নিজস্ব সংবাদদাতা: এই বছর উৎসবে‌ অনিহা অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যর। তাই ধনতেরাসেও সোনা কেনায় মন ছিল না তাঁর। কিন্তু এবার ভূত চতুর্দশী‌র দিন এ কোন সাজে ধরা দিলেন অপরাজিতা?

 

 

বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় কালো গাউন পরে হাতে লন্ঠন নিয়ে রহস্যময়ী রূপে দেখা গেল অভিনেত্রীকে। অন্ধকারের মধ্যে গা ছমছমে পরিবেশে হেঁটে চলেছেন অপরাজিতা। সেই সঙ্গে জুড়েছেন একটি লেখাও। 

 

অপরাজিতা লেখেন, "পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে অল সেইন্টস ডে-এর শুভ সুচনাতে যে উৎসব পালন করা হয় তার নামই হ্যালোইন। ভূত বলতে আমরা ঠিক যা বুঝি তার সঙ্গে কিন্তু এই দিনের খুব একটা

সংযোগ ছিল না। কেলটিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে সামহাইন উৎসব পালনের রীতি ছিল, মনে করা হয় তার থেকেই হ্যালোইন উৎসবের উৎপত্তি। তবে আজ এই দিন জুড়ে ড্রাকুলা, ওয়‍্যারউল্ফ, অ্যানাবেল, ফ্র্যাংকেন্সটাইন, ইভিল উইচদের যে পৃথিবী ব্যাপী দৌড়াত্ব, তার মূলে কিন্তু আদতেই পপুলার কালচার! তবে ব্যক্তিগত ভাবে এই সংযোজনকে আমি বেশ উপভোগই করি! মনের সুখে রঙবেরঙের ভূত সাজা, কি দারুণ দারুণ সব কস্টিউম! আর সঙ্গে মুঠো মুঠো মিষ্টি ট্রিট, চকোলেট, টফি, মাফিন, ম্যুস... জিভে জল আনা আনন্দ! সব মিলিয়ে আমার দিব্যি লাগে।"

 

 

তিনি আরও লেখেন, "সৃষ্টির শুরু থেকেই মৃত্যু পরবর্তী সময়ের প্রতি মানুষের বিপুল আগ্রহ থেকেই ভুত নামক বিষয়ের আবির্ভাব! আর এ এমন একটা বিষয় যা যাকে বলে, প্রথম থেকেই সুপারহিট সেটা কিন্তু যে কোনো সভ্যতাতেই! পশ্চিমের হ্যালোইন নাইট হোক আর আমাদের ভূত চতুর্দশীর রাত, ভয়কে উপভোগ করার ট্রেন্ডটা কিন্তু বেশ সার্বজনীন! জানা যায় দানবরাজ বলি যখন স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করে নিলেন, তখন নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়ে গেল। তার আক্রোশ থেকে পার পেলেন না দেবতারাও। বলির তাণ্ডব ঠেকাতে দেবগুরু বৃহস্পতি ভগবান বিষ্ণুকে একটি উপায় বাতলে দিলেন। বামনের ছদ্মবেশে তখন নেমে এলেন বিষ্ণু, তিন পা সমান জমি ভিক্ষা চাইলেন রাজা বলির কাছে। দুই পা দিয়ে স্বর্গ ও মর্ত্য দখল করে ফেললেন বিষ্ণু। এরপর নাভি থেকে বের হয়ে এলো আরেক পা, যা রাখলেন বলি রাজার মাথার উপর। সঙ্গে সঙ্গেই পাতালে নেমে গেলেন দানবরাজ বলি। সেই থেকে পাতালই হল তার বসবাস।‌ বলিরাজ জেনে বুঝে দান করেছিলেন বলে, ভগবান বিষ্ণু রাজা বলির নরকাসুর রূপের পুজোর প্রবর্তন করেন। নরকাসুররূপী রাজা বলি কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশীর তিথিতে অসংখ্য অনুচর-সহ ভূত, প্রেত নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন পুজো নিতে। অর্থাৎ, যা বোঝা গেল সবটা জুড়েই খাওয়াদাওয়া, খুশি উদযাপন আর মঙ্গলকামনার উৎসব। ভীতি যদি মনকে চেপে বসে তবে তাকেও উপভোগ করে 'থোরাই কেয়ার!' বলার মধ্যে যে মজা আছে সেটা যে সব সভ্যতার ক্ষেত্রেই সত্যি, এই দুই উৎসব যেন সেই সত্যিই বলে যায় সহজ করে।"

 

 

 

ওই পোস্টের মন্তব্যে ভূত চতুর্দশী‌র দিন অপরাজিতার ভূত-জ্ঞানের প্রশংসাও করেছেন‌ অনেক নেটিজেন।