আজকাল ওয়েবডেস্ক: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) ২০২৩ সালের মে মাসে ২০০০ টাকার নোটের ব্যবহার প্রায় তুলে নেওয়ার ঘোষণা করে। ফলে দৈনন্দিন লেনদেনে এই নোটের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। ছোট অঙ্কের নোট এবং ডিজিটাল পেমেন্টের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের ফলে, ২০০০ টাকার নোটগুলি লেনদের ক্ষেত্রে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। তাই, আরবিআই তার 'ক্লিন নোট পলিসি'-র অধীনে ধীরে ধীরে ২০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

২০০০ টাকার নোট এখনও বৈধ মুদ্রা
আরবিআই বেশ কয়েকবার স্পষ্ট করেছে যে, ২০০০ টাকার নোট এখনও বৈধ। এর মানে হল, এগুলির আইনি বৈধতা শেষ হয়ে যায়নি। তবে, বাস্তবে বেশিরভাগ ব্যাঙ্ক এবং খুচরা দোকান দৈনন্দিন লেনদেনে এই নোটগুলি গ্রহণ করে না। তাই, জনসাধারণকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এগুলি জমা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কত নোট এখনও প্রচলনে আছে?
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ইস্যু করা মোট ২০০০ টাকার নোটের প্রায় ৯৮.৩৭ শতাংশ ফেরৎ এসেছে। তা সত্ত্বেও, প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকার নোট এখনও বাজারে ঘোরাফেরা করছে। এই কারণেই আরবিআই ক্রমাগত জনসাধারণকে অবশিষ্ট নোটগুলি জমা দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছে।

এখন কোথায় নোট জমা বা বিনিময় করা যাবে?
সারা দেশের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতে ২০০০ টাকার নোট বিনিময় বা জমা দেওয়ার সুবিধা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শেষ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে, এই সুবিধাটি শুধুমাত্র আরবিআই-এর ১৯টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে উপলব্ধ। এই কার্যালয়গুলি আমেদাবাদ, মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, পাটনা, জয়পুর, কানপুর এবং লখনউ-এর মতো প্রধান শহরগুলিতে অবস্থিত। এছাড়াও, ডাকঘরের মাধ্যমে নোট পাঠিয়েও আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া যেতে পারে।

নোট জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
আরবিআই-এর বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, নোট জমা দিতে আসা ব্যক্তিকে পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে তাঁর আধার কার্ড এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে একটি ফর্ম পাওয়া যায়, যা নোট এবং পরিচয়পত্রের প্রমাণের সঙ্গে পূরণ করে জমা দিতে হবে। টাকাটি সঠিক অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে তা নিশ্চিৎ করতেই এই পদ্ধতি চালু রয়েছে।

বিভ্রান্তি এড়াতে পরামর্শ
২০০০ টাকার নোট নিয়ে এখনও অনেকে বিভ্রান্তিতে আছেন। কেউ কেউ মনে করছেন যে এই বিলম্বের কারণে নোটগুলো মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে বা তাদের মূল্য হারাতে পারে, কিন্তু বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। আরবিআই স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে নোটগুলোর মূল্য সম্পূর্ণ সুরক্ষিত এবং মানুষ নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনও চিন্তা ছাড়াই সেগুলো জমা দিতে পারবে।

২০০০ টাকার নোটের ইতিহাস
২০০০ টাকার নোটগুলো ২০১৬ সালের নভেম্বরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আইন, ১৯৩৪-এর ২৪(১) ধারা অনুসারে জারি করা হয়েছিল। নোটবন্দি পর দেশের নগদ অর্থের চাহিদা মেটাতে এগুলো চালু করা হয়েছিল। তবে, ২০১৮-১৯ সালের পর এগুলোর মুদ্রণ বন্ধ করে দেওয়া হয়, কারণ এগুলোর ব্যবহার প্রত্যাশার চেয়ে কম ছিল।