শনিবার সকালে এক অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা। দীর্ঘ ১৪ বছর পর কলকাতায় এসেছিলেন লিওনেল মেসি। তাঁকে এক ঝলক দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। কিন্তু বেলা বাড়তেই সেই উচ্ছ্বাস পরিণত হয় রাগ, ক্ষোভে। এদিন মাঠে ছেলেকে নিয়ে হাজির ছিলেন গায়ক, পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। কী অভিজ্ঞতা হল তাঁর লিওনেল মেসির 'দ্য গোট ইন্ডিয়া ট্যুর'-এর কলকাতা ইভেন্টে জানালেন আজকাল ডট ইন-কে।
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এদিন জানান তিনি, তাঁর ছেলে দু'জনেই হতাশ। বলেন, "আমন্ত্রণে গিয়েছিলাম। হসপিটালিটি বক্সে ছিলাম। ছেলের জন্যই মূলত যাওয়া, জুজু তো মেসির ভীষণ ভক্ত। যে বাচ্চারা গেছে তাদের একটা বড় হতাশা যে ওঁকে আলাদা দেখা যায়নি। মানে মেসি যখন থেকে মাঠে এসেছেন, তখন থেকেই সবার একটা প্রত্যাশা ছিল যে উনি একবার অন্তত একা দাঁড়াবেন। একা দাঁড়ানোটা হলে সবার মনে হতো যে হ্যাঁ, মেসিকে দেখতে পেলাম। কিন্তু ওঁকে সকলে যেভাবে ঘিরে ছিল, তাতে অনেকের মনে হয়েছে যে আরও একটু দেখতে পেলে ভাল হতো।"
যে বিশৃংখলা তৈরি হয়েছিল, সেটারও সাক্ষী ছিলেন অনিন্দ্য। অভিজ্ঞতা ভাগ করে বলেন, "লোকজন জলের বোতল ছুঁড়ছিল। যাঁরা মেসিকে দেখতে এসেছিলেন সবারই এখানে একটা আবেগের ব্যাপার ছিল। অনেক টাকার টিকিট কেটে সকলে এসেছিলেন। মেসি খেলবেন এটা কেউই আশা করেননি। আন্তর্জাতিক একজন খেলোয়াড়ের এভাবে খেলা এত সহজ নয়। কিন্তু, তিনি একটা যদি বল ড্রপ খাওয়াতেন সেটাই একটা বড় ব্যাপার হতো। মেসির হাতে ফুটবল বা মেসির পায়ে বল এটুকু যদি দেখতে পারতাম তাহলেই আমাদের সবার স্বপ্ন সার্থক হতো।"
প্রসঙ্গত, ১৩ ডিসেম্বর, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ হোটেল থেকে ভার্চুয়ালি লেকটাউনের ৭০ ফিটের মূর্তি উদ্বোধন করে যুবভারতী আসেন মেসি। কিন্তু মাত্র মিনিট ১৫-২০ এর মধ্যেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাঁকে দেখতে না পাওয়ায় রাগ, ক্ষোভে মাঠে জলের বোতল, চেয়ার ছুঁড়তে থাকেন দর্শকরা। পরবর্তীতে মাঠে নেমে তাঁরা অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা শামিয়ানায় আগুন ধরিয়ে দেন। যদিও তৎপরতার সঙ্গে সেটা নিভিয়ে দেওয়া হয়। বিশৃংখলা তৈরি হওয়ায় মেসি চলে যান। আসেননি শাহরুখ খান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই শহর ছাড়েন লিওনেল মেসি।
দ্য গোট ইন্ডিয়া ট্যুরে তিনি আরও তিনটি শহরে যাবেন। এদিন তিনি হায়দরাবাদ উড়ে গেলেন। এরপর যাবেন মুম্বই এবং দিল্লি। কিন্তু তাঁর সফরের প্রথম দিনই যে ঘটনা ঘটল তাতে যারপরনাই হতাশ, ক্ষুব্ধ ফুটবল প্রেমীরা।
