সংবাদ সংস্থা মুম্বই: মিঠি নদী পরিষ্কারের নামে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ—এবার সেই মামলায় মুম্বই পুলিশের ইকোনমিক অফেন্সেস উইং (EOW)-এর মুখোমুখি হলেন বলিউড অভিনেতা দিনো মোরিয়া। এদিন সোমবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে।

 

পুলিশ সূত্রে খবর, দিনো এবং তাঁর ভাইয়ের নাম উঠে আসে মামলার মূল অভিযুক্ত কেতান কাদম এবং জয় জোশীর কল রেকর্ড ঘেঁটে দেখার সময়। তদন্তকারীদের দাবি, ওই দুই অভিযুক্তের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ ছিল দিনো ও তাঁর ভাইয়ের। বর্তমানে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে—তাঁদের কি কোনও ভূমিকা ছিল, কিংবা তাঁরা অভিযুক্তদের কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতেন কি না—সেটাই জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

 


প্রসঙ্গত, মামলাটি মূলত মুম্বই মহানগর পালিকা (BMC)-র মিঠি নদী থেকে কাদা পরিষ্কারের জন্য ৬৫ কোটি টাকার একটি টেন্ডার নিয়ে। অভিযোগ, বিএমসি-র একাধিক আধিকারিক, কেরল-ভিত্তিক একটি সংস্থা ম্যাটপ্রপ, এবং ‘মেশিন রেন্টিং’ ব্যবসায়ী কেতান কাদম ও জয় জোশীর মধ্যে গোপনে আঁতাত হয়।

ইকোনমিক অফেন্সেস উইং (EOW)-র অভিযোগ অনুযায়ী, বিএমসি-র একটি টিম প্রথমে কেরলের  ম্যাটপ্রপ সংস্থার প্লান্ট ঘুরে আসে। পরে ঠিক সেই কোম্পানির নির্দিষ্ট মেশিনের উল্লেখ করে টেন্ডার ডাকা হয়—ফলে টেন্ডার পেতে হলে যে কোনও কনট্রাক্টরকে ম্যাটপ্রপ থেকেই মেশিন কিনতে বা ভাড়া নিতে হত। তদন্তে উঠে এসেছে, এক বিএমসি আধিকারিক যন্ত্র কিনতে গেলে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কেতান কাদম এবং জয় জোশীর কাছে, যাঁরা এই ধরণের যন্ত্র ভাড়া দিয়ে থাকেন। প্রথমে তাঁরা ৮ কোটি টাকার দাবি করলেও পরে ৪ কোটিতে চুক্তি হয়।


সাধারণত প্রতি মেট্রিক টনে কাদা পরিষ্কারের খরচ যেখানে ১৬০৯ টাকা, সেখানে ওই  যন্ত্র ব্যবহার করে সেটা বাড়িয়ে দেওয়া হয় ২১৯৩ টাকা। বিএমসি-র ভিজিল্যান্স বিভাগ আপত্তি জানালে, পুরনো রেটই মেনে নেওয়া হয়, কিন্তু ততদিনে ১৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট কনট্রাক্টরদের। তদন্তে জানা গিয়েছে, স্লাজ শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ভুয়ো বিল বানিয়ে সেই টাকাও আদায় করা হয়েছে।
 
এই মামলায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ম্যাটপ্রপ-এর দীপক মোহন এবং কিশোর মেনন। তবে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন শুধুমাত্র কেতান কাদম ও জয় জোশী।

অভিনেতা দিনো মোরিয়া সরাসরি অভিযুক্ত না হলেও, তাঁর যোগাযোগ ও ভূমিকা ঘিরে তদন্তে নেমেছে ইকোনমিক অফেন্সেস উইং (EOW)।