আজকাল ওয়েবডেস্ক: আপনি যদি বাড়ি, ফ্ল্যাট বা অন্য কোনও স্থাবর সম্পত্তি কেনেন, তবে মনে রাখতে হবে যে- শুধুমাত্র সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন করলেই আপনার মালিকানা প্রমাণিত হয় না। ২০২৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে এটা স্পষ্ট করা হয়েছে যে, শুধুমাত্র কোনও স্থাপনার রেজিস্ট্রেশন করলেই আপনি সেটির মালিক হয়ে যাবেন না। মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য রেজিস্ট্রেশন এবং মিউটেশন উভয়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মিউটেশনের পরেই রাজস্ব বিভাগে সম্পত্তির মালিক হিসেবে আপনার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত হয়। সুপ্রিম কোর্ট মাহনূর ফাতিমা ইমরান বনাম তেলেঙ্গানা রাজ্য মামলায় এই রায় দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কী বলা হয়েছে?
যদি কোনও ব্যক্তি শুধুমাত্র সম্পত্তির রেজিস্ট্রির মাধ্যমে বাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট বা অন্য কোনও স্থান-সহ কোনও সম্পত্তি বিক্রি করেন, তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অর্জিত সম্পত্তির মালিকানা বা স্বত্ব প্রমাণ করতে পারবেন না। এর কারণ হল, যেকোনও সম্পত্তির ক্রয়-বিক্রয় বিভাগের সরকারি নথিতে রেকর্ড করা হয়। মালিকানা প্রমাণের জন্য রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও আরও কয়েকটি অপরিহার্য উপাদানের প্রয়োজন হয়, যার মধ্যে রয়েছে সম্পত্তির দলিল, মূল দলিল, দায়মুক্তির দলিল এবং মিউটেশন নথি।

মালিকানা প্রমাণের জন্য কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন?
যেকোনও সম্পত্তির মালিকানা প্রমাণের জন্য শুধুমাত্র রেজিস্ট্রেশন লাইসেন্সই যথেষ্ট নয়; এর জন্য আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল মূল দলিল (মাদার ডিড)। এই দলিল থেকে ব্যক্তির বসবাসের স্থান, সম্পত্তি বা জমির উৎস এবং জমিটি পূর্বে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ছিল কিনা, তা জানা যায়। এই নথিটি সম্পত্তির সম্পূর্ণ ইতিহাস প্রকাশ করে।

মূল দলিল ছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নথি হল দায়মুক্তির দলিল (এনকামব্রেন্স সার্টিফিকেট)। যে সম্পত্তিটি কেনা হচ্ছে তা কোনও পূর্ববর্তী ঋণ, দায় বা বিচারাধীন মামলার অধীনে রয়েছে কিনা সেই নথিটি যাচাই করতে সাহায্য করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি হল মিউটেশন বা নামজারি দলিল। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের পর সরকারি নথিতে মালিকের নাম নথিভুক্ত হয়। যদি এই নথিটি প্রদান করা না হয়, তবে সরকারি নথিতে পূর্ববর্তী মালিকের নামই রেকর্ড করা থাকে এবং মালিক হিসেবে আপনার নাম তালিকাভুক্ত করা হয় না।

আপনাকে এটিও নিশ্চিত করতে হবে যে, পূর্ববর্তী মালিক সমস্ত প্রযোজ্য কর পরিশোধ করেছেন, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল  সম্পত্তি কর। পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই না করে আপনি যদি কোনও পদে আবেদন করেন, তবে আপনাকে সম্পত্তির কাগজপত্র জমা দিতে হতে পারে।