কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের আগামী ছবি ‘ওয়েটিং রুম’-এ মুখ্যভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়কে। ছবিতে তাঁর চরিত্রের নাম ‘দীপা’। শোনা যাচ্ছে, ছবির ফার্স্ট লুক দেখে একে থ্রিলার বলে মনে করা হলেও এই ছবি ঠিক তা নয়। এই ছবি নাকি হতে চলেছে সোশাল ড্রামা। তবে এই ছবি যে নারীশক্তির উদযাপন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন পরিচালক। এই ছবির ফার্স্ট লুকে নায়িকার হাতে রক্তাক্ত ছুরি, চোখে মুখে রক্তের ছিটে দেখা গিয়েছে।  সদ্য শেষ হয়েছে 'ওয়েটিং রুম' ছবির শুটিং। ঝাড়খণ্ড শুটিংয়ের শেষ দিনের কয়েকটি মুহূর্তের ছবি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে লিখলেন নাতিদীর্ঘ এক পোস্ট এবং তাতে জানালেন বাংলার কলাকুশলীদের ও শিল্পীদের দক্ষতা ও নিষ্ঠা যে ভারতীয় সিনেমার গর্ব, তা আরও একবার প্রমাণ করবে তাঁর ‘ওয়েটিং রুম’।

 

 

 

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় লিখলেন, “ওয়েটিংরুম ছবির দীর্ঘ ১ মাসের আউটডোর সেরে টিম বাড়ি ফিরে এসেছে। আমিও ক্লান্তির ঝটকা সামলে লিখতে বসলাম। অগণিত মানুষ কাজ করেছেন এই ছবিতে। প্রযোজক স্টারমার্ক সিনেমাসের পার্থ সারথি মজুমদার ও পল্লবী মজুমদারকে আন্তরিক ধন্যবাদ আমাদের ওপর ভরসা রাখার জন্য। প্রত্যেকেই নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। এই শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা আমার অন্য সব ছবির থেকে আলাদা। ঝাড়খন্ডের পাহাড় ঘেরা এক বিশাল ফাঁকা প্রান্তরে  শিল্পনির্দেশক ধনঞ্জয় মন্ডলের বাহিনীর পরিশ্রমে গড়ে উঠেছিল একটা বিরাট সেট। ছবিতে সেটা সেট কিনা হয়তো অনেকেই টের পাবেন না। রাতের পর রাত তাঁবুতে থেকে পাহারা দিয়ে ওরা গড়ে তুলেছিলো আমাদের স্বপ্নের একটা জগৎ । শুটিংয়ের শেষে তাই পুরো ইউনিটের আবেগ ছিলো তুঙ্গে। আমাদের প্রতিটি শিল্পী ও কলাকুশলীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধায় এই কাজ সময় মতো শেষ হতে পেরেছে। তাঁদের সব্বাইকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানাই । ছবিতে বিরাট টিমের একটা অংশ মাত্র আছে। বাকিরা তখন ঘরে ফেরার জন্য শুটিংয়ের মালপত্র গোছগাছ করতে ব্যস্ত ছিলো। যে আনন্দ নিয়ে আমরা ফিরলাম তার জন্য সিনেমাকেই ধন্যবাদ দিলাম। পড়ন্ত বেলায় প্রিয় সেটটাকে ছেড়ে চলে আসার সময় সবারই স্বজনকে ছেড়ে আসার মতো কষ্ট হয়েছিলো। আগামী বছর আসবে এই ছবি। আপাতত ঠান্ডা ঘরে বসে ছবি কাটাছেঁড়া করার সময়। একটা কথা জোর দিয়ে বলতে পারি আমাদের বাংলার কলাকুশলীদের ও শিল্পীদের দক্ষতা ও নিষ্ঠা ভারতীয় সিনেমার গর্ব, আশা করি আবারও প্রমাণ করবে এই ছবি।”

(পোস্টের বানান অপরিবর্তিত রাখা হল।)

 

 

 

 

ছবির শুটিংয়ের আগে শুভশ্রীর জন্য সমাজমাধ্যমে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে তিনি লেখেন, “আমার সিনেমার সংসারে গৃহপ্রবেশ হোক এই ছবির হাত ধরে। একজন অভিনেত্রীর অদম্য নিষ্ঠা ও একাগ্রতা আমায় বাধ্য করেছে তার জন্য কলম ধরতে। আমাদের যাত্রা শুভ হোক। ভালবাসা সহ কৌশিক।” প্রসঙ্গত, এর আগে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘গৃহপ্রবেশ’ ছবিতে স্ক্রিন ভাগ করেছিলেন। সেখানে অভিনেত্রীর শ্বশুর হয়েছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। পরিচালক-অভিনেতার পরিচালিত ‘ধূমকেতু’ ছবিটিও এই বছর মুক্তি পেয়েছে শুটিংয়ের ১০ বছর পর। সেখানেও নায়িকা হিসেবে ছিলেন শুভশ্রী। আবারও তাঁরা 'ওয়েটিং রুম' ছবিতে পরিচালক-অভিনেত্রী হিসেবে জুটি বাঁধলেন। এই ছবির সফরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে তিনি এদিন লেখেন, 'আরও একটা গল্প বলা শেষ। এই গল্প খুব ভাগ্য করলে একজন শিল্পীর কাছে আসে। এই গল্প একজন শিল্পীর পরিশ্রমের ফল। শুধু মাত্র ধন্যবাদ বা নানা কথার মাধ্যমে প্রমাণ করা সম্ভব না, আমার কৃতজ্ঞতা কৌশিক দা। প্রতিটি নারীর মধ্যে লুকিয়ে আছে দীপা। দীপা নামের অর্থ হল আলোকিত, উজ্জ্বল। দীপা আসবে অনেকটা আলো নিয়ে, একটু তাপ, আর একটু ছায়া নিয়ে। সেটার জন্য আপনাদের ওয়েট করতে হবে ‘ওয়েটিং রুম’-এর জন্যে।”


তবে ছবিটি চলতি বছরে মুক্তি পাবে না। ২০২৬ সালে কখন মুক্তি পাবে সেটার দিকেই নজর থাকবে সকলের।  দেওঘর, মধুপুর সহ নানা জায়গায় এই ছবির শুটিং হয়েছে। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে অনির্বাণ চক্রবর্তী, রেশমি সেন, প্রদীপ ভট্টাচার্য, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস মণ্ডল, প্রমুখকে। ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন।