আজকাল ওয়েবডেস্ক: আপনার নিয়মিত বিনিয়োগ যদি কর্মচারী ভবিষ্যনিধি (EPF)-তে করা হয়, তবে তা অবসরের জন্য একটি বিশাল তহবিল গড়ে তুলতে পারে। প্রতি মাসে মাত্র ৫,০০০ টাকা জমা করলে, বেতন বৃদ্ধির সুবিধা ও বার্ষিক ৮.২৫% সুদসহ, অবসরের সময় আপনার ইপিএফ সঞ্চয় প্রায় ৩.৫ কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।


কর্মচারী ভবিষ্যনিধি (EPF) হল একটি অবসরকালীন সঞ্চয় প্রকল্প, যা EPFO (Employees’ Provident Fund Organisation) দ্বারা পরিচালিত হয়। এই প্রকল্পে কর্মী (মৌলিক বেতনের ১২%) এবং নিয়োগকর্তা (কর্মীর মৌলিক বেতনের ৩.৬৭%) উভয়েই অর্থ জমা করেন। এটি একটি বাধ্যতামূলক অবদান, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সঞ্চয়ের শৃঙ্খলা তৈরি করে। তাছাড়া, ইপিএফ সরকার নির্ধারিত স্থির সুদ দেয়, পাশাপাশি পেনশন ও বীমার মতো অতিরিক্ত সুবিধাও প্রদান করে।

আরও পড়ুন: ৩১ আগস্ট থেকে বন্ধ হয়ে যাবে পেটিএম ইউপিআই! কী জানাল কর্তৃপক্ষ


EPF নিয়ম অনুযায়ী:
নিয়োগকর্তা কর্মীর মৌলিক বেতনের ১২% ইপিএফ-এ জমা করেন।
নিয়োগকর্তাও সমপরিমাণ অর্থ জমা করেন।
এর মধ্যে ৮.৩৩% চলে যায় EPS (Employees’ Pension Scheme)-এ এবং বাকি ৩.৬৭% কর্মীর ইপিএফ অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
EPS ভবিষ্যতে পেনশনের সুবিধা দেয়।
বর্তমানে সরকার ইপিএফ-এ ৮.২৫% বার্ষিক সুদ দিচ্ছে।

ধরা যাক, একজন কর্মীর মাসিক বেতন ৬৪,০০০ টাকা। এর মধ্যে মৌলিক বেতন (Basic Pay) ৩১,৯০০ টাকা, HRA (হাউস রেন্ট অ্যালাউন্স) ১৫,৯৫০ টাকা (মৌলিকের ৫০%), এবং অন্যান্য ভাতা ১৬,১৫০ টাকা।


হিসাব:
মৌলিক বেতনের ১২% = ৩,৮২৮ টাকা প্রতি মাসে
মৌলিক বেতনের ৩.৬৭% = ১,১৭২ টাকা প্রতি মাসে
মোট প্রায় ৫,০০০ টাকা প্রতি মাসে ইপিএফ অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
ধরা যাক, প্রতি বছর বেতন অন্তত ১০% হারে বাড়ে, তবে ইপিএফ-এ জমার পরিমাণও প্রতি বছর বাড়বে। এর সঙ্গে নিরবচ্ছিন্নভাবে ৮.২৫% সুদও জমা হতে থাকবে।


ফলে, যদি কেউ ২৫ বছর বয়সে চাকরি শুরু করে এবং ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত (৩৩ বছর) নিয়মিত অবদান রাখেন, তবে অবসরের সময় তাঁর হাতে প্রায় ৩.৫ কোটি টাকার অবসর তহবিল থাকবে। এই সময়ে কর্মী আসলে মোট ১.৩৩ কোটি টাকা ইপিএফ-এ বিনিয়োগ করেন।
বর্তমানে EPS-এ ন্যূনতম পেনশন মাসে ১,০০০ টাকা নির্ধারিত আছে। তবে প্রকৃত পেনশনের অঙ্ক নির্ভর করে অনেক বিষয়ের ওপর—যেমন শেষ বেতনের পরিমাণ ও চাকরির মেয়াদ।


প্রসঙ্গত, ইপিএফও (কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থা) কর্মরতদের জন্য একটি খুব বড় এবং উপকারী পদক্ষেপ করেছে। এখন ইউএএন (ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নম্বর) এর সঙ্গে আধার লিঙ্ক করা, আগের চেয়েও সহজ হয়ে গিয়েছে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হল পিএফ সম্পর্কিত সুবিধাগুলি সরাসরি কর্মীদের কাছে পৌঁছানো, যাতে তাঁদের বারবার নিয়োগকৃত কোম্পানিতে যেতে না হয়। যদি আপনার আধার এখনও ইউএএন -এর সঙ্গে লিঙ্ক করা না থাকে, অথবা এতে কোনও তথ্য ভুল থাকে, তাহলে আপনি সহজেই এটি সংশোধন করতে পারেন। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিতভাবে জানান।


ইপিএফও ১৩ অগাস্ট ২০২৫ থেকে ইউএএন  -এর সঙ্গে আধার লিঙ্ক করার প্রক্রিয়াটি সহজ করেছে। যদি আপনার নাম, লিঙ্গ এবং জন্ম তারিখ ইউএএন -এ দেওয়া তথ্যের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়, তাহলে আপনার আলাদা কোনও অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। আপনার নিয়োগকর্তা তার পোর্টালে উপলব্ধ কেওয়াইসি বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে সহজেই এটি লিঙ্ক করতে পারবেন। আগে, নাম বা অন্য কোনও তথ্যে সামান্য ভুলের জন্যও একাধিক স্তরের অনুমোদন এবং প্রচুর কাগজপত্রের প্রয়োজন হত। এখন এই সমস্যার সমাধান হয়েছে।