ছকে বাঁধা নয়, চেনা ছক ভাঙতেই ভাল লাগে। দেবাদৃতা বসুর চরিত্রের কোলাজে তাই সাদা-কালো দুই-ই আছে। আলোর পথ ধরে জয়ী হতে চান। আর কী স্বপ্ন দেখেন অভিনেত্রী? শুনলেন শ্যামশ্রী সাহা
কেমন আছেন?
খুব ভাল আছি।
আর নীলাঞ্জনা?
নীলুর জীবনে রাইয়ের জন্য অনেক সমস্যা। তাই নীলু খুব একটা ভাল নেই। নেগেটিভ হয়ে গিয়েছে।
আপনি হঠাৎ নেগেটিভ ক্যারেক্টার বেছে নিলেন কেন?
‘মিঠিঝোরা’য় নীলাঞ্জনার ক্যারেক্টার নেগেটিভ হলেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে ‘জয়ী’, ‘আলোছায়া’য় আপনি নায়িকা ছিলেন এবার খলনায়িকা কেরিয়ারের প্রথমদিকে এই রিস্কটা কেন নিলেন?
দেখুন, নীলুর চরিত্রটা আমার কাছে লিডরোলের মতোই মনে হয়েছে। এখানে গল্পটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, অভিনেতা অভিনেত্রীরা কিছুটা পাবলিক সারভেন্টের মতো। একটা দায়িত্ব থাকে নিজের অভিনয় প্রতিভা দর্শককে বোঝানোর। সেই কারণেই বিভিন্ন চরিত্রে কাজ করা উচিত। পরে আবার নায়িকার চরিত্রেও কাজ করব। নেগেটিভ চরিত্রে সফল হলে বারবার একই ধরনের চরিত্রের অফার আসতে পারে, টাইপকাস্ট হওয়ার ভয় আমার নেই।
একটা মিষ্টি মেয়ে হঠাৎ এতটা নেগেটিভ হয়ে গেল, আপনার ফ্যানরা মানতে পেরেছে?
নীলাঞ্জনা পরিস্থিতির শিকার। তাই তাকে এমন কিছু কাজ করতে হয়, যেটা অন্যের চোখে খারাপ।আমার ফ্যানরা নীলুর চরিত্রেও আমাকে মেনে নিয়েছে। কেউ আবার বলেন তোমাকে এইরকম চরিত্রে আমরা দেখতে পারছি না। মানে আমি চরিত্রটাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে তুলতে পেরেছি।এটাই আমার প্রাপ্তি।
‘জয়ী’তে আপনি একজন ফুটবলার, আপনার দাদু প্রখ্যাত ফুটবলার বিদেশ বসু। দাদুর খেলা দেখতেন?
না। ফুটবল আমার পছন্দের খেলা নয়।বাড়িতে টেলিভিশনে দাদুর খেলা দেখেছি। উনি খুব মজার মানুষ ছিলেন। ওঁর সঙ্গে ফুটবল নিয়ে কখনও কথা হয়নি। ‘জয়ী’তে কাজ করার সময় বাবা আর সুজাতা কর(ফুটবল কোচ)খুব সাহায্য করেছিলেন।
থিয়েটার থেকে অভিনয় জীবন শুরু, আপনার বাবাও একজন মঞ্চশিল্পী। অভিনয় ছাড়া আর কী শিখলেন মঞ্চ থেকে?
‘ইগো ইস দ্য এন্ড অফ এভরিথিং’। থিয়েটারে সবাই সমান। কে বড়মাপের অভিনেতা বা কে ছোট অভিনেতা এই বিভেদটা নেই। অন্তত আমার দলে দেখিনি। আমি খুব বড়মাপের অভিনেতা এটা যখন মনে আসবে তখনই তাঁর অভিনয়জীবন শেষ।
আর টেলিভিশনে?
খুব যে একটা সমস্যা হয়েছে তা নয়। আমার প্রথম কো-অ্যাক্টর ছিলেন পার্থসারথি দেব উনি এত ভাল মানুষ, কখনও বুঝতেই পারিনি আমি এই জগতে নতুন।
ভাল সুযোগ পেতে কোনও স্ট্রাগল করতে হয়নি?
না তাও নয়। ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই তো সমান নয়। মনে আছে ‘জয়ী’র প্রথমদিকের শুটিং-এর ঘটনা। নাম বলছি না, সিন-এর সময় একটা সংলাপ আটকে যাচ্ছিল, তখন ওই অভিনেতা বলেছিলেন, ‘’কোথা থেকে এরা আসে কে জানে কিছু পারে না...।‘’ কষ্ট পেয়েছিলাম। ওখান থেকে একটা জেদ হয়ে গিয়েছিল। সেদিন ওভাবে বলেছিলেন বলেই আজ আমি এখানে পৌঁছতে পেরেছি।
নীলাঞ্জনাকে দেখে তোমার বোন দেবপ্রিয়া কী বলছে? ও তো এখন অভিনয় জগতে?
হ্যাঁ খুব ভাল কাজ করছে। বোন আমার ফ্যান। ছোটবেলা থেকেই দিদির জন্য গর্বিত। কাজের জন্য আমি আর বাবা কলকাতায় চলে আসি। মা আর বোন চাকদাতেই থাকত। এখন তো সবাই কলকাতায় একসঙ্গে থাকি। বোনও থিয়েটার করত। তারপর তো ধারাবাহিকে সুযোগ পেয়ে যায়। ওর কাছে ওর দিদিভাই ‘সুপার উওম্যান’।
আপনার কথ্থকের প্র্যাকটিস কেমন চলছে?
ভাল। নাচ আমি ছাড়তে পারব না। নাচ নিয়ে পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছি।
দেবাদৃতা কোন ধরনের চরিত্রে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন?
‘জয়ী’, ‘নীলাঞ্জনা’ আমার খুব পছন্দের চরিত্র। আর কোন চরিত্রে কাজ করার স্বপ্ন দেখি সেটা বলতে হলে বলব, ঋতুপর্ণ ঘোষ আমার প্রিয় পরিচালক। ওঁর ‘চোখের বালি’ অসাধারণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প বা উপন্যাসের প্রধান নারী চরিত্রে কাজ করতে চাই। এখনও সেই সুযোগ পাইনি।
‘মিঠিঝোরা’র পর কী?
এখনও কিছু ঠিক করিনি। সিরিজ বা ছবির অফার পেয়েছি, কিন্তু ভাগ্য খারাপ। কনট্রাক্টে ছিলাম।করতে পারিনি। সিরিজে কাজ করার প্ল্যান আছে।
রাহুল বা আপনি সম্পর্ক নিয়ে কোনও লুকোছাপা করেননি, কীভাবে প্রেমে পড়লেন?
‘আলোর ঠিকানা’য় আমরা লিডরোলে ছিলাম। শুটিংয়ের মাঝে ওর সঙ্গে গল্প আড্ডা হত। সেখান থেকেই শুরু।
বিয়ে কবে করছেন?
বিয়ে ছাড়াই তো আমরা ভাল আছি। ঘুরে বেড়াচ্ছি, ভাল সময় কাটাচ্ছি। আবার বিয়ে, উফফ। যখন বিয়ে করব সবাইকে জানাবো।
