ভারতের নৃত্য ও চলচ্চিত্রজগৎ শোকস্তব্ধ। ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন প্রবীণ অভিনেত্রী ও কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী মধুমতী। এক যুগের এক অনন্য নৃত্যসত্তা, যিনি রূপালি পর্দায় ছন্দ আর অভিব্যক্তিকে একাকার করে দিয়েছিলেন।
পাঁচ ও ছয়ের দশকে তিনি ছিলেন বলিপাড়ার নৃত্যশিল্পীর উজ্জ্বলতম নামগুলির একটি। সেই সময়ের কিংবদন্তি হেলেনের সঙ্গে তাঁর তুলনা হত ঘন ঘন। কারণ নৃত্যের জগতে দু’জনেই ছিলেন ‘গ্রেস অ্যান্ড গ্ল্যামারের’ প্রতীক।
মধুমতীর প্রয়াণে শোক জানিয়েছেন অভিনেতা বিন্দু দারা সিং ও অক্ষয় কুমার।
বিন্দু দারা সিং এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “আমাদের গুরু ও পথপ্রদর্শক মধুমতীজিকে শ্রদ্ধা জানাই। ভালবাসা আর আশীর্বাদে ভরা এক সুন্দর জীবন কাটিয়েছেন তিনি। আমরা যাঁরা তাঁর কাছ থেকে নাচ শিখেছি, তাঁদের কাছে তিনি এক কিংবদন্তি।”
Rest in peace our teacher and guide #Madhumati ji. A beautiful life led filled with love and blessings from so many of us who learnt dancing from this legend ???????? pic.twitter.com/eRRZ3W1LOx
— Vindu Dara Singh (@RealVinduSingh)Tweet by @RealVinduSingh
অক্ষয় কুমার ভাগ করে নিয়েছেন নিজের গভীর আবেগও। মধুমতীর সঙ্গে পুরনো একটি ছবি পোস্ট করে অভিনেতা লেখেন, “আমার প্রথম ও চিরকালীন গুরু। নাচ সম্পর্কে যা কিছু জানি, সবই শিখেছি আপনার পদতলে বসে, মধুমতীজি। প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি, প্রতিটি অভিব্যক্তিতে আপনার ছায়া আজও রয়ে যাবে। ওঁ শান্তি।”
My first and forever guru. Everything I know about dance, I learnt at your feet, Madhumati ji. Har ada, har expression mein aapki yaad hamesha saath rahegi. Om Shanti ???? pic.twitter.com/Vo288LSMRZ
— Akshay Kumar (@akshaykumar)Tweet by @akshaykumar
১৯৩৮ সালে মহারাষ্ট্রে জন্ম মধুমতীর। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই নৃত্যশিল্পী দীপক মনোহরকে বিয়ে করেন। তখন দীপক ছিলেন চার সন্তানের পিতা, যদিও তাঁর প্রথম স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল কিছুদিন আগেই। মধুমতী বিয়েতে রাজি ছিলেন না, কিন্তু মায়ের ইচ্ছায় শেষ পর্যন্ত রাজি হন।
মাত্র উনিশ বছর বয়সে বিয়ের পরও থেমে থাকেননি তিনি। ভরতনাট্যম, কথক, মণিপুরী ও কথকলি- সব নাচেই প্রশিক্ষিত ছিলেন মধুমতী। সিনেমায় আত্মপ্রকাশ ১৯৫৭ সালে, একটি অপ্রকাশিত মারাঠি ছবির মাধ্যমে। পরে 'আঁখে', 'শিকারি', 'মুঝে জিনে দো', 'টাওয়ার হাউস'–এর মতো বহু জনপ্রিয় ছবিতে দেখা যায় তাঁকে।
আজ যখন তিনি নেই, বলিউডে যেন এক শূন্যতা, যেন থমকে গিয়েছে নৃত্যের সেই চিরন্তন তাল। শিল্প, ছন্দ, অভিব্যক্তি- সব মিলিয়ে যে নামটা একসময় আলো ছড়াত, আজ সেটি নীরব স্মৃতিতে রয়ে গেল।
