আজকাল ওয়েবডেস্ক: বলিউডে ‘কাস্টিং কাউচ’ নিয়ে আলোচনা শোনা যায় মাঝেমধ্যেই। বিভিন্ন সময়ে বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী এই নিয়ে মুখ খুলেছেন। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল অভিনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। প্রসঙ্গত, পর্দার ‘হাথোরা ত্যাগী’ শুধু অভিনেতা নন, নিজে একজন কাস্টিং সংস্থার কর্ণধারও। সেই দিক থেকে অভিষেকের মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে অভিষেক স্বীকার করেছেন, একটা সময় বলিউডে কাজের বিনিময়ে যৌন সুবিধা চাওয়াটা খুবই সাধারণ একটি বিষয় ছিল। তবে তাঁর মতে, ‘মিটু’ আন্দোলনের পর সেই প্রবণতায় কিছুটা হলেও বদল এসেছে। অভিনেতা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর সংস্থা বরাবরই যোগ্যতাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। পাশাপাশি কোনও কর্মী যাতে এই ধরনের অনৈতিক কাজে লিপ্ত না হন, তা নিশ্চিত করেছেন তিনি।
‘মিটু’ আন্দোলনের পর বলিউডে কী পরিবর্তন এসেছে, এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অভিষেক বলেন, “আমার আশা এবং বিশ্বাস, ‘মিটু’-র পর থেকে কফি শপ বা ডিনারে মিটিংয়ের ছল অনেকটাই কমেছে। আমার মনে হয়, এটাই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। আমি যখন আমার মহিলা সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলি, তখন বুঝতে পারি যে তাঁরা এখন অনেক বেশি সচেতন। ছেলেরা আর আগের মতো সরাসরি কিছু বলার সাহস পায় না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “একটা সময় কাস্টিংয়ের জন্য কফি শপ বা ডিনারে দেখা করার একটা জোরদার চল ছিল, যা আমি কোনও দিনই বুঝতে পারতাম না। আমার কাস্টিং সংস্থায় আমি কড়া নিয়ম করেছিলাম যে, অফিসের বাইরে কোনও অভিনেতার সঙ্গে দেখা করা যাবে না। আর যদি কেউ অফিসের বাইরে দেখা করেন, তবে তিনি কাস্টিং ডিরেক্টর হিসেবে সেই সাক্ষাৎ করছেন না। আমার সংস্থার কেউ কাস্টিংয়ের জন্য কফি শপে দেখা করেছেন, একথা আমার কানে আসলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে বরখাস্ত করা হত।”
আরও পড়ুন: পর্ন দেখলে লিঙ্গ শিথিলতার আশঙ্কা বাড়ে? বিস্ফোরক তথ্যে চিন্তা বাড়ালেন গবেষকরা
অভিষেক জানান, যৌন সুবিধা চাওয়ার ঘটনা এতটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল যে, তাঁর সংস্থা যখন এই ধরনের কোনও অনৈতিক কাজ করত না, তখন অভিনেতারাই অবাক হয়ে যেতেন। অন্যান্য কাস্টিং অফিসে ‘ফ্লার্টিং’ ছিল রোজকার ঘটনা। কিন্তু তিনি নিজের সংস্থায় এই ধরনের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হতে দেননি।
অভিনেতার কথায়, “আমার মনে আছে, যখন আমি কাস্টিং করতাম, তখন অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইতেন না যে আমরা কোনও যৌনতা ছাড়াই কাজ করছি। আমরা যে শুধু কাজটাই করছি, এটা তাঁদের বোঝানো কঠিন ছিল।”
অভিষেক তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বলেন, “এমনও অভিজ্ঞতা হয়েছে যে, কাউকে কাস্ট করার পর তিনি এসে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘ওহ্, তা হলে এখন কবে?’ আমি অবাক হয়ে বলতাম, ‘মানে? আপনি এক জন অসাধারণ অভিনেতা। সেই সত্যিটা আপনি মেনে নিতে পারছেন না কেন?’ তাঁকে যে কোনও অভিসন্ধি ছাড়াই সুযোগ দেওয়া হয়েছে, এটা অনেকেই বিশ্বাস করতে পারতেন না। এই ধরনের ঘটনা হামেশাই ঘটত।”
