আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রতি বছর লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া বহু পেনশনভোগীর কাছেই মানে ছিল ভোরে বেরোনো, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো আর অগণিত কাগজপত্রের ঝামেলা। অসুস্থতা, বাড়ির বাইরে থাকা বা শারীরিক ক্লান্তির কারণে এই কাজ অনেকের কাছেই বড় চাপ হয়ে উঠত। এখন ফেস অথেন্টিকেশন প্রযুক্তির মাধ্যমে সেই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়েছে। শুধু একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করে বাড়িতে বসেই ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া সম্ভব, যা সরাসরি ইলেকট্রনিকভাবে পেনশন প্রদানকারী দপ্তরে পৌঁছে যায়।


এই প্রক্রিয়াটি কীভাবে সহজে করবেন, তার ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা দেওয়া হল।
শুরুতেই প্রয়োজনীয় তথ্য জোগাড় করুন
অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে সব তথ্য এক জায়গায় রাখুন। পেনশনভোগীর আধার নম্বর, পিপিও নম্বর, আধারের সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বর প্রস্তুত রাখুন। পাশাপাশি ব্যাঙ্ক ও পেনশন প্রদানকারী দপ্তরের বিবরণও হাতের কাছে রাখলে পরে ভুলের সম্ভাবনা কমে।


ভাল ফ্রন্ট ক্যামেরাযুক্ত ফোন ব্যবহার করুন
পেনশনভোগীর নিজের স্মার্টফোন না থাকলেও সমস্যা নেই। পরিবারের কারও ফোন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ফোনে ভাল ফ্রন্ট ক্যামেরা, ইন্টারনেট সংযোগ এবং আপডেটেড সফটওয়্যার থাকা জরুরি। খুব পুরনো ফোন বা খারাপ ক্যামেরা হলে ফেস স্ক্যান বারবার ব্যর্থ হতে পারে।


শুধু সরকারি অ্যাপই ডাউনলোড করুন
সাধারণত দুটি অ্যাপ দরকার হয়—একটি আধার ফেস অথেন্টিকেশনের জন্য এবং অন্যটি জীবন প্রমাণ ফেস অ্যাপ। এগুলি শুধুমাত্র অফিসিয়াল অ্যাপ স্টোর থেকেই ডাউনলোড করুন। হোয়াটসঅ্যাপ লিংক বা অচেনা ফোনকলের মাধ্যমে পাঠানো লিংক এড়িয়ে চলুন। অনেক সময় ফেস অথেন্টিকেশন অংশটি ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করে, তাই আলাদা করে অ্যাপ খুলতে নাও হতে পারে।


একবার অপারেটর অথেন্টিকেশন সম্পন্ন করুন
প্রথমবার জীবন প্রমাণ অ্যাপ খুললে অপারেটর অথেন্টিকেশন চাইতে পারে। এটি একটি সেটআপ ধাপ, যা পেনশনভোগী বা পরিবারের কেউ সম্পন্ন করতে পারেন। একবার হয়ে গেলে সাধারণত বারবার করার দরকার হয় না।


তথ্য সঠিকভাবে দিন, তারপর ফেস স্ক্যান করুন
এই ধাপে সবচেয়ে বেশি সতর্কতা প্রয়োজন। আধার নম্বর, পিপিও নম্বর, ব্যাঙ্কের নাম, পেনশন দপ্তরের বিবরণ ও মোবাইল নম্বর ঠিকঠাক দিন। বিশেষ করে পিপিও নম্বর দু’বার দেখে নিন।
ফেস স্ক্যানের সময় উজ্জ্বল আলোতে বসুন, মুখের সামনে আলো পড়ছে কি না নিশ্চিত করুন। ফোন চোখের সমতলে ধরে স্থির রাখুন। বারবার ব্যর্থ হলে আলো বা জায়গা বদলে আবার চেষ্টা করুন।


স্বীকৃতি ও জীবন প্রমাণ আইডি সংরক্ষণ করুন
সফলভাবে জমা হলে একটি জীবন প্রমাণ আইডি দেখাবে এবং সাধারণত এসএমএসও আসে। আইডিটি নোট করে রাখুন বা স্ক্রিনশট নিন। সাধারণত আলাদা করে কোথাও জমা দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

&t=315s


লাইফ সার্টিফিকেটের সময় প্রতারণার ফোন বাড়ে। কোনও বৈধ প্রক্রিয়ায় ওটিপি শেয়ার করা, অচেনা অ্যাপ ইনস্টল করা বা ফোনে রিমোট অ্যাক্সেস দেওয়ার দরকার হয় না। সন্দেহ হলে ব্যাঙ্ক বা স্বীকৃত পরিষেবা কেন্দ্রে গিয়ে কাজ করুন।


এই ডিজিটাল ব্যবস্থার ফলে পেনশনভোগীদের বার্ষিক একদিনের দৌড়ঝাঁপ এখন বাড়িতে বসেই শান্তভাবে শেষ করা সম্ভব, আর পেনশন পেতে দেরি হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটাই কমে যায়।