১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় ‘দ্য মমি’। মানুষের সঙ্গে হাজার হাজার বছরের প্রাচীন অভিশপ্ত মমির লড়াই দেখে মুগ্ধ হয়েছিল বিশ্বের কোটি কোটি দর্শক। তার পর এই সিরিজের আরও দু’টি ছবি মুক্তি পেয়েছে, ভালও লেগেছে দর্শকের। তিনটি ছবির-ই নায়ক ছিলেন ব্রেন্ডন ফ্রেজার। হলিউডে এ যাবত্ প্রায় গোটা পনেরো ছবি তৈরি হয়েছে মমি নিয়ে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল ব্রেন্ডন ফ্রেজার অভিনীত ‘মমি’ সিরিজের ছবিগুলিই। এবার হলিউডে ফিরল সেই পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির রোমাঞ্চ। ব্রেন্ডন ফ্রেজার অবশেষে মুখ খুললেন এবং এক ঘোষণাতেই বিশ্বজুড়ে ভক্তদের উল্লাস বাড়িয়ে দিলেন। মুক্তি পাচ্ছে ‘দ্য মমি ৪’! এবং এই ছবি নিয়ে প্রথমবারের মতো তিনি বললেন, “আমি যে ছবিটা বানাতে চেয়েছিলাম, সেটাই এবার আসছে। ২০ বছর ধরে এই ছবির জন্য ফোন কলের অপেক্ষায় ছিলাম।”

 

 

১৯৯৯ সালে ফ্রেজারের ‘রিক ও’কনেল’ সারা পৃথিবীকে অ্যাডভেঞ্চারের নতুন ভাষা শিখিয়েছিল। ২০০১ সালে ‘দ্য মমি রিটার্নস’ হয়ে উঠেছিল কাল্ট। এরপর ২০০৮-এর ‘টুম্ব অব দ্য ড্রাগন এম্পেরর’-এ অভিনয় করলেও ফ্রেজারের মনে কুরে কুরে খেয়েছিল এক আক্ষেপ। তিনি জানালেন, তৃতীয় ছবিটি ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’ হিসেবে ভাল হলেও সেটি ছিল পরিস্থিতির চাপে বানানো। কারণ তখন এনবিসি-র হাতে ছিল অলিম্পিকের ব্রডকাস্ট রাইটস, ফলে প্রজেক্টে তাড়াহুড়ো ছিলই।

কিন্তু এবার সব বদলেছে।  ইউনিভার্সাল আবার ‘দ্য মমি’ তৈরি করছে ম্যাট বেটিনেলি-অলপিন ও টাইলার গিলেট -এর পরিচালনায়। আর সবচেয়ে বড় খবর, 'দ্য মমি ৪'-এ ব্রেন্ডন ফ্রেজার ফিরছেন, সঙ্গে ব়্যাচেল ওয়েইজও! এই জুটি শেষবার একসঙ্গে ছিলেন ২০০১-এর ছবিতে। এই রিইউনিয়নের কথা শোনামাত্রই পুরোনো দর্শকদের নস্টালজিয়ার পারদ বেড়ে গেল কয়েক গুণ।

 

 

 

২০১৭ সালে টম ক্রুজকে নিয়ে ইউনিভার্সাল যখন ‘দ্য মমি’ রিবুট করেছিল, তখন তাতে ব্র্যান্ডন ফ্রেজারকে রাখা হয়নি। সেই ছবির ব্যর্থতার প্রসঙ্গ টেনে ফ্রেজার সোজাসাপটা বলেন, “আমাদের মামি-ফ্র্যাঞ্চাইজির মূল উপাদান ছিল মজা। সেই মজা, সেই রোমাঞ্চ...আমি ওদের ছবিতে পাইনি।”

আর এবার? তাঁর কথায়, “এখন সময় এসেছে ভক্তদের তাদের প্রাপ্যটা দেওয়ার।”

মমি ৪-এর পরিচালনা যাঁদের দায়িত্বে তাঁরা ‘রেডি অর নট’, ‘স্ক্রিম’-এর নতুন যুগের জন্য বিখ্যাত, তাই অ্যাডভেঞ্চার, হরর আর মজার নিখুঁত ককটেলের প্রত্যাশা আকাশছোঁয়া। ব্র্যান্ডন ফ্রেজার কয়েক বছর আগেই বলেছিলেন, “ভাল গল্প পেলে আমি আবার রিক ও’কনেল হব।” শেষমেশ সেই গল্প এবার পাকা হয়ে গেল।

ইউনিভার্সাল ষ্টুডিও সংস্থা এখনও এই ছবির মুক্তির তারিখ ঘোষণা করেনি। কিন্তু এই ঘোষণা স্পষ্ট, ‘দ্য মমি’ ফিরছে, এবং এবার ফিরছে তার আসল হৃদয়, আসল রূপ, আর সেই হারিয়ে যাওয়া অ্যাডভেঞ্চারের অদম্য স্পিরিট নিয়ে।

চলচ্চিত্রপ্রেমীরা তাই এখন শুধু অপেক্ষা করছে কখন আবার মরুভূমির বুকে জেগে ওঠে সেই প্রাচীন অভিশাপ, আর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান রিক ও’কনেল তাঁর মহাকাব্যিক কামব্যাকের উদ্দেশ্যে।