মুম্বইয়ে কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টির জেরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জল জমে বিপর্যস্ত জনজীবন। সেই জলাবদ্ধতার কবল থেকে রেহাই পেল না বলিউডের মহাতারকা অমিতাভ বচ্চনের প্রিয় আবাস ‘প্রতীক্ষা’। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবি ও ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, জুহুর ঐতিহাসিক এই বাড়ির সামনে হাঁটু পর্যন্ত জল জমে গিয়েছে।

অমিতাভের প্রথম বাড়ি ‘প্রতীক্ষা’ এখন তাঁর মেয়ে শ্বেতা বচ্চন নন্দার নামে নিবন্ধিত। ছড়িয়ে পড়া ওই ছবিতে দেখা গিয়েছে, বাড়ির চারপাশে গাড়িগুলো প্রায় টায়ার পর্যন্ত ডুবে আছে। এমনকী জলমগ্ন রাস্তায় মানুষজনকে কষ্ট করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এক ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, এক বাবা ও তাঁর ছোট মেয়ে আনন্দে জমা  জলের ভেতর দিয়ে হাঁটছেন, যা আবারও প্রমাণ করে দিয়েছে—মুম্বইয়ের বৃষ্টি একদিকে বিপর্যয় ডেকে আনলেও অন্যদিকে শহরের মানুষকে ভিজিয়ে দেয় আলাদা আনন্দে।

'প্রতীক্ষা' নামের বাড়িটি অমিতাভ ১৯৭৬ সালে কিনেছিলেন, সুপারহিট ছবি 'শোলে'র সাফল্যের পর। বহু স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে বচ্চন পরিবারের অন্যতম প্রধান আস্তানা। বর্তমানে এই বাড়ির বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হয়। শুধু প্রতীক্ষা নয়, অমিতাভের আরও দুটি বিখ্যাত জুহুর বাড়ি—‘জলসা’ ও ‘জনক’। কয়েক মাস আগে শোনা গিয়েছিল, প্রায় ৩১৬০ কোটি টাকার সাম্রাজ্যকে তিনি সমানভাবে সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সে অনুযায়ী প্রত্যেকের প্রায় ১৬০০ কোটি টাকার সম্পদ ভাগে পড়তে পারে।

 

আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর কাণ্ড! ডেলিভারি বয়ের ছদ্মবেশে মন্নতে ঢোকার চেষ্টা, কার তোপের মুখে শাহরুখ খান?

 

মুম্বই শহরে বর্ষা মানেই জলজট, রাস্তার বিশৃঙ্খলা আর নাগরিক দুর্ভোগ। তবুও প্রতিবছরই এই দৃশ্য নতুন করে আলোচনায় আসে। এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে অমিতাভের প্রতীক্ষা। একসময়ের কিংবদন্তি নায়কের জীবনের সঙ্গে জড়িত এই স্থাপনা ভক্তদের কাছে একটি আবেগ। তাই বাড়ির চারপাশে জমে থাকা জলের দৃশ্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছে। যদিও অমিতাভ বা পরিবারের কারও পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।

 

প্রসঙ্গত, বলিউডের অ্যাংরি ইয়ং ম্যান-এর তকমা পেয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। পর্দায় দীর্ঘদেহী, সুঠাম চেহারার যুবকের গাম্ভীর্য মন জয় করেছিল দর্শকের। এর পর পেরিয়েছে কয়েক দশক। সেই যুবক এখন ৮২-র বৃদ্ধ। বয়সের ভারে অনেকটাই ন্যুব্জ। অতীতের সেই শক্তি, মেজাজ এখন খানিক আবছা। নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুললেন বর্ষীয়ান অভিনেতা।

 

১৭ আগস্ট, রবিবার নিয়ম মেনেই বাড়ির বাইরে ভক্তদের সঙ্গে দেখা করেন অমিতাভ। তারপরেই ব্লগে লেখেন তাঁর দৈনন্দিন জীবনের নানা পরতের কথা। অভিনেতা লেখেন, ‘শরীর ক্রমাগত ভারসাম্য হারাচ্ছে। সেটাকে ঠিক রাখতে এবং সারিয়ে তুলতে পরিশ্রম করতে হয়।’

 

দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কাজগুলি করতেও বেগ পেতে হয় এখন। তেমনই জানিয়েছেন অমিতাভ। তিনি মনে করেছিলেন, কয়েক বছর আগে যে কাজগুলি করতেন, সেগুলি নতুন করে শুরু করা খুব কঠিন হবে না। তবে সময় তাঁকে ভুল প্রমাণ করেছে। একদিন কোনও কারণে চর্চার বাইরে থাকলেও ব্যথা বশ করে ফেলে শরীরকে। হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকি, পায়ে ট্রাউজাটুকু গলাতেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি জানান, চিকিৎসক তাঁকে কোথাও একটা বসে ট্রাউজার পরার উপদেশ দিয়েছেন।