জি বাংলা-র 'চিরদিনই তুমি যে আমার' ধারাবাহিক নিয়ে বিতর্ক যেন শেষ হচ্ছে না। এবার ধারাবাহিক ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়! আর্টিস্ট ফোরামের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন অভিনেত্রী। আর্টিস্ট ফোরামকে ইমেল করে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন দিতিপ্রিয়া নিজেই।

 


গতকাল বেশ কিছু সময় ধরে কনফারেন্স কলে দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে মিটিং করেন ফোরামের সদস্যরা। আজ সকালে একটি বিশেষ বিবৃতির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানালা আর্টিস্ট ফোরাম। কারণ হিসেবে প্রিয়া জানিয়েছেন মানসিক এবং শারীরিক অসুস্থতা। সম্ভবত সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে দিতিপ্রিয়াকে নিয়ে কটাক্ষ এবং বাজে কথা মেনে নিতে পারেননি অভিনেত্রী। অভিনেতা জিতু কামাল ধারাবাহিক ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিলেও পরে চ্যানেলের হস্তক্ষেপে আবার ধারাবাহিক শুরু করেন তিনি। তবে জিতু কমল ধারাবাহিকে যোগদানের পরই জানা যায়, মহিলা কমিশন এবং আর্টিস্ট ফোরামের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়। কারণ হিসেবে যদিও তেমন ভাবে কিছু জানাননি।এই ক্ষেত্রেও কারোর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনেননি দিতিপ্রিয়া, বরং বলেছেন নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। আর্টিস্ট ফোরাম থেকে জানানো হয়েছে, অন্য শিল্পী এবং কলাকুশলীদের স্বার্থে প্রথম দিকে দিতিপ্রিয়াকে দু মাসের নোটিশ দিয়ে ধারাবাহিক ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তবে দিতিপ্রিয়া শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতার কথা মাথায় রেখে দু মাসের পরিবর্তে সেটা ১৫ দিন করা হয়েছে। এবং সেই ১৫ দিন কাজ করার সিদ্ধান্তের সম্মতি জানিয়েছেন দিতিপ্রিয়া। 

 


গতকাল এই বিষয়ে মেল আসার কথা থাকলেও তা আসেনি তবে আজ সকালে মেইল করে জানিয়েছেন দিতিপ্রিয়া রায়। যেহেতু অসুস্থতার কথা সকলকে জানিয়েছেন দিতিপ্রিয়া তাই এই ক্ষেত্রে অভিনেত্রীকে জোরাজুরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর্টিস্ট ফোরাম। অর্থাৎ এই কয়েকদিনের মধ্যে নতুন অভিনেত্রীকে খোঁজার কাজ চলবে যদিও দিতিপ্রিয়ার জায়গায় শোনা গেছে দেখা যেতে পারে অভিনেত্রী প্রত্যুষাকে। এই বিষয়ে প্রত্যুষার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে এই ধারাবাহিককে আর খুব বেশিদিন দেখা যাবে না অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়-কে। 

 

যদিও এক সময় জিতুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন এই অভিনেত্রী, তবে ধারাবাহিক ছাড়ার ক্ষেত্রে নিজের অসুস্থতার কথাই জানিয়েছেন দিতিপ্রিয়া। একথাও সত্যি যে সামাজিক মাধ্যমে দিতিপ্রিয়া কে নানান ভাবে হেনস্থা করা হয়, যা অভিনেত্রীর জন্য প্রথমবার। তাই হয়তো এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন দিতিপ্রিয়া। এই ক্ষেত্রে অনেকেই ভাবছেন হয়তো ধারাবাহিক ১৫ দিনের মধ্যেই শেষ করে দেওয়া হতে পারে। তবে আর্টিস্ট ফোরাম থেকে জানানো হয়েছে, ধারাবাহিকের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য শিল্পী এবং কলাকুশলীদের কথাও যেন মাথায় রাখা হয় কারণ একটি ধারাবাহিকের ওপর বহু শিল্পী ও কলাকুশলীদের আর্থিক সংস্থান নির্ভর করে। 

 

জিতু কামাল ফিরে আসার পর অনেকেই একটু স্বস্তি পেয়েছিলেন, যদিও ধারাবাহিকে আবার যেদিন কাজ শুরু করেন জিতু, সেদিন লাইভে এসে তিনি জানিয়েছিলেন কিভাবে একসঙ্গে কাজ হবে তা তিনি বুঝতে পারছেন না, বিষয়টা তার কাছে এখনো ধোঁয়াশা। শেষ কয়েকদিন দুজনে একসঙ্গে শট দেননি জিতু এবং দিতিপ্রিয়া। তার দর্শকেরা খুব সহজেই বুঝতে পারেন, স্থানীয় সামাজিক মাধ্যমে একাধিকবার লেখালেখি হয়। কারণ দিতিপ্রিয়া নাকি বলেছিলেন তাঁর গায়ে যেন হাত না দেন জিতু, সেই কারণে অপমানিত হয়ে ধারাবাহিক ছাড়া সিদ্ধান্ত নেন জিতু কমল। তবে তিনি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেও আবার নতুন করে সমস্যার শুরু হয়েছে। অন্যান্য ধারাবাহিকের ক্ষেত্রেও নায়ক নায়িকার মধ্যে বিভিন্ন সময় বিরোধ দেখা গেছে, এমনকি দেখাদেখি বন্ধ থাকলেও শটের সময় তা বুঝতেই পারেননি দর্শক। এই ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে যে এভাবে শটেরবাইরে বেরিয়ে আসবে তা ভাবতে পারিনি অনেকেই। কী হতে চলেছে ভবিষ্যতে এই ধারাবাহিকে, সেটাই এখন দেখার!