বলিউডে ডেবিউ করেছিলেন ‘দবং’ দিয়ে। সেই ছবিই তাঁকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছিল। এবং সেই ছবি মুক্তির পরপরই সলমন ও গোটা খান পরিবারের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ পৌঁছেছিল অন্য মাত্রায়। ‘দবং’–এর পরিচালক অভিনব কাশ্যপ ফের ফুঁসে উঠেছেন। প্রতিদিনই সব বিস্ফোরক দাবি করছেন, সঙ্গে লাগামহীন মন্তব্য! মূলত তাঁর নিশানায় বলি-তারকা সলমন খান। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে অভিনব তীব্র ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন সলমনকে। মন্তব্য করেছেন ‘টাইগার’-এর চেহারা নিয়ে!
অভিনবের কথায়, “শরীর ফোলাতে, মাংসপেশি সুডৌল করতে প্রচুর ইনজেকশন ব্যবহার করে সলমন! হাফ পুশআপ করে বোডি পাম্প হয়, আর ওর চার্বি–ওয়ার্বি ঠিক হয়। আমার মনে হয়, ইনজেকশন দিতেই বানানো শরীর। ও আসলে একটা বেলুন! ওর শরীরের সব হাড়–মাংস সব ঘেঁটে গিয়েছে। কিছুই আর ঠিকঠাক নেই। এদের বডি ডাবল শট, ফেস এডিট করে বসায়। আমার তো মনে হয়, প্রচুর ইনজেকশনস নিয়ে নিজের চেহারা তৈরি করেছে সলমন। ” তাঁর আরও দাবি, সলমন নাকি ক্যামেরার সামনে নিজের পাম্প-আপ চেহারা দেখতে স্রেফ হাফ-পুশ আপ করেন। যেই একটু শক্ত হয়ে ফুলে ওঠে শরীর, ওমনি সব ছেড়েছুড়ে দেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, “সলমন কখনও অভিনয় নিয়ে আগ্রহী নন। গত ২৫ বছর ধরে তিনি শুধুই তারকা হওয়ার শক্তির উপর ভর করেন। তিনি আসলে গুণ্ডা, বদমেজাজি, এবং অশুভ মনোভাবের অধিকারী।”
অভিনব কাশ্যপ শুধু সলমনকে নিশানা করেননি, তিনি খান পরিবারের ক্ষমতার কথাও উল্লেখ করেছেন। সূত্রের উদ্ধৃতি অনুযায়ী, “এরা প্রতিশোধপ্রিয় মানুষ। যারা এদের সঙ্গে একমত নন, তাদের ওপর কঠোর পদক্ষেপ নেয়। এরা পুরো প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।”
অভিনবের কথা শুনেই চটেছেন সলমন-অনুরাগীরা। চোখ চোখা মন্তব্যে সমাজমাধ্যমে সরাসরি প্রতিক্রিয়া এসেছে। দোং ছবির পরিচালকের উদ্দেশে কেউ লিখেছেন, “প্রথমে নিজের পেট কমাও, চেহারাটা ঠিকঠাক কর একটু। তারপর এসব মন্তব্য কর।” অন্য এক নেটিজেন লিখেছেন, “আমাদের এলাকায় যে জিম আছে, সেখানে সলমন ভাইয়ের পোস্টার সবসময় থাকে। তিনি যুব সমাজকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে প্রেরণা দিয়েছেন।”
অভিনব কাশ্যপ হলেন বিখ্যাত পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের ছোট ভাই। অভিনবও একসময়কার জনপ্রিয় পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পেয়েছিলেন সলমন খানকে নিয়ে ‘দবং’ ছবিটি পরিচালনা করে (২০১০) । যা সলমনের বড়পর্দায় অন্যতম কামব্যাক ছবি হিসেবে গণ্য হয় এবং তার সঙ্গে সোনাক্ষি সিনহা–র শক্তিশালী ডেবিউর কারণ হয়েছিল। এছাড়াও ‘জঙ্গল’ এবং ‘মনোরমা সিক্স ফিট আন্ডার’–এর মতো ছবিতে লেখক হিসেবে কাজ করেছেন অভিনব কাশ্যপ।
অন্য আরেক সাক্ষাৎকারে অভিনব জানিয়েছিলেন, প্রথমে তিনি রনদীপ হুডা-কে ভেবেছিলেন প্রধান চরিত্রের জন্য। তাঁর মতে, রনদীপের রাফ-অ্যান্ড-টাফ চেহারাটাই চরিত্রের সঙ্গে মানানসই। কিন্তু সোহেল খান সরাসরি বলে দেন, “রনদীপ হুডার কোনও বাজার আছে? ওর পিছনে ছবিতে কে টাকা লাগাবে?” এরপর পরিচালক সঞ্জয় দত্ত, সানি দেওল-এর নামও তোলেন। অবশেষে খান পরিবারই প্রস্তাব দেয়—‘চুলবুল’ হোক সলমন!
কীভাবে হল সালমানের নাম চূড়ান্ত? পরিচালকের দাবি, সোহেল-আরবাজ দু’জনেই বলেন, যদি সলমন ছবিটা করেন, তবে প্রযোজনা তাঁরা নিজেরাই করবেন। বীর ছবির শুটিং সেটেই সলমনকে গল্প শোনান অভিনব। সেখানেই হাতে হাতে ১০ লক্ষ টাকার চেক দিয়ে ছবিতে সই করান খান ব্রাদার্স।
আরবাজের বিশেষ শর্ত ও মালাইকার প্রযোজনা নিয়েও মুখ খুলেছেন এই ‘দবং’ পরিচালক। অভিনবের বক্তব্য, আরবাজ প্রথমে নিজেই চুলবুল পান্ডে হতে চাইছিলেন। কিন্তু তাঁকে মানানসই না লাগাতে এরপরই মালাইকা অরোরা ও আরবাজ প্রযোজক হিসেবে যুক্ত হন এই ছবির সঙ্গে।
অভিনবের আরও দাবি, ছবির প্রধান খলনায়ক ছেদি সিংয়ের চরিত্রে সোনু সুদ-ই ছিলেন তাঁর প্রথম পছন্দ। কারণ তিনি চাইছিলেন, ভিলেনকে যেন নায়কের থেকেও শক্তিশালী লাগে। সোনুর শরীরী গঠন ঠিক সেইরকমই ছিল। কিন্তু সলমন নাকি প্রথমে একেবারেই রাজি ছিলেন না—কারণ সোনুর টানটান, মাংসপেশিবহুল চেহারা দেখে নাকি তিনি “নিরাপত্তাহীনতা”য় ভুগেছিলেন! শেষমেশ ক্যাটরিনা কইফ এগিয়ে আসেন এবং সলমনকে বোঝান। সেই সময়ে সলমনের সঙ্গেই থাকতেন ক্যাটরিনা। যাইহোক, শেষমেশ ‘ক্যাট’-এর কথায় কাজ হয়। দবং ছবিতে সোনুর নাম পাকাপাকি হয়।পরিচালক এও স্বীকার করেছেন, সোনাক্ষী সিনহার নাম তিনি প্রস্তাব করেননি। তবে যাই হোক, শুটিং শেষে তাঁর অভিনয়ে তিনি সন্তুষ্ট হয়েছিলেন।
