বাংলাদেশ যেন আদতেই দ্বেষের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। অশান্তি থামার নামগন্ধ নেই পড়শি দেশে। বরং এবার সেই হিংসা, অশান্তির আঁচ এসে লাগল ওপার বাংলার জনপ্রিয় গায়ক জেমসের কনসার্টে। চলল মঞ্চ ভাঙচুর, তাণ্ডব।
জানা গিয়েছে ফরিদপুর জেলা স্কুলের ১৮৫ তম বছর উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই গান গাইতে এসেছিলেন বাংলাদেশের রকস্টার জেমস। কিন্তু অনুষ্ঠান চলাকালীন শুরু হয় বিপত্তি। হঠাৎই একদল বহিরাগত ঢুকে পড়ে সেখানে। শুধু তাই নয়, নিমেষে কনসার্টের আসরকে তাণ্ডবলীলায় পরিণত করে। অবাধে ভাঙচুর চালায়। উঠে পড়ে মঞ্চেও।
সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানেই দেখা যাচ্ছে, কিছু মানুষ মঞ্চের নিচে তাণ্ডব চালাচ্ছে, কিছু মানুষ মঞ্চের উপরে। কারও হাতে লাঠি, তো কেউ হাত দিয়েই বক্স, ইত্যাদি ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলছেন। পরিস্থিতি এতটাই বেসামাল হয়ে ওঠে যে সামলানো দায় হয়। বলাই বাহুল্য এমন অবস্থায় কনসার্ট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন জেমস। যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে এই বিশৃংখলার মধ্যে কোনও মতে অনুষ্ঠানের জায়গা থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে গাড়িতে উঠে বেরিয়ে যাচ্ছেন জেমস।
ভাইরাল ভিডিওর ক্যাপশনেই জানানো হয়েছে ফরিদপুরের এই কনসার্ট শুরু হওয়ার ঠিক মুখেই কট্টরপন্থীরা ঢুকে পড়েন। নির্বিবাদে আক্রমণ চালান। আয়োজকরা বাধ্য হন অনুষ্ঠান বাতিল করে দিতে। কনসার্টে থাকা চেয়ার ছুঁড়ে ছুঁড়ে মারতে দেখা যায় তাঁদের। ছুঁড়ে মারে ইট, পাথর
বলাই বাহুল্য, জেমসের কনসার্টে বেশ ভালই ভিড় হয়েছিল। তার মধ্যেই ঘটে এমন ঘটনা। সূত্রের খবর আয়োজকরা বাধা দিয়েছিল কট্টরপন্থীদের অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করা থেকে। কিন্তু তাদের সেই বাধা এড়িয়ে জোর করে ঢুকে পড়ে। চালায় তাণ্ডব। যদিও শেষ পর্যন্ত ফরিদপুর জেলা স্কুলের ছাত্ররাই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। আটকায় এই ধ্বংসলীলা। এই খণ্ডযুদ্ধের মধ্যে ১৫-২০ জন ছাত্র আহত হয়েছেন।
Once again, a concert by Bangladesh’s leading band music artist James has been shut down.
— Sahidul Hasan Khokon (@SahidulKhokonbd)
In Faridpur, just before the concert was set to begin, extremist groups stormed the stage and carried out an attack. Following intervention by law enforcement agencies, the organizers were… pic.twitter.com/NfmLRjL2OFTweet by @SahidulKhokonbd
লেখিকা তসলিমা নাসরিনও এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন সমাজমাধ্যমে। তিনি তাঁর পোস্টে লেখেন, 'ফরিদপুর জেলা স্কুলে জেমসের প্রোগ্রাম পণ্ড হল। জেমসকে গান গাইতে দেবে না তৌহিদী জনতা। দেশে ছায়ানট থাকবে না, উদীচী থাকবে না, বাউল থাকবে না, নগর বাউল থাকবে না, তবলা হারমোনিয়াম গিটার থাকবে না। সুর থাকবে, সে শুধু আজানের সুর। আর কোনও সুর নয়।'
