করণ জোহরের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবৃত্তের মধ্যে পড়েন অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা। অনুষ্কাকে নিয়ে যেমন ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবি পরিচালনা করেছেন তেমন অনুষ্কার সঙ্গে ‘বোম্বে ভেলভেট’ ছবিতে অভিনয় করেছেন করণ। তাঁর জনপ্রিয় তথা চূড়ান্ত বিতর্কিত চ্যাট শো অনুষ্কা একাধিকবার অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছেন। কফি কাউচে বসে দু'জনের রঙিন আড্ডা জায়গা করে নিয়েছে খবরের শিরোনামে। এত ভাল বন্ধু অনুষ্কা অথচ তাঁর স্বামী তথা বিশ্বখ্যাত ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে কেন আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি 'কফি উইথ করণ-এর কোনও সিজনের পর্বে? তাহলে কি করণের সঙ্গে ততটা সহজ সম্পর্ক নয় কোহলির? না কি অনুষ্কাই বারণ করে দেখেছেন কোহলিকে? এত বছরে এই প্রথমবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন করণ স্বয়ং!  

 

২০১৯ সালে ‘কফি উইথ করণ’-এর মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন দুই ভারতীয় ক্রিকেটার হার্দিক পাণ্ডিয়া ও কে. এল. রাহুল। প্রথমে পর্বটা ছিল হালকা মজার, আগের সব পর্বের মতোই ঝাঁ চকচকে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি পরিণত হয় ভয়াবহ বিতর্কে, যা দু’জন ক্রিকেটারের কেরিয়ারেই এনে দেয় বড় ধাক্কা। সমালোচনার ঝড় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, শেষ পর্যন্ত ওই পর্ব-ই তুলে নিতে হয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম থেকে।

 

এরপর ছ’বছর কেটে গেছে, তবু সেই বিতর্কের আঁচ আজও টের পান শো-হোস্ট করণ জোহর। সম্প্রতি টেনিস তারকা সানিয়া মির্জার সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে করণ খোলামেলা জানালেন, “হার্দিক-রাহুল ঘটনার পর থেকে আর কোনও ক্রিকেটারকে শো-তে ডাকিনি, বিরাট কোহলিকেও না। ওর নাম পর্যন্ত কোনওদিন বলিনি।”

 

সানিয়া যখন জানতে চান, এমন কোনও তারকা আছেন কি, যিনি বারবার আমন্ত্রণ পেলেও আসতে রাজি নন? করণ হাসতে হাসতে বলেন, “রণবীর কাপুর! তিনবার এসেছে, কিন্তু এই শো-এর শেষ তিন সিজনে একেবারেই আসতে চায়নি ও।” এরপর সানিয়া যখন বিরাট কোহলির প্রসঙ্গ তোলেন, করণ স্পষ্ট বলেন, “ওকে কখনও বলিনি আসতে, কারণ হার্দিক-রাহুলের সেই ঘটনার পর থেকে ক্রিকেটারদের নিয়ে আর ঘাঁটাইনি আমি।”

 

২০১৯ সালের সেই পর্বেই হার্দিক পাণ্ডিয়া এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন, যা মুহূর্তে আগুন লাগায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। কফি উইথ করণ-এর ওই পর্বে তাঁকে কখনও বলেন, “মহিলাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করতে শিখেছি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের থেকে,” আবার এক জায়গায় গর্ব ভরে শোনান, “আমি যখন কুমারত্ব হারালাম, মা-বাবাকে বলেছিলাম,' আজ এই কাণ্ডটা করেই এসেছি আমি!” এমনকি আরও দাবি করেন, পার্টিতে যেসব মেয়েদের দেখিয়ে বলেছিলেন, “ওদের সবার সঙ্গে আমার ‘ইতিহাস’ আছে,” তাতে নাকি পরিবার গর্বিতই হয়েছিল!

 

এই মন্তব্যের পর নড়ে বসে বিসিসিআই। হার্দিক ও রাহুলের বিরুদ্ধে ওঠে অসদাচরণের অভিযোগ। দু’জনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয় ভারতীয় ক্রিকেট দল থেকে, বাতিল করা হয় একাধিক ম্যাচ থেকেও। পরে হার্দিক ইনস্টাগ্রামে ক্ষমা চেয়ে লেখেন, “শো-এর মেজাজে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।” তবে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছিল ততক্ষণে। দলের তৎকালীন অধিনায়ক বিরাট কোহলি প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, “ওরা যা বলেছে, তা পুরোপুরি ব্যক্তিগত মত। ভারতীয় দল এই মন্তব্যকে কোনওভাবেই সমর্থন করে না।”

সেই পর থেকেই করণ জোহর বুঝেছেন- ক্রিকেট আর ‘কফি’ একসঙ্গে মেশানো মানেই ঝুঁকি!