতি নিয়েই মুখ খুললেন টলিউড তারকা কোয়েল মল্লিক। স্পষ্ট ভাষায় জানালেন তাঁর অবস্থান, তাঁর ভাবনা।

 

 

কোয়েলের কথায়, “আমার জীবন খুব একটা সমাজমাধ্যম কেন্দ্রিক নয়। বরং বলব, আমি খুব প্রাইভেট পার্সন। যদি সামাজিক কোনও বিষয়ে আমার কিছু বলার থাকে, প্রতিবাদ করার থাকে তাহলে আমি তা আমার জীবন যাপনের মধ্যে দিয়ে দিই অথবা আমার সিনেমার মাধ্যমে।" খানিক থেমে তিনি আরও বলেন, “দেখুন, তারকারা খুব সফট টার্গেট! সহজেই তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু বলা যায় আর বলেই দশটা লোকের নজরে আসা যায়। অর্থাৎ তারকাদের ট্রোল করলে প্রচার পাওয়াটা খুব সহজ হয়ে যায়। আসলে, তারকাদের নিয়ে, তারকাদের উপর কোনও মন্তব্য করাটা চটজলদি প্রচার পাওয়ার একটা উপায়। আর দেখুন, মন্তব্য তো অনেকরকম হয় কিন্তু কোনও মন্তব্যর ভাষা যদি শালীনতা ছাড়িয়ে যায়, সেই মন্তব্যের লক্ষ্য যদি হয় শুধুই হেনস্থা...তাহলে যে বা যাঁরা ওই সব মন্তব্য করছেন, আমি বলব তাঁদের সুস্থ ভাবনা-বুদ্ধির অভাব রয়েছে! তখন সেই ব্যক্তিদের সুস্থ মানসিকতা কামনা করি। আর কী করব!”

 

এরপর ফের খানিক চুপ মিতিনমাসি। তারপর বেশ জোর গলায় বলে উঠলেন, এই প্রসঙ্গে এটাও বলব যে সমাজমাধ্যম কিন্তু আদতে সমাজের-ই প্রতিফলন। সমাজে নেগেটিভিটি বাড়ছে, অসহিষ্ণুতা বাড়ছে, বিকৃতি বাড়ছে তাই সমাজমাধ্যমেও তার প্রতিফলন পড়ছে। যদি সমাজটা পরিষ্কার থাকত, তাহলে সমাজমাধ্যমও সেরকম থাকত।

 

তাহলে ট্রোলিং থামানোর নিদান কী? কোয়েলের জবাব, " সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই মিলে বললে, তবে ট্রোল করা থামতে পারে। আর সবাই যদি না বলে, চুপ করে থাকে তাহলে যে খারাপ কথা বলছে তার দলে গিয়ে বহু মানুষ গিয়ে ভিড় করবে। এবং তা হচ্ছেও। সেটা খুবই দুঃখের। আর কী বলুন তো, কোনটা ঠিক কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক কোনটা খারাপ সেটা কী বলে দিতে হয়? আজ যে কুরুচিকর ভাষায় সমাজমাধ্যমে ট্রোল করছ সে কি তার বাড়ির লোককে এমন ভাষায় আক্রমণ করতে পারবে?

 

 

তবে এখনই আশা হারাচ্ছেন না কোয়েল। তাঁর কথায়, “যখন সমাজমাধ্যমে দেখি কেউ কুরুচিকর, অশালীন কোনও মন্তব্য করল এবং তা দেখে বাকি অনেকে তাকে চেপে ধরে বললেন, " ভাষাটা ঠিক করুন, ইটা ভুল করছেন।...” তখন ভাল লাগে দেখে। তখন মনে হয় যে ঠিক পথটা আজও আছে কিন্তু। এখনও সচেতনতা আছে, মানবিকতা আছে, ভদ্রতার জায়গা আছে।”