দিল্লি হাই কোর্ট বুধবার ফারহান আখতার অভিনীত ‘১২০ বহাদুর’ ছবির মুক্তিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। ছবিটির সিবিএফসি সার্টিফিকেশন চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলাকে নিষ্পত্তি করে আদালত জানায়, অভিযোগ অনুযায়ী ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃত করা হয়েছে কি না—সেটি পরবর্তীতে পর্যালোচনা করা যাবে, তবে আপাতত ২১ নভেম্বর নির্ধারিত মুক্তি স্থগিত করা হবে না।

বিচারপতি প্রতিভা এম সিং এবং শৈল জৈনের বেঞ্চ জানায়, মুক্তির একেবারে শেষ মুহূর্তে শিরোনাম বা বিষয়বস্তু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। প্রযোজকরা ছবির শেষে বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে সৈনিকদের নাম যুক্ত করেছেন বলেও আদালত উল্লেখ করে।


আদালত বলে, “যেহেতু ১২০ জন সৈনিকের সকলের নাম যুক্ত হয়েছে কি না তা নিয়ে কিছু ধোঁয়াশা রয়েছে, তাই শুক্রবার নির্ধারিত তারিখে ছবিটি সারা দেশে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অনুমতি দেওয়া হল।”
পিটিশনার পক্ষের আইনজীবী জানান, শিরোনাম অপরিবর্তিত রাখা এবং সৈনিকদের নাম শেষে যুক্ত থাকলে তাদের আপত্তি নেই।

আদালত আরও জানায়, মুক্তির পর আবেদনকারীরা ছবি দেখে যদি দেখেন কোনও নাম বাদ পড়েছে, তাহলে সেটি ওটিটি রিলিজের সময় সংশোধন করতে হবে। “ওটিটি রিলিজেও কেবল সৈনিকদের নাম এবং তাঁদের সংশ্লিষ্ট রেজিমেন্ট যুক্ত করা যাবে,” বলে আদালত স্পষ্ট করে।

কী ছিল পিটিশন?

সংযুক্ত আহির রেজিমেন্ট মোর্চা নামের একটি দাতব্য সংস্থা, তার ট্রাস্টি এবং রেজাং লা যুদ্ধে শহিদ হওয়া বেশ কয়েকজন সৈনিকের পরিবার এই পিআইএল দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, ছবিটি সিবিএফসি সার্টিফিকেট পেলেও এতে ঐতিহাসিক সত্য বিকৃত করা হয়েছে, এবং ছবির নাম ‘১২০ বহাদুর’ পরিবর্তন করার দাবি তোলেন তাঁরা।

সকালবেলায় মামলাটি প্রধান বিচারপতি দেবেন্দ্র কুমার উপাধ্যায় এবং বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার বেঞ্চে ওঠার কথা থাকলেও বিচারকদ্বয় না বসায় শুনানি ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত হয়। পরে ছবির মুক্তি সামনে হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে মামলাটি অন্য বেঞ্চে তুলে ধরা হয়।

ছবিটি ১৯৬২ সালের রেজাং লা যুদ্ধের বীর সৈনিক মেজর শৈতন সিং ভাট–কে কেন্দ্র করে নির্মিত, যিনি অসীম সাহসিকতার জন্য পরমবীর চক্রে ভূষিত হন। ছবিটি ২১ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, রেওয়ারি এবং আশপাশের অঞ্চলের প্রধানত ১১৩ জন আহির সেনা নিয়ে গঠিত ওই কোম্পানি চুশুল বিমানঘাঁটির প্রথম প্রতিরক্ষা–রেখা রেজাং লা পাস রক্ষায় অবিস্মরণীয় সাহসিকতা দেখায়।
পিটিশনারদের অভিযোগ, ছবিতে মেজর শৈতান সিংকে ‘ভাটি’ নামে একক নায়ক করে দেখানো হয়েছে, ফলে যুদ্ধের সমষ্টিগত বীরত্ব, আহির রেজিমেন্টের অবদান এবং পরিচয় আড়ালে পড়ে যাচ্ছে।

রজনীশ ‘রেজি’ ঘোষ পরিচালিত ছবিটিতে মেজর শৈতান সিংয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফারহান আখতার। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এটি নির্ধারিত সময়েই মুক্তি পাবে।