সংবাদ সংস্থা মুম্বই: জীবন তাঁকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়েছে, কিন্তু শেষ বিদায়ে প্রাক্তনের প্রতি সম্মান জানাতে পিছপা হলেন না করিশ্মা কাপুর। দিল্লির লোধি রোড শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরের। সেখানে উপস্থিত ছিলেন করিশ্মা, তাঁর দুই সন্তান সামায়রা ও কিয়ান এবং ছোট বোন করিনা কাপুর খান।

 

১২ জুন ইংল্যান্ডে পলো খেলার সময় আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন সঞ্জয় কাপুর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৫৭। এই ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহ পর, ১৯ জুন দিল্লিতে হয় তাঁর শেষকৃত্য। সেখানে করিশ্মা ও করিনা—দুই বোনকেই দেখা গেল একসঙ্গে, পরস্পরের পাশে দাঁড়িয়ে, এক গভীর ব্যক্তিগত মুহূর্তে পরিবারের পাশে থাকার নিঃশব্দ অঙ্গীকারে।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে শেষকৃত্যের একাধিক ছবি ও ভিডিও। এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, করিশ্মা ও করিনা একসঙ্গে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সঞ্জয়কে। তারপর করিনা করিশ্মার বাহুতে আলতোভাবে হাত রাখেন, আর দু’জনে একসঙ্গে ধীরে ধীরে এগিয়ে যান—চারপাশে তাঁদের পরিবারের সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীরা।

 

আরও একটি আবেগঘন মুহূর্ত ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। সামায়রা ও কিয়ান—দুই ভাইবোন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। পাশে দাঁড়িয়ে মা করিশ্মা, আর তাঁদের সান্ত্বনা দিতে রয়েছেন মাসি করিনা। করিনার ঠিক পেছনে দেখা যায় স্বামী সইফ আলি খানকেও।

 

এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে এক ভিডিওয় দেখা যায়, করিশ্মা তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে সঞ্জয়ের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করছেন। সঞ্জয়ের মুখাগ্নি থেকে শুরু করে রীতিনীতি মেনে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সমস্ত কাজ করেছেন সঞ্জয়-করিশ্মার পুত্র কিয়ান।  জানা গিয়েছে, ২২ জুন দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলে বিকেল ৪টে থেকে ৫টার মধ্যে হবে একটি প্রার্থনা সভা।

 

প্রসঙ্গত, সঞ্জয় কাপুর ছিলেন দেশের প্রথম সারির শিল্পগোষ্ঠী সোনা কমস্টার-এর কর্ণধার। মৃত্যুর কারণ হিসেবে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—হার্ট অ্যাটাক। তবে এখনো পর্যন্ত সরকারি কোনও বিশদ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।  করিশ্মা ও সঞ্জয় বিয়ে করেছিলেন ২০০৩ সালে। তাঁদের দাম্পত্যজীবনে জন্ম নেয় দুই সন্তান, সামায়রা (বর্তমানে ১৯) ও কিয়ান (১৩)। ২০১৪ সালে তাঁরা বিচ্ছেদের মামলা করেন এবং ২০১৬ সালে আইনত বিবাহবিচ্ছেদ সম্পূর্ণ হয়।

 

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, জীবনের নানা মোড়ে ভাঙা সম্পর্কের মধ্যেও এমন দৃশ্য যেন এক অনুচ্চারিত বার্তা দেয়—আন্তরিকতা আর দায়িত্ববোধের কিছু প্রাচীন মূল্য আজও টিকে আছে। করিশ্মা ও করিনার এই মূহূর্তটি তাই শুধু প্রাক্তনের প্রতি শ্রদ্ধা নয়, এক অভিন্ন পারিবারিক মূল্যবোধের উদাহরণও বটে।