অতীতের ভুলে কটাক্ষে জর্জরিত ম্রুণাল ঠাকুর। বেশ কয়েক বছর আগে বিপাশা বসুর চেহারা নিয়ে কটূক্তি করে বসেছিলেন অভিনেত্রী। বলেছিলেন, “তুমি কি এমন মেয়েকে বিয়ে করবে, যার মধ্যে পৌরুষ বেশি রয়েছে, যার শরীর সাজানো থরে থরে মাংসপেশিতে? তাহলে গিয়ে বিয়ে করো বিপাশাকে। শোনো, আমি বিপাশার চেয়ে অনেক ভাল! ঠিক আছে?” সম্প্রতি সেই ভিডিও ফের ঘুরপাক খেতে থাকে নেটমাধ্যমে। আর তখনই ‘বডি শেমিং’ করার জেরে কাঠগড়ায় তোলা হয় ম্রুণালকে। ইতিমধ্যেই একটি বিবৃতি জারি করে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।

এবার ম্রুণালের পাশে দাঁড়ালেন অভিনেত্রী হিনা খান। সহকর্মীকে সমর্থন করে ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘জ্ঞান হলো জ্ঞানবৃক্ষের ফল, যার মূলে রয়েছে অভিজ্ঞতা। আমাদের সামাজিক দক্ষতা, ভাব প্রকাশের ক্ষমতা এবং বোঝাপড়ার গভীরতা কেবল সময়ের সঙ্গেই তৈরি হয়। আমরা সকলেই ভুল করি, বিশেষ করে যখন আমাদের বয়স কম থাকে। ম্রুণালের অবস্থাটা আমি খুব ভাল ভাবে বুঝতে পারছি। অতীতে আমিও এমন বাজে ভুল করেছি। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ তা সামলানোর দক্ষতা ছাড়াই অনেক একটা বৃহত্তর পরিসরে চলে আসি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে আমরা বিকশিত হই, আমরা আরও নমনীয় হই, সহানুভূতিশীল হই। আমরা একে অপরের আরও উন্নতি সাধন শিখি.. একে অপরের মুকুট ঠিক করতে শিখি।’

এখানেই থামেননি হিনা। বিপাশা এবং ম্রুণালের প্রশংসা করে লেখেন, ‘আপনাদের মতোই  আমিও ইন্ডাস্ট্রিতে বিপাশা এবং ম্রুণালের অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা প্রত্যক্ষ করেছি... দু’জনেই অসাধারণ, এবং বিপাশা সকলের জন্য একজন আইকন। আমি খুব খুশি এবং গর্বিত যে ম্রুণাল তাঁর অতীতের ভুল স্বীকার করতে পেরেছেন, যার অস্তিত্ব এখন আর নেই।’

অতীতের ভুলের জন্য ম্রুণালকে যেন আর কটাক্ষবাণে আহত না করা হয়, সকলের কাছে এই অনুরোধই করেছেন হিনা। তিনি লেখেন, ‘ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের চেহারা বদলে দেওয়া এই দুই অসাধারণ নারীর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। এবং বিপাশা তোমার পেশী আমি এবং ম্রুণাল-সহ এক প্রজন্মের নারীদের অনুপ্রাণিত করেছে। বিপাশা এবং ম্রুণাল উভয়ের জন্যই অনেক ভালবাসা, এখন কি আমরা এই সার্কাস বন্ধ করতে পারি? আসুন ভালবাসা ছড়িয়ে দিই এবং সদয় হই। আসুন আমরা আমাদের মতামতের পার্থক্যকে স্বীকার করে নিয়ে অন্যদের আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করি।’

বিপাশার কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করে ম্রুণাল লেখেন, ‘১৯ বছর বয়সি আমি অনেক অপরিণত কথা বলেছি। তখন বুঝতে পারিনি আমার কথার প্রভাব কতটা গভীর হতে পারে। আমার উদ্দেশ্য কখনও কাউকে বডি–শেম করা ছিল না। মজা করার ছলে যা বলেছিলাম, তা ভুলভাবে পৌঁছে গিয়েছে এবং মানুষকে আঘাত দিয়েছে। এজন্য আমি গভীরভাবে দুঃখিত।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘এখন আমি উপলব্ধি করেছি সৌন্দর্য সব ধরনের শরীর এবং আকারে বিরাজ করে। সেই সময় যদি অন্য ভাবে কথা বলতাম, তাহলে এত অসুবিধা হতো না।” যদিও ম্রুণালের এই ক্ষমা প্রার্থনা কিছু অনুরাগীদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিন্তু অনেকেই আবার বলেছেন, তিনি সরাসরি বিপাশা বসুর নাম উল্লেখ করেননি এবং ক্ষমাটা ‘খুবই জোর করে বলা’ মনে হয়েছে। যদিও এর প্রতিক্রিয়া আসেনি অভিনেত্রীর পক্ষ থেকে।