‘বিগ বস’-এর প্রতিটি সিজনেই দর্শকদের আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন শোয়ের হোস্ট সলমন খান। ভক্তদের মতে, কিছু প্রতিযোগীকে তিনি বারবার কড়া ভাষায় তিরস্কার করেন, আবার অন্যদের প্রতি তুলনামূলকভাবে নরম মনোভাব দেখান— এমনকি অনেক সময় তাঁদের এগিয়ে দিতে সাহায্য করেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এক সাক্ষাৎকারে ‘বিগ বস ১৯’-এর প্রযোজক ঋষি নেগি এই দীর্ঘদিনের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন।

ঋষি বলেন, “সলমন নিজে থেকেই যতটা সম্ভব পর্বগুলো দেখার চেষ্টা করেন। যদি কখনও দেখা না হয়, তাহলে সপ্তাহান্তে আমাদের সঙ্গে বসে এক থেকে দুই ঘণ্টা ফুটেজ দেখেন— যেগুলোতে সপ্তাহের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো থাকে। তিনি সব দিকই দেখেন। তাঁর অনেক পরিচিত আছেন, যারা নিয়মিত শো দেখেন এবং তাঁকে ফিডব্যাক দেন। ফলে তিনি জানেন ঘরের ভিতরে কী ঘটছে, কে কী করছে। তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। আমরা নির্মাতা হিসাবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি রাখি, আবার দর্শকদের প্রতিক্রিয়াও ক্রমাগত পাই। সবকিছু মিলিয়েই আমরা সপ্তাহান্তের পর্বের পরিকল্পনা করি।”

সলমনের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে বারবার যে অভিযোগ ওঠে, তা নিয়েও মন্তব্য করেন প্রযোজক। অনেকে বিশ্বাস করেন, সলমন কানে ইয়ারপিসের মাধ্যমে নির্মাতাদের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী কথা বলেন। এই ধারণাকে উড়িয়ে দিয়ে ঋষি হাসতে হাসতে বলেন, “যাঁরা সলমন খানকে চেনেন, তাঁরা জানেন— তাঁকে এমন কিছু বলানো সম্ভব নয়, যেটায় তিনি বিশ্বাস করেন না।”

তিনি আরও জানান, এবারের সিজনে সলমনের সঙ্গে কাজের ধরন আরও সহযোগিতামূলক করা হয়েছে। “আগে আমরা শুধু তাঁকে ব্রিফ করতাম। এখন তিনি নিজেই ফুটেজ দেখেন, পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট বোঝেন এবং তার পর নিজের মতামত দেন। কোন বিষয় ঠিক আর কোনটা ভুল— সে বিষয়ে তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। আমরা আলোচনা করি, বিতর্ক করি, তারপরেই শুটিংয়ে যাই,” বলেন ঋষি।

সলমনের পারিশ্রমিক নিয়ে চলা জল্পনা সম্পর্কেও তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। বলা হয়, প্রতি সিজনে তাঁর পারিশ্রমিক নাকি ১৫০–২০০ কোটি টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে। এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন ঋষি। তিনি বলেন, “ওটা সলমন খান ও জিওহটস্টারের মধ্যে হওয়া চুক্তি, তাই আমি সে বিষয়ে কিছু জানি না। তবে যাই হোক, যে পারিশ্রমিক সলমন পান, তিনি তাঁর যোগ্য। আমার কাছে যতক্ষণ তিনি সপ্তাহান্তের শোয়ে থাকছেন, ততক্ষণ আমি খুশি।”

প্রায় প্রতিটি সিজনেই সলমনকে বলতে শোনা যায়, এটা নাকি তাঁর শেষ সিজন, তিনি আর এই শো করতে চান না। এ বিষয়ে ঋষি স্বীকার করেন, “হ্যাঁ, কিছু সিজন শো শেষ হওয়ার পর তিনি সত্যিই বলেছেন, আর করবেন না। কিন্তু এখন তাঁর সঙ্গে এই শোয়ের এক আবেগগত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। মঞ্চে তাঁর অংশগ্রহণের ধরনই তা প্রমাণ করে। কিছু সময় যদিও তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তবু আমরা সৌভাগ্যবান যে প্রতিবারই তিনি শেষ পর্যন্ত রাজি হন। শো শুরু হওয়ার আগে আমরা তাঁর সঙ্গে বসি, বিস্তারিত আলোচনা করি, সম্প্রচারের পরিকল্পনা জানাই— সব কিছুই আগেভাগে ঠিক করা হয়।”