সংবাদ সংস্থা মুম্বই: একজন জনপ্রিয় গায়ক হওয়ার পাশাপাশি  সুরকার ও পিয়ানোবাদক-ও বটে তিনি। তিনি, আদনান সামি। ২০১৬ সালে পাকিস্তানের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি। ‘তেরা চেহরা’, ‘লিফট করাদে’, ‘ভর দো ঝোলি মেরি’র মতো গান তাঁকে এনে দিয়েছে দারুণ জনপ্রিয়তা। সম্প্রতি জীবনের এক গভীর ব্যক্তিগত কষ্টের কথা জানালেন আদনান।

 

আদনান জানালেন, পাকিস্তান সরকার তাঁকে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছিল ২০২৪ সালে, যখন তাঁর মা বেগম নওরিন প্রয়াত হন। তিনি বললেন, "আমার মা পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন, হঠাৎই প্রয়াত হলেন। আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। আমি সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করি। ভারত সরকারের কাছে জিজ্ঞেস করি, আমার পাকিস্তান যাওয়া নিয়ে কোনও আপত্তি আছে কিনা। ওঁরা একেবারে স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আপনার মা প্রয়াত করেছেন, আপনার অবশ্যই যাওয়া উচিত।’ ভারত সরকারের তরফে কোনও বাধা ছিল না।”

 

কিন্তু তারপরেই ঘটল এক মর্মান্তিক ব্যাপার। পাকিস্তান থেকে স্পষ্ট জানানো হয়, আদনানকে ভিসা দেওয়া হবে না। ফলে মায়ের শেষ যাত্রা তিনি দেখতে বাধ্য হন মোবাইলের পর্দায়— হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কলের মাধ্যমে!  আদনান বলেন, “আমি লিখে জানাই যে আমার মা মারা গেছেন। তবু ভিসা দিল না। আমি যেতে পারলাম না। পুরো জানাজা দেখতে হল হোয়াটসঅ্যাপ কলের ভিডিওতে।”

 

এই সাক্ষাৎকারে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মুখ খোলেন তিনি। বহুবার তাঁকে ট্রোল করা হয়েছে এই নিয়ে যে আর্থিক সুবিধা পেতে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে আদনান স্পষ্ট জানান, "আমি অত্যন্ত ধনী পরিবারে জন্মেছি। ভারত আসার জন্য আমি অনেক সম্পত্তি পেছনে ফেলে এসেছি।" অর্থাৎ সোজা কথায়, অর্থের জন্য নয়, বরং নিজের সিদ্ধান্তে তিনি আজ এই দেশেই থাকতে চান।

 

এই সাক্ষাৎকারে আদনান সামির চোখের জল যেন শুধু একজন সন্তানের নয়—একজন শিল্পীর, যিনি দেশের সীমানার ঊর্ধ্বে উঠে শুধুই একজন সন্তানের মতো অনুভব করতে চেয়েছিলেন নিজের  মায়ের শেষবিদায়।