দুর্গোৎসবের আবহেই জীবনে এল নতুন আলো। দ্বিতীয়বার মা হলেন অভিনেত্রী জাগৃতি গোস্বামী ঘটক। কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। দুই কন্যাকে নিয়ে দারুণ খুশি জাগৃতি এবং তাঁর পরিবার।
জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘সর্বজয়া’-তে শেষবার পর্দায় দেখা গিয়েছিল জাগৃতিকে। তারপর থেকে প্রায় তিন বছর তিনি অভিনয়জগত থেকে দূরে। সংসার আর প্রথম সন্তানের যত্নেই কেটেছে এই সময়টা। তবে অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর। বরং দুই সন্তানকে একটু বড় করে আবার কাজে ফিরতে চান তিনি।
অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছেন— মা ও নবজাতক দুজনেই সম্পূর্ণ সুস্থ। দ্বিতীয়বার কন্যা সন্তান জন্মানোয় ঘরে আবার যেন লক্ষ্মীর আগমন ঘটেছে। যদিও এই সুখবর কাউকেই আগে টের পেতে দেননি তিনি। এমনকী অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও বিশেষ এক ফটোশুট করেছিলেন জাগৃতি, কিন্তু সেই সময়ে গোপনই রেখেছিলেন মাতৃত্বের খবর।

সন্তান জন্মের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন পোস্টে তিনি লিখেছেন— “দ্বিতীয়বার মা ডাক শুনবো। মাগো, না চাইতেই অনেক কিছু দিলে আমায়। আশীর্বাদ দিও সারাজীবন আমি যেন তোমার সেবায়, তোমার সাধনায় নিমজ্জিত থাকতে পারি।”

আরও লিখেছেন, “প্রকৃতির নীরব কোলে এক মা আঁকছেন মা দুর্গার প্রতিচ্ছবি — প্রতিটি আঁটুড়ে লুকিয়ে আছে সেই শক্তি, যা তিনি নিজের অন্তরে বহন করেছেন। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আছে ছোট মেয়ে, নির্ভর চোখে ভরা বিস্ময়। শক্তির দুটি রূপ — একটি প্রসূতিতে, একটি আগমনের প্রতীক্ষায় — ভরিয়ে নিচ্ছে ভালোবাসা আর সৃষ্টির মুহূর্ত। সেই মমতাময় মুহূর্তে তিন রূপে মিলিত হয় শক্তি — নারী সৃষ্টির রূপে, কন্যা প্রসূচিত শক্তির রূপে, আর অন্তরে বেড়ে ওঠা অনন্ত প্রাণ সৃষ্টিশক্তির রূপে। সত্তার শক্তি হোক বা শিব, সবই ঈশ্বরের অনুগ্রহময় আশীর্বাদ।
এ চিত্রকলা তখন আর শুধু শিল্প নয় — এটি এক স্মরণীয় বার্তা, যে প্রতিটি নারী, প্রতিটি কন্যা, অন্তরে ধারণ করে দুর্গার শক্তি। তিনি মা রূপে লালন করতে পারেন, কন্যা রূপে দিশা দিতে পারেন, স্ত্রী রূপে ভালোবাসতে পারেন, বন্ধু রূপে সহায় হতে পারেন, আবার নেতা রূপে এগিয়ে আসতে পারেন।
মহালয়ার প্রভাতে, যখন দেবী অবতরণ করেন, তিনি আমাদের মনে করিয়ে দেন এক শাশ্বত সত্য — প্রতিটি নারী, প্রতিটি কন্যা, নিজের ভেতরে বহন করে সেই শক্তি, যা লালন করতে পারে, রক্ষা করতে পারে, পথ দেখাতে পারে, ভালোবাসতে পারে। তিনি শুধু মা নন, তিনি কন্যা, স্ত্রী, বন্ধু, স্রষ্টা, যোদ্ধা। তিনিই শক্তি।”
(পোস্টের বানান অপরিবর্তিত রাখা হল)

পোস্টে তিনি এক শিল্পকর্মের মাধ্যমে মাতৃত্ব ও শক্তির প্রতীকী চিত্রও ভাগ করে নেন। সেখানে মায়ের কোলে শিশু, পাশে দাঁড়িয়ে বড় মেয়ে— যেন নারীর শক্তির তিন রূপ একসঙ্গে মিলেছে। জাগৃতির কথায়, “প্রতিটি নারী, প্রতিটি কন্যা অন্তরে বহন করে দুর্গার শক্তি। তিনি মা রূপে লালন করতে পারেন, কন্যা রূপে দিশা দিতে পারেন, স্ত্রী রূপে ভালবাসতে পারেন, বন্ধু রূপে সহায় হতে পারেন, আবার নেতা রূপে এগিয়ে আসতে পারেন। তিনিই শক্তি।”
বর্তমানে টলিউড থেকে বলিউড— বহু অভিনেত্রীই দুই সন্তানের মা হওয়ার পর ফের অভিনয়ে ফিরেছেন। সন্তান সামলে কাজ সামলানোর দৃষ্টান্ত বহু। জাগৃতিও আশা করছেন, সন্তানরা একটু বড় হলে আবার ক্যামেরার সামনে নতুন করে শুরু করবেন নিজের যাত্রা।
এ যেন দুর্গাপুজোর উপহার— মায়ের জীবনে নতুন মা হওয়ার আনন্দ।
