প্রথম ছবি সুপারহিট। তারপরেও অভিনেতা হিসাবে জায়গা পাওয়াটা সহজ ছিল না।  অ্যামাজন প্রাইম–এর 'গেমারলোগ'- এর হাত ধরে আবার চর্চায় দর্শিল সাফারি। ১৮ বছরে কতটা এগোতে পারলেন? কেরিয়ারের রোডম্যাপ নিয়ে অকপট অভিনেতা। শুনলেন শ্যামশ্রী সাহা

কেমন আছেন দর্শিল?

খুব ভাল। 


‘তারে জমিন পর’ থেকে ‘গেমারলোগ’, জার্নিটা কেমন?

একেবারে রোলার কোস্টারের মতো। অনেক কিছু শিখছি। অভি়জ্ঞতাও বেড়েছে। আসলে কী জানেন তো, একটা সহজ ব্যাপার বুঝে গিয়েছি। অভিনেতা হতে গেলে আমি ইন্ডাস্ট্রির বাইরের না ভেতরের, আমার স্বপ্নপূরণ হচ্ছে কি না, আমি কী কাজ করছি, এগুলো আসল নয়, মোদ্দা কথাটা হল, যখন যে চরিত্রের জন্য ডাক পড়বে তৈরি আছি কিনা। সব রকমের চরিত্রের জন্য নিজেকে তৈরি রাখা।

‘গেমারলোগ’-এর রঘু শাহ ঠিক কেমন?

রঘুর বয়স ১৭ বছর। বাড়িতে পড়াশোনা নিয়ে ভীষণ চাপ। বাবা-মার ইচ্ছে তাকে ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। কিন্তু রঘুর পছন্দ গেমিং। গেম ছাড়া আর কিছুই মনে থাকে না। তখন রঘু, রাজা। ওর স্বপ্ন গেমার হওয়া কিন্তু বাবা মাকে কী করে বোঝাবে, ঠিক এই সময় গেমারলোগ গ্যাং-এর সঙ্গে দেখা হয়। যারা ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে একটা বড় কম্পিটিশন-এ অংশ নেবে বলে। একটা সাধারণ ছেলের গেমার হয়ে ওঠার গল্প। আমার খুব ইউনিক মনে হয়েছে। 

 

আরও পড়ুন: স্ত্রী মান্যতার জন্মদিনে কেন তাঁকে ‘মা’ বলে ডেকে উঠলেন সঞ্জয় দত্ত? কারণ বুঝতে পেরে চোখ ভিজে গেল ভক্তদের!

 

নিজেও তো ভিডিও গেম খেলেন, অ্যাডিকটেড বলা যায়?

হ্যাঁ। খেলি। তবে অ্যাডিকটেড নই। এখন দাবায় বেশি মন দিয়েছি। যারা ভিডিও গেম ভালবাসেন তাঁদের একটা কথাই বলব, অনেক সময় নষ্ট হয়। ব্রেনে চাপ পড়ে। কানেকশন বাড়াও অ্যাডিকশন কমে যাবে।

ছোট্ট ঈশানকে তো নিজেকে গ্রুম করতে হয়েছে?

এই ব্যাপারটা কখনও মাথাতেই আসেনি। জানেন আমাকে রেকলেস, ইরেসপনসিবল কথাটা প্রায়ই শুনতে হয়, ব্রান্ডেড জামাকাপড় পরব, শো-অফ করব, কখনও ভাবি না। জাঙ্ক ফুডও খাই। তবে ঘুমের ব্যাপারে আমি খুব সচেতন।

দর্শিলের ঈশান হয়ে ওঠার গল্পটা কেমন ছিল?

তখন তো খুব ছোট ছিলাম। অভিনয়ের কোনও ট্রেনিং ছিল না। ভাল স্ক্রিপ্ট, ভাল চরিত্র নিয়ে কোনও ভাবনা-চিন্তাও ছিল না। শুধু এটুকুই বুঝতে পেরেছিলাম, আমি আমির খান-এর প্রোডাকশন হাউজে আমির খান-এর সঙ্গে অভিনয় করব। ছবির আগে কোনও ওয়ার্কশপও হয়নি। তারপর ছবি রিলিজ হল। দর্শক ঈশানকে পছন্দও করলেন। আমি একটা ব্রেক নিয়ে থিয়েটার জয়েন করলাম। সেখান থেকেই অভিনয় কী বুঝলাম। স্ক্রিপ্ট, ক্যারেকটার বুঝলাম। ২০২১-এ আবার কাজ শুরু করলাম। এখন আমি গল্প, চরিত্র দেখে সিদ্ধান্ত নিই।

এখনও আপনি এমন কোনও চরিত্র পাননি যা ঈশান অবস্তিকে ছাপিয়ে যায়, কতটা চাপের?

প্রথমে বেশ চাপ লাগত। এখন আর এটা ভাবিনা। এই চাপটাই এখন উৎসাহ দেয়। নিজেকে মনে করাই আবার ওই লেভেল-এ পৌঁছতে হবে। এর জন্য আরও পরিশ্রম করতে হবে। আশা করি পৌঁছতে পারব। 

এখন দর্শিল কেমন চরিত্র করতে চান?

এমন একটা চরিত্র যা দর্শক সারাজীবন মনে রাখবেন, ভালবাসবেন। তবে তারপরও আমি থামব না। কাজ করে যাব।

ছবির হিরো হতে চান না?

একটা ভাল গল্পের ছবির চরিত্র কাজ করতে চাই। আগামী দিনে দুটো ছবি রিলিজ করবে। সেখানেও দেখবেন আমার চরিত্রটা বড় নয়। কাজ করেছি কারণ ওই অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি ওই গল্পের সঙ্গে জুড়তে চেয়েছি। ‘গেমারলোগ’ আমাকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে। এভাবে কাজ করতে পারলে খুব তাড়াতাড়ি দর্শিল হিরো হয়ে যাবে। 
 
আমির খান প্রোডাকশন হাউজ- এর আর কোনও ছবিতে আপনাকে দেখা যায়নি

না। কাজের জন্য আর ডাক আসেনি। কিন্তু আমিরজির সঙ্গে কথা হয়। আমার করার মতো কোনও চরিত্র থাকলে ডাক পাবই।
 
বলিউড ইন্ডাস্ট্রিকে কতটা চিনতে পারলেন?

আমি চিনতে চাই না। এসব ভাবা মানে চাপ বাড়ানো। উপরে নিচে, আগে পিছে কী আছে আমি দেখিনা। আমি ভাল কাজ করতে পারছি কিনা,সেটাই দেখি। গত দু’বছরে এটাই আমার লেসন। কাজ করতে ভালবাসি, পরিশ্রম করতে পারি। 

অভিনেতা না হলে কী করতেন?

ক্রিয়েটিভ কিছু করতাম।‌