সংবাদ সংস্থা মুম্বই: ‘সর্দারজি ৩’ ছবিতে পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরকে কাস্ট করে চূড়ান্ত বিতর্কে পড়েছেন পাঞ্জাবি গায়ক-অভিনেতা দিলজিৎ দোসাঞ্জ। এই বিতর্কে এবার মুখ খুললেন কঙ্গনা রানাওয়াত। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনার স্পষ্ট মন্তব্য, “কাউকে কাউকে দেখলে মনে হয়, ওদের নিজস্ব মতলব আছে!”
কঙ্গনার মতে, “দেশ গড়ার কাজে আমরা সবাই অংশীদার। একজন সৈনিক, একজন রাজনীতিবিদ, একজন তারকা — প্রত্যেকেরই দেশপ্রেমের আলাদা পথ থাকতে পারে। কিন্তু লক্ষ্য হওয়া উচিত একটাই — দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এটা তো শুধু সেনার দায়িত্ব নয়!” তিনি আরও বলেন, “দেখুন, কেউ সৈনিক হয়ে নিজের পথ নিচ্ছেন, কেউ রাজনীতির ময়দানে সেই পথ নিচ্ছেন। আর কেউ কেউ আছেন, যাদের হয়তো নিজের কোনও অ্যাজেন্ডা আছে। আমি বলছি না এটা অস্বাভাবিক, কিন্তু সবাইকে একটা চিন্তার মধ্যে আনার চেষ্টা করা উচিত। এবং সেটা হবে যদি এই ভাবনাটা রাজনীতিকদের মধ্যে ঢোকানো যায়। এটাই তাদের কাজ।”

এই বিতর্ককে আরও তীব্র করে তুলেছে সাম্প্রতিক কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানা। গত ২২ এপ্রিল ওই হামলার পরে ভারত ৭ মে চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে আঘাত হানে ভারতীয় বায়ুসেনা। এর পরেই ভারতে নিষিদ্ধ হয় পাকিস্তানি শিল্পীদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট — ফাওয়াদ খান, মাহিরা খান, আলি জাফর, আতিফ আসলাম, রাহাত ফতেহ আলি খান এবং হানিয়া আমিরের মতো তারকারা রয়েছেন এই তালিকায়।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি শিল্পীর সঙ্গে দিলজিতের কাজ করাকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না অনেক ভারতীয় তারকা ও দর্শক। জাভেদ আখতার, মিকা সিং সহ অনেকে ইতিমধ্যেই এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন। উল্লেখ্য, ২৭ জুন বিদেশে মুক্তি পেয়েছে ‘সর্দারজি ৩’। ছবিতে দিলজিৎ ও হানিয়ার পাশাপাশি আছেন নীরু বাজওয়া, গুলশন গ্রোভার ও সপনা পব্বিও। পরিচালনায় অমর হুন্ডাল।
প্রশ্ন উঠছে—এই মুহূর্তে হানিয়া আমিরকে কাস্ট করার সিদ্ধান্তটা কি সত্যিই সঠিক ছিল? না কি এ এক সচেতন রাজনৈতিক বার্তা?
আরও পড়ুন: এবার প্রধানমন্ত্রী হতে চান কঙ্গনা রানাওয়াত? নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে বড় ঘোষণা অভিনেত্রীর!
প্রসঙ্গত, ‘ইমার্জেন্সি’ ছবিতে ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকায় নজরকাড়া পারফরম্যান্স, আর বাস্তবে এখন সংসদে বিজেপি সাংসদ—এই দুই মেরুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে কঙ্গনা রানাউত নিজের রাজনৈতিক জীবনের রূপরেখা বেশ স্পষ্ট করেই টেনে দিলেন। ২০২৪ সালের জুনে মাণ্ডি থেকে লোকসভায় জিতে সাংসদ হয়েছেন কঙ্গনা। তারও আগে একাধিকবার নানা জাতীয় ইস্যুতে সরব হয়েছেন, কিন্তু রাজনীতির বাস্তবতা তাঁকে শুধুই হতবাক নয়, হয়রান-ও করেছে। তবে এর পাশাপাশি কঙ্গনার মনে কি ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে জেগেছে? কঙ্গনা অকপটে বলেন— “প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মতো যোগ্যতা আমার নেই। ইচ্ছেও নেই।আমি বরং বড় গাড়ি, হিরে, বড় বাড়ি চাই। সুন্দর দেখতে চাই। আমি স্বার্থপরভাবে বাঁচতে চেয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “রাজনীতি একটা সামাজিক সেবা, আর আমি আগে কখনও এই পথে হাঁটিনি। অনেকে আমাকে এসে বলছেন নালি-ভাঙা রাস্তায় সমস্যা। আমি বলছি, এটা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। তখন বলছে—আপনার নিজের টাকায় সারান!”
এইমুহূর্তে, সিনেমার পর্দায় তিনি আবার ফিরছেন ‘তনু ওয়েডস মনু’-খ্যাত সহ-অভিনেতা আর. মাধবনের সঙ্গে একটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে। রাজনীতি নয়, আপাতত ক্যামেরার লেন্সেই কঙ্গনার মন পড়ে আছে—সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট!
