২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রেক্ষাগৃহে অভিনব কাশ্যপের পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘দবং’। ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন সলমন। খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সোনুকে। সলমন খানের বিপরীতে এই ছবির মাধ্যমেই অভিনয়ের সফর শুরু করেছিলেন সোনাক্ষী সিনহা। এবার সলমন খানকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন সেই ছবির পরিচালক অভিনব কাশ্যপ!

‘দবাং’ শুধু ব্লকবাস্টার হয়নি, আদতে এই ছবিই পুঁতেছিল হিন্দি ছবির কপ ইউনিভার্সের বীজ। আর এই ছবির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল চার্টবাস্টার গান ‘মুন্নি বদনাম হুই’, যেখানে মালাইকা অরোরার তুখোড়, আকর্ষণীয় নাচ আজও দর্শকের মনে গেঁথে আছে। তবে এই গানটিতে মালাইকার পারফর্ম করা নিয়ে নাকি শুরু থেকেই বিস্তর মতবিরোধ ছিল খান পরিবারের অন্দরে!
সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক অভিনব কাশ্যপ জানালেন, সলমন খান ও আরবাজ খান প্রথমে চাননি মালাইকা এই গানটি করুন। দু'জনে মিলেই নাকি চাননি। আরবাজের আপত্তি ছিল— তাঁর তখনকার স্ত্রী মালাইকাকে ‘আইটেম গার্ল’ ট্যাগ দেওয়া হোক। কাশ্যপের ভাষায়, “ সলমন, আরবাজ চাইছিলেন না এই গানে পারফর্ম করুক মালাইকা, কারণ ওঁর স্ত্রীর উপর তাহলে ‘আইটেম গার্ল’-এর তকমা পড়বে। আসলে, সলমন ও আরবাজ দু'জনেই খুব গোঁড়া মুসলিম। মালাইকার পোশাক নিয়েও সলমনের সঙ্গে মতবিরোধ হত। তাঁরা চাননি পরিবারের মেয়েরা এভাবে প্রকাশ্যে শরীর দেখাক!”
কিন্তু এখানেই জেদ ধরেন মালাইকা। অভিনবের কথায়, “মালাইকা একজন স্বাধীনচেতা, শক্তিশালী নারী। নিজের সিদ্ধান্তে তিনি অটল ছিলেন। যখন এই গানটির ভিডিও প্রস্তাব তাঁকে দেওয়া হয়, তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান। এরপর আরবাজকে রাজি করাতে কিছুটা সময় লেগেছিল। মালাইকা তাঁকে বুঝিয়ে বলেছিলেন—এতে অশ্লীল কিছু নেই, কেবল নাচ, আর শুটিংয়ের পরিবেশও ছিল পুরোপুরি ফ্যামিলি-ওরিয়েন্টেড। ভয় পেলে হবে না... অগত্যা আরবাজও রাজি হন।”
আরও চমক আছে। প্রথমে গানটিতে সলমন খানের থাকার কথা ছিল না। পরে নাকি গানটির প্রবল জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা আঁচ করেই নাকি তিনি নিজেই যোগ দেন 'মুন্নি বদনাম'-এর শুটিংয়ে। ফলে পুরো সিকোয়েন্স নতুন করে সাজানো হয় সলমন, সোনু সুদ এবং মালাইকাকে নিয়ে। আর বাকি ইতিহাস সবার জানা—গানটি ভেঙেছিল একের পর এক রেকর্ড।
উল্লেখ্য, অরবাজ ও মালাইকা ১৯৯৮ সালে বিয়ে করেন। ২০০২ সালে তাঁদের ছেলে আরহানের জন্ম। তবে আঠারো বছরের দাম্পত্যের পর ২০১৬ সালে আলাদা হয়ে যান দু’জন, এবং ২০১৭ সালে বিচ্ছেদ হয়। বর্তমানে আরবাজ বিবাহিত শুরা খানের সঙ্গে, অন্যদিকে মালাইকা আর আরবাজ একসঙ্গে ছেলে আরহানের কো-প্যারেন্টিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
'মুন্নি বদনাম’-এর নেপথ্যে এই পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং মালাইকার দৃঢ় অবস্থান আজও বলিউডের অন্দরমহলে আলোচনার বিষয়।
