আলিশা চিনয়। বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় গায়িকার সঙ্গে সঙ্গীতপরিচালক অনু মালিকের বিতণ্ডার কথা কারও অজানা নয়। অনুকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে আদালতে নিয়ে গিয়েছিলেন আলিশা। সম্প্রতি অতীতের সেই তিক্ত কথা ফের স্মরণ করেন তিনি। জানান, অনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে কোণঠাসা করে দেওয়া হয় তাঁকে। একা হয়ে পড়েন আলিশা। তাঁর কাজও থেমে যায়। তবে তিনি হতাশ হননি।
এক সাক্ষাৎকারে আলিশা জানান, ২০১৮ সালের #মিটু আন্দোলনের সময় তিনি এমন নারীদের সমর্থন করেছিলেন, যাঁরা অনু মালিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু কেন এত কিছুর পরেও ২০০৩ সালে তিনি অনুকে ক্ষমা করেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে আবার কাজ করেছিলেন, সেই ব্যাখ্যাও দেন গায়িকা।
আলিশা বলেন, “আমার মনে হয়, ওরা আমার অভিযোগকে পাত্তা দেয়নি। তখন এটি মূলত পুরুষ-প্রধান জগৎ। আমি তখন বিবাহিত ছিলাম, এবং আমার স্বামী রাজেশ আমার অনেক কাজ দেখাশোনা করতেন। তিনি আমাকে সমর্থন করেছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “রাজেশ বলেছিল, আমি প্রতিবাদ করব। আমি প্রথমে বলেছিলাম, ‘না, এসব ভুলে যাই’। কিন্তু ও বলে, আমি প্রতিবাদ করতে পারি। তাই পিছিয়ে না গিয়ে আমার তা করা উচিত। তখন সামান্য সাহস পেলাম। এভাবেই পুরো ঘটনাটি ঘটেছিল।”
সেই সময়টা আলিশার জন্য কঠিন ছিল। কিন্তু তিনি হেরে যাননি। সব সময় মনোবল ধরে রেখেছিলেন এবং অন্য নারীদেরও সাহস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আলিশা জানান, অনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করার তাঁকে একঘরে করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “আমার অধিকাংশ গান অনু মালিকের সঙ্গে ছিল। অবশ্যই কিছু গান ছিল বাপ্পিদার (লাহিড়ি) সঙ্গে, এবং আমার আরও কিছু কাজ ছিল। কিন্তু সেই ঘটনার পর আমার অনেক কাজ থেমে যায়। আমি ঠিক করেছিলাম যে, সব ভুলে যাব। ওরা আমাকে আলাদা করে দিলেও সেটা আমার উপর প্রভাব ফেলেনি।”
আলিশা আরও জানান, তখন কেউ তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। “আমার মুখ খোলার পরে কেউ আমার সহায়তা করেনি। এটা খুব হতাশাজনক ছিল,” তিনি বলেন।
আলিশা জানিয়েছেন, #মিটু আন্দোলনের সময়, অনু মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা নারীরা তাঁর সমর্থন চেয়েছিলেন। প্রথমে তিনি কিছুটা দ্বিধান্বিত ছিলেন, কারণ নয়ের দশকে কেউ তাঁকে সমর্থন করেনি। তবে পরে তিনি তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
আলিশা এবং অনু কয়েক বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করেননি। তবে ২০০৩ সালে তারা আবার একসঙ্গে কাজ করেন ‘ইশক ভিশক’ ছবিতে। পরে তাঁরা ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এ বিচারকের ভূমিকায়ও উপস্থিত হন।
আলিশা জানিয়েছেন, প্রায় দশ বছর পর তারা আবার একসঙ্গে কাজ করেন। কুমার টৌরানি তাঁকে আশ্বাস দেন যে, সকলে বদলে গিয়েছেন এবং তাঁরা ঠিকভাবে আচরণ করবে। আলিশা প্রথমে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। পরে তাঁরা বৈঠকে বসেন। অনু তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পুনরায় কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
