শুরুটা হয়েছিল রূপকথার মতো। রাতারাতি বদলে গিয়েছেল জীবন। প্রথম ছবি ‘কহো না… প্যায়ার হ্যায়’ ঝড় তুলেছিল বক্স অফিসে। আর দর্শক-হৃদয়ে ঝড় তুলেছিলেন আমিশা পটেল।
বড় পর্দার সঙ্গে তৈরি হয়েছে দূরত্ব। খোলামেলা স্বভাব, সৌন্দর্য এবং নির্ভীক যাপনের জন্য এখনও পরিচিত আমিশা। এক সময় একেবারেই বহিরাগত হয়েও নিজের প্রথম ছবির মাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে। তবে, ‘কহো না... প্যার হ্যায়’-এর মতো বিশাল সাফল্য সত্ত্বেও তিনি ইন্ডাস্ট্রি থেকে প্রাপ্য স্বীকৃতি পাননি বলেই মনে করেন তিনি। সম্প্রতি ‘গদর’ অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তার সোজাসাপ্টা স্বভাবের কারণে ইন্ডাস্ট্রির ভিতরের মহলে তাঁকে বিশেষ পছন্দ করা হত না।
হৃতিকের নায়িকা কথায়, “শেষ পর্যন্ত আসল জিনিস হল দর্শকের ভালবাসা, আপনি কোন ক্যাম্পে আছেন তা নয়। হ্যাঁ, আমি কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি। আমি মদ খাই না, ধূমপান করি না, কাজ পাওয়ার জন্য তোষামোদ করি না। তাই আমি যা অর্জন করি, তা আমার দক্ষতার উপর নির্ভর করে। এর ফলে কিছু মানুষের কাছে আমি কম পছন্দের হয়ে উঠেছি। আমি কারও কাছে মাথা নত করতে রাজি নই।”
প্রথমে ‘কহো না...’ নায়িকা হিসাবে মনোনীত হয়েছিলেন করিনা কাপুর খান। শুরু হয়ে গিয়েছিল শুটিং। কিন্তু মাঝপথেই সরে আসেন রণধীর-ববিতার কন্যা। সুযোগ পান আমিশা। স্মৃতির পাতা উল্টে তিনি বলেন, “আমি কিন্তু প্রথম পছন্দ ছিলাম না। করিনা আর পরিচালক রাকেশ রোশনের মধ্যে মতভেদ এবং তাঁর আচরণে অসন্তুষ্টি থাকার কারণে তাকে ছবিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরপরেই আমার সুযোগ আসে। যদি আমি কোনও ফিল্মি পরিবার থেকে আসতাম, তাহলে হয়তো প্রথম থেকেই আমার নাম বেছে নেওয়া হত।”
স্বজনপোষণ নিয়ে সরব আমিশা। তাঁর কথায়, “ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার বয়ফ্রেন্ড বা স্বামী না থাকলে কাজ আরও কঠিন হয়ে যায়। ‘পাওয়ার কাপল’ না হওয়ার কারণে আপনার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ থাকে না। তাঁদের কাছে আপনাকে সমর্থন করার মতো কোনও উৎসাহও থাকে না। আপনি একজন বহিরাগত।”
তিনি আরও যোগ করেন, বলিউডের বৃত্তে তারকা-সন্তান এবং ইনসাইডাররা ছোটবেলা থেকেই স্বজনপোষণ এবং ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতির মধ্যে বেড়ে ওঠেন। কিন্তু তিনি সব কিছু শিখেছেন অভিজ্ঞতা আর ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে— যা একজন বহিরাগত শিল্পীর জন্য অনেক বড় সংগ্রাম।
বলিউডের নায়ককেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নতুনত্ব গল্পের ঘাটতি নিয়েও আমিশা বক্তব্য রাখেন। তিনি উল্লেখ করেন, বেশিরভাগ সময়েই বলিউডে সিনেমার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন নায়ক। অথচ নায়িকাদের চরিত্র এবং গল্পকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। একই ধরনের প্লট ঘুরে-ফিরে আসে, ফলে নতুনত্ব আর সৃজনশীলতা কম দেখা যায়।
