ভারতীয় বিনোদন জগতের অন্যতম দক্ অভিনেতা সতীশ শাহকে মরণোত্তর পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়ার দাবি জানাল ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ (এফডব্লিউআইসিই)। সংগঠনটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে এক আবেগপূর্ণ চিঠি পাঠিয়ে এই আবেদন জানিয়েছে।

মঙ্গলবার পাঠানো সেই চিঠিতে সংগঠনটি লিখেছে, ‘অগাধ শ্রদ্ধা এবং বিনয়ের সঙ্গে আমরা — ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ (এফডব্লিউআইসিই), যা ভারতের চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও ডিজিটাল জগতের ৩৬টি সংযুক্ত সংগঠন ও হাজার হাজার কর্মীর প্রতিনিধিত্ব করে— প্রধানমন্ত্রী মহাশয়ের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি যে প্রয়াত অভিনেতা শ্রী সতীশ শাহকে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মরণোত্তর পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রদান করা হোক।’

চিঠিতে সতীশ শাহকে বর্ণনা করা হয়েছে ‘একজন বিরল প্রতিভাধর শিল্পী’ হিসাবে, যাঁর অভিনয় কোটি কোটি দর্শকের মুখে হাসি, আনন্দ এবং মনে আবেগ এনে দিয়েছে।

এফডব্লিউআইসিই জানিয়েছে, সতীশের বহুমুখী প্রতিভা, তীক্ষ্ণ রসবোধ, উদার ব্যক্তিত্ব এবং মানবিকতা তাঁকে ভারতীয় বিনোদন জগতের সবচেয়ে প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় মুখগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছিল। সহকর্মীদের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা নিয়ে আলোচনা হয় আজও।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘তিনি শুধু একজন অসাধারণ অভিনেতাই ছিলেন না, বরং সহশিল্পী, প্রযুক্তিবিদ ও পুরো ইন্ডাস্ট্রির প্রতি ছিলেন গভীরভাবে সহানুভূতিশীল ও উৎসাহদাতা। এফডব্লিউআইসিই-এর বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচিতে তিনি উদারতা ও সৌজন্যের সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর প্রয়াণে আমাদের হৃদয়ে এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে।’

সংগঠনটির মতে, সতীশকে মরণোত্তর পদ্মশ্রী প্রদান করা হবে একজন শিল্পী  মানুষ হিসাবে তাঁর অবদানের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাঞ্জলি। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি ভারতীয় দর্শকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন এবং অসংখ্য তরুণ শিল্পীকে তাঁদের স্বপ্ন অনুসরণে অনুপ্রাণিত করেছেন।
সতীশ ‘জানে ভি দো ইয়ারো’, ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’, ‘ম্যায় হুঁ না’, ‘ওম শান্তি ওম’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমা এবং ধারাবাহিকে তাঁর অনবদ্য অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মনে অমর হয়ে আছেন।

৭৪ বছর বয়সে তিনি মুম্বই শহরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ভিলে পার্লে পশ্চিমের পবন হান্স শ্মশানে। বিনোদন জগতের বহু অভিনেতা, সহকর্মী ও বন্ধুরা উপস্থিত থেকে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। প্রয়াত অভিনেতা রেখে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী, পোশাক ডিজাইনার মধু শাহকে।

সতীশের মৃত্যুর পর তাঁর সহঅভিনেতা রত্না পাঠক শাহ, সুমিত রাঘবন, ও নির্মাতা আতীশ কাপাডিয়া সামাজিক মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘ওঁর উপস্থিতিতেই সেটের পরিবেশ প্রাণবন্ত হয়ে উঠত। এমন মানুষ একবারই জন্ম নেন।’ বলিউড থেকে সাধারণ দর্শক- সকলেই বলছেন, সতীশ শাহ ছিলেন হাস্যরসের এক জীবন্ত পাঠশালা। তাঁর সহজ অভিনয় ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপের স্মৃতি চিরকাল রয়ে যাবে দর্শকের হৃদয়ে। কিংবদন্তি এই অভিনেতাকে মুম্বইয়ের বাসভবনে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন তাঁর সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব, ও অসংখ্য অনুরাগী।